আমের রাজধানী রাজশাহী থেকে রাজধানী ঢাকার বাজারগুলোতে আম আসতে শুরু করেছে। কিন্তু বাজারে পাকা আমের তুলনায় কাঁচা আমের পরিমাণ বেশি। রাজশাহী ও সাতক্ষীরা থেকে আসা আমের মধ্যে শুধুমাত্র সাতক্ষীরার আমগুলো পাকা।
শুক্রবার (৫ মে) রাজধানীর কারওয়ান বাজার, ফার্মগেট, মগবাজারসহ বিভিন্ন এলাকার আম বিক্রেতার সাথে কথা বলে এমন তথ্য জানা গেছে।
বিজ্ঞাপন
বিক্রেতারা জানান, ঈদের পর থেকে রাজশাহী ও সাতক্ষীরা এলাকা থেকে ঢাকায় আম আসা শুরু হয়েছে। তবে রাজশাহী থেকে আসা আমগুলো বেশির ভাগই এখনও পাকে নাই। এছাড়া সাতক্ষীরার আমগুলো পেকে গেছে বলে জানান বিক্রেতারা।
বিষমুক্ত ও পরিপক্ব আম কেনাবেচা নিশ্চিত করতে রাজশাহীতে ‘ম্যাংগো ক্যালেন্ডার’ প্রকাশ করা হয়েছে। তবে কোন আম কবে বাজারে আসবে সেই তথ্য ঢাকার আম বিক্রেতাদের কাছে এখনও অজানা।
শুক্রবার বিকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে আম কিনতে আসেন পশ্চিম তেজতুরী বাজারের বাসিন্দা মিজানুর রহমান রহমত। তিনি ঢাকা মেইলকে বলেন, সরকার ইতোমধ্যে বিভিন্ন জাতের আমের নাম উল্লেখ করে বাজারজাত করণের ঘোষণা দিয়েছে। কিন্তু কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ীরা তাদের মতো করে আম বিক্রি করছেন। অনেক আম সময়ের আগে গাছ থেকে পাড়া হয়েছে। সেই আমগুলোই বাজারে পাওয়া যাচ্ছে।
কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বিক্রেতাদের কাছে পাকা আমের তুলনায় কাঁচা আমের পরিমাণ বেশি। বিশেষ করে প্রতি কেজি বারমিজ আম বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। চিনিগুড়া আম প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪৫ টাকা, গুটি আম ২০ থেকে ৩০ টাকা। তবে পাকা আম কয়েকগুণ বেশি দামে বিক্রি করা হচ্ছে।
বাজারে এখন সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে সাতক্ষীরা জেলার গোবিন্দভোগ আম। প্রতি কেজি আমের দাম ১২০ থেকে ১৫০ টাকা।
বিজ্ঞাপন
কারওয়ান বাজারের আম বিক্রেতা মতিন মিয়া ঢাকা মেইলকে বলেন, এখন বাজারে কাঁচা আম বেশি আসছে। তবে সাতক্ষীরা থেকে যে আম আসছে সেগুলো পাকা। সেগুলোর মধ্যে গোবিন্দভোগ আমই বেশি বিক্রি হচ্ছে। কোন আম কবে আসবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে যখন যে আম আসে সেই আমই আমরা বিক্রি করে থাকি।
জিহাদ হোসেন নামের আরেক আম বিক্রেতাও একই কথা জানান। তিনি বলেন, ঈদের পর থেকেই আম বিক্রি শুরু করেছি। এখন বেশি কাঁচা আম বিক্রি হচ্ছে।
কোন জাতের আম কবে আসবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে আমার কোনো ধারণা নেই। তবে যেই আম যখনই আসুক না কেন, আমরা বিক্রি করব।
জানা গেছে, গত বুধবার রাজশাহী জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদের সভাপতিত্বে তার সম্মেলনকক্ষে আম সংগ্রহ, পরিবহন, বিপণন ও বাজারজাত মনিটরিং সংক্রান্ত সভায় আম নামানোর তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে।
সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে গুটি আম গাছ থেকে নামানো ও বিক্রি করা যাবে। সুস্বাদু গোপালভোগ ১৫ মে, লক্ষণভোগ বা লখনা ও রানিপছন্দ ২০ মে, হিমসাগর বা ক্ষীরশাপাতি ২৫ মে থেকে নামিয়ে হাটে তুলতে পারবেন বাগান মালিক ও চাষিরা আগামী ৬ জুন থেকে ল্যাংড়া, ১৫ জুন থেকে ফজলি, ১০ জুন আম্রপালি এবং ১০ জুলাই থেকে আশ্বিনা ও বারি আম-৪ নামানো যাবে। ১০ জুলাই থেকে গৌড়মতি আম এবং ২০ আগস্ট ইলামতি আম নামানো যাবে। আর কাটিমন ও বারি আম-১১ সারা বছর সংগ্রহ করা যাবে।
এ ব্যাপারে রাজশাহী জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ বলেন, বাজারে পরিপক্ব ও নিরাপদ আম নিশ্চিত করতে এবারও সংশ্লিষ্ট সবার মতামতের ভিত্তিতে তারিখ ঠিক করা হয়েছে। এর আগে যদি কোনো মালিকের আম পেকে যায়, তাহলে তিনি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কাছ থেকে প্রত্যয়নপত্র নিয়ে গাছ থেকে আম নামিয়ে বাজারজাত করতে পারবেন।
কেআর/এমএইচটি