জাপানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে: স্পিকার

এ বিষয়ে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, হাউজ অফ রিপ্রেজেনটেটিভস অব জাপানের স্পিকার হিরোইউকি হসোদার সঙ্গে আজ জাপানের পার্লামেন্টে (ডায়েট) অবস্থিত স্পিকার্স কনফারেন্স কক্ষে জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাতকালে তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক জাপান সফর, জাপান বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর, বাংলাদেশে জাপানের বিনিয়োগ বৃদ্ধি, মানবসম্পদ উন্নয়ন ছাড়াও দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক শক্তিশালীকরণ ও ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।

সাক্ষাতে ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত ‘ডব্লিউ ও ডব্লিউ কনফারেন্সে’ স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর জাপান সফর স্মরণ করে হাউজ অফ রিপ্রেজেনটেটিভস অফ জাপানের স্পিকার হিরোইউকি হসোদা বলেন, জাপান-বাংলাদেশ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আগামী দিনে আরও জোরদার হবে। এ ধরনের সংসদীয় সফর বিনিময় দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করবে।

এ দিন সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের স্পিকারের নেতৃত্বে বাংলাদেশের সংসদীয় প্রতিনিধি দল জাপানের পার্লামেন্ট পরিদর্শন করেন। এ সময় হাউজ অফ রিপ্রেজেনটেটিভস অব জাপানের স্পিকার হিরোইউকি হসোদা স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীকে জাপানের সংসদীয় কার্যক্রমের সার্বিক প্রক্রিয়া সম্পর্কে অবহিত করেন।

পরে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সঙ্গে টোকিওস্থ হোটেল ক্যাপিটালে জাপান-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ লীগের প্রেসিডেন্ট আসো তারো সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এ সময় স্পিকার বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের অব্যবহিত পর থেকেই অবকাঠামোগত উন্নয়ন, দারিদ্র্য বিমোচন, পানি ব্যবস্থাপনা, স্যানিটেশন, রাস্তা-ঘাট নির্মাণ ও সংস্কার ইত্যাদি ক্ষেত্রে জাপান বাংলাদেশকে সহায়তা করে আসছে। জাপান বর্তমানে বাংলাদেশের একক বৃহত্তম উন্নয়ন অংশীদার। কোভিড মহামারিকালীন ভ্যাক্সিন প্রদানের মাধ্যমে জাপান বাংলাদেশকে সহায়তা করেছে।

ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বাংলাদেশে দারিদ্র্য দূরীকরণ, নারীর ক্ষমতায়ন ইত্যাদি অর্জনের পাশাপাশি অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বিরাজ করছে। বাংলাদেশ এখন ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ডের মধ্যদিয়ে যাচ্ছে, যার তরুণ জনসমষ্টি অত্যন্ত দক্ষ। এ সময় তাদের অমিত সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে তথ্য-প্রযুক্তি খাতে জাপানের অধিকতর বিনিয়োগ কামনা করেন স্পিকার।

পরে হাউজ অব কাউন্সিলরস অব জাপানের প্রেসিডেন্ট হিদেহিসা ওতসুজি’র সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। সাক্ষাতকালে স্পিকার বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে দারিদ্র্য দূরীকরণ, নারীর ক্ষমতায়ন, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচিসমূহের বাস্তবায়ন, শতভাগ বিদ্যুতায়ন, ল্যাকটেটিং মায়েদের ভাতা প্রদান, একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প বাস্তবায়ন ইত্যাদি কার্যক্রম সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে।

ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়নে জাপানের অগ্রণী ভূমিকা রয়েছে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে জাপান অধিক বিনিয়োগ করতে পারে। লিঙ্গ বৈষম্য, জলবায়ু পরিবর্তন ইত্যাদি ক্ষেত্রে দুই দেশ একসঙ্গে কাজ করতে পারে। এ সময় দুই দেশের সংসদীয় সম্পর্ক আরও জোরদারকরণে গুরুত্বারোপ করেন স্পিকার।

পরে প্রথম নারী স্পিকার হিসেবে ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর প্রশংসা করে প্রেসিডেন্ট হিদেহিসা ওতসুজি বলেন, বাংলাদেশ নারীর ক্ষমতায়নে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক জাপান সফরের মাধ্যমে দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও দৃঢ় হয়েছে।

সবশেষে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এমপি হাউজ অফ রিপ্রেজেনটেটিভস অব জাপানের স্পিকার হিরোইউকি হসোদা’র আমন্ত্রণে নৈশভোজে অংশগ্রহণ করেন।

সৌজন্য সাক্ষাতকালে অন্যদের মধ্যে জাপানের এমপি ইবায়াসি তাতসুনোরি, কাজিয়ামা হিরোসি, সুকাডা ইসিরো, মাকিসিমা কেরেন, ইয়ামামোতো হিরোনরি ছাড়াও জাপানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শাহাবুদ্দিন আহমদ, এমপি আ ফ ম রুহুল হক, এমপি আবুল কালাম মো. আহসানুল হক চৌধুরী, এমপি বদরুদ্দোজা মো. ফরহাদ হোসেন, এমপি খাদিজাতুল আনোয়ার ও এমপি কানিজ ফাতেমা আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়াও অন্যদের মধ্যে অতিরিক্ত সচিব মো. নূরুজ্জামান, স্পিকারের একান্ত সচিব অতিরিক্ত সচিব এম এ কামাল বিল্লাহ, যুগ্মসচিব মো. তারিক মাহমুদ এবং স্পিকারের সহকারী একান্ত সচিব উপসচিব মো. রাশেদ ইকবাল চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

/আইএইচ