শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

সেই শিরিন ম্যানশনের ব্যবসায়ীদের কী হবে

মোস্তফা ইমরুল কায়েস
প্রকাশিত: ০৩ জুন ২০২৩, ০৭:৪৫ পিএম

শেয়ার করুন:

সেই শিরিন ম্যানশনের ব্যবসায়ীদের কী হবে

রাজধানীর সায়েন্সল্যাব এলাকায় শিরিন ম্যানশন বিস্ফোরণের ঘটনায় ভবনটি ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরশন (ডিএনসিসি)। ইতোমধ্যে ভবন মালিককে তারা নোটিশও দিয়েছেন। তবে ওই ভবনে থাকা ব্যবসায়ীদের ভবিষ্যত কি হবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

গত ৫ মার্চ ভবনটিতে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ৬ জন নিহত ও কমপক্ষে ২০ জন আহত হন। এ ঘটনায় নিউমার্কেট থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করে পুলিশ।


বিজ্ঞাপন


সম্প্রতি ভবনটির সামনে গিয়ে দেখা গেছে, এখনো ঝুলছে সেই ঝুঁকিপূর্ণ ভবন উল্লেখ করে ভবনের গায়ে লাগানো সিটি করপোরেশনের ব্যানার। এছাড়াও ভবনটিতে বিভিন্ন সময়ে ব্যবসা করা দোকানীর মালিকরাও স্থান পরিবর্তনের ব্যানার ঝুলিয়ে দিয়েছেন। পুরো ভবনটি নিথর হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আগের মতো কোলাহল নেই ভবন জুড়ে। নিস্তদ্ধ চারপাশে। পাশের ভবনগুলোতে দোকানীরা ব্যস্ত সময় পার করছেন।

sirin

বিস্ফোরিত ভবনের সামনে রাখা ময়লা আর্বজনাগুলো সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। নিচতলার প্রতিটি দোকানে তালা ঝুলছে। তবে ভবনটির তিন তলায় এখনো ক্ষতের চিহৃ জানান দিচ্ছে, ভবনটিতে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটেছিল। ফিনিক্স ইন্স্যুরেন্স নামে যে অফিস থেকে বিস্ফোরণ ঘটেছিল সেটির মালামাল নেই। পুরো কক্ষই ফাঁকা। তিন তলার যে বেলকনি ছিল সেটিও নেই। 

এ বিষয়টি নিয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের নিউমার্কেট জোনের এডিসি সাহেন শাহ মাহমুদ ঢাকা মেইলকে বলেন, আমাদের কাছে এখন কিছু নেই। সব দেখছে সিটি কর্তৃপক্ষ। 


বিজ্ঞাপন


এ বিষয়ে ঢাকা সিটি করপোরেশনের কর অঞ্চল-১ এর কর্মকর্তা মেরিনা ঢাকা মেইলকে বলেন, ভবনটি ব্যবহারের অনুপযোগী তাই ভেঙে ফেলার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। খুলে দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। 

ব্যবসায়ীদের ভবিষ্যত কি!

ভবনটিতে ব্যবসায়ী মেহেদী পায়জানা সেন্টারের ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম গত এক যুগ ধরে সেখানে ব্যবসা করে আসছিলেন। কিন্তু তিনি এখন নিরুপায় হয়ে পড়েছেন। মালিক তাকে ও অন্যদের এখনো স্পষ্ট করে তেমন কিছ বলেননি। কিন্তু তারা আভাস পেয়েছেন মালিক ভবনটি ভেঙে ফেলবেন। তবে তারা এখনো কেউ জামানতের টাকা ফেরত পাননি। 

তিনি জানান, বিস্ফোরণের পর থেকে ভবনটিকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে সেটি বন্ধ করে দেওয়ায় ব্যবসাপাতি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে তার। গেল রমজানে পাশের মার্কেটের একটি দোকানের পাশে ছোট করে বসেছিলেন। কিন্তু এখন আর তার সেই অবস্থাও নেই। তিনি ঢাকা মেইলকে বলেন, ব্যবসা যে শুরু করব সেই পুঁজিই নাই। কি দিয়ে ব্যবসা শুরু করব! সবতো শেষ হয়ে গেল।

sirin

ভবনটির ব্যবসায়ীরা দ্বিতীয় হাত হয়ে ভাড়া নিয়েছিলেন। ফলে দ্বিতীয় মালিকও তাদের কিছু জানাতে পারছেন না। আসল মালিক কানাডায় থাকায় অনেকটা ঘোরের মধ্যে আছেন তারা। তারা তাদের জামানত ফেরত পাবেন কিনা ভবন ভাঙলে তারা কোথায় ব্যবসা শুরু করবেন এসব চিন্তা এখন তাদের তাড়া করছেন। ভবনটিতে আটজন ব্যবসায়ী ছিলেন। কিন্তু কেউই তারা এখনো ব্যবসা শুরু করতে পারেননি।

অন্যদিকে ভবনটিতে ৩২ বছর ধরে ব্যবসা করেছেন গ্রামীণ হস্তশিল্প ও তাঁত পণ্যের ব্যবসায়ী মোহাম্মদ ফিরোজ। তিনি ঢাকা মেইলকে বলেন, মালিক আমাদের কিছুই বলেনি। এখন আমরা কোথায় যাব। এখনো ব্যবসা শুরু করতে পারিনি। কবে নাগাদ পারব তাও জানি না। সব শেষ হয়ে গেল।

তিনি আরও বলেন, এবার ব্যবসাই করতে পারলাম না। এই ক্ষতি বোঝানো সম্ভব না।

তবে ভবন মালিক কানাডায় থাকায় তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। 

এমআইকে

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর