‘আমাগো আবার কিসের ঈদ? আমাগো প্রতিদিন ঈদ, আবার প্রতিদিন ঈদ না’— দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে কথাগুলো বলছিল পথশিশু স্বর্ণা।
রোববার (২৩ এপ্রিল) নগরীর খিলগাঁও এলাকায় এই প্রতিবেদকের কথা হয় কয়েকজন পথশিশুর সঙ্গে। তার মধ্যে একজন স্বর্ণা। আলাপচারিতার একপর্যায়ে শিশুটি জানায়, ঈদের দিনটা ভালো কাটছে। টাকা পাইছি। মসজিদের সামনে দাঁড়াইছি (ঈদ জামাতের পর)। আমি পাইছি ১৭৫ টাকা। ওরা আরও বেশি পাইছে। বিকালে একজন খাবার খাওয়াইছে।
বিজ্ঞাপন
পথশিশুদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ঈদের পরের কিছুদিন খাবার নিয়ে বিপদে পড়তে হয় তাদের। কারণ নগরীর খাবার হোটেলগুলো বন্ধ থাকে। এই সময়ে কিছু টাকা থাকলেও খাওয়া যায় না। বাধ্য হয়ে ডান্ডি নামক এক ধরনের নেশা গ্রহণ করতে হয় তাদের। এসব শিশুর মতে— এই নেশায় ক্ষুধা লাগে না তাদের।

এদিকে নগরীর বেশ কয়েকটি স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকতে দেখা গেছে পথশিশুদের। এর মধ্যে ধানমণ্ডি লেকপাড়, খিলগাঁও রেলগেট ও কমলাপুরে পথশিশুদের দৃশ্য ছিল চোখে পড়ার মতো। যাদের অধিকাংশই ক্ষুধার্থ।
খিলগাঁও রেলগেট এলাকায় দেখা যায়, রাস্তার পাশের (ফুটপাতে) শুয়ে আছে অনেকে। জড়ো হয়ে ঘুমাচ্ছে বেশ কয়েকজন পথশিশু। পাশে বসে নেশা করছে কেউ কেউ।
বিজ্ঞাপন
নগরীর ধানমণ্ডি লেকপাড় ঘুরে দেখা যায়, লেকপাড়ে গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন কয়েকজন। গল্প করছে কেউ কেউ। আবার ঈদ উপলক্ষে লেকে ঘুরতে আসা দর্শনার্থীদের কাছে ফুল বিক্রি করতেও দেখা গেছে কয়েকজন পথশিশুকে।
জাহাঙ্গীর আলম নামে এক পথচারী বলেন, এসব পথশিশুকে নিয়ে কেন্দ্রীয়ভাবে চিন্তা করা উচিত। নগরীতে অপরাধ বাড়ছে, আমাদের নানা গবেষণা হচ্ছে। কিন্তু এসব পথশিশুর মধ্যে যে অপরাধ প্রবণতা বাড়ছে তা নিয়ে আমাদের কারও মাথা ব্যথা নেই।
তিনি আরও বলেন, মানবতার সাহায্যে আমাদের সবারকে এগিয়ে আসা প্রয়োজন। মানবিক হওয়া প্রয়োজন। এই শিশুগুলো যদি ন্যূনতম পরিবেশে বেড়ে ওঠার সুযোগ পায়, তবে অপরাধে জড়াবে না। আমাদের জন্য ভয়ের কারণ না হয়ে দেশের সম্পদে পরিণত হবে।
ডিএইচডি/এইউ

