মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

ইফতারের আগে উত্তরার সড়কে দুই ঘণ্টার ভোগান্তি

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২৯ মার্চ ২০২৩, ০৬:৪৪ পিএম

শেয়ার করুন:

ইফতারের আগে উত্তরার সড়কে দুই ঘণ্টার ভোগান্তি

দুপুর ২টায় ফার্মগেট থেকে উত্তরা যাওয়ার জন্য বের হয়েছিলেন রফিকুল ইসলাম। কাকলী মোড় পর্যন্ত পৌঁছার পর তাকে বহনকারী বাসটি আর নড়েনি। সেখানেই দাঁড়িয়ে ছিল প্রায় দুই ঘণ্টা। এরপর সেটি বিকেল ৪টা ২০ মিনিটে বিমানবন্দরের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। রফিকুল বলছিলেন, দেড় ঘণ্টা লেগেছে ফার্মগেট থেকে শুধু জাহাঙ্গীর গেট যেতে।

বুধবার (২৯ মার্চ) বিকেলে এভাবে রাজধানীতে জরুরি কাজে বের হয়ে শুধু রফিকুল ইসলাম নন, তার মতো হাজারও মানুষ ভোগান্তিতে পড়েন। দীর্ঘ সময় তাদের পথে বসে থাকতে হয়।


বিজ্ঞাপন


দুপুরের পর উত্তরার জসিম উদ্দিন সড়কে গার্মেন্টস শ্রমিকরা বেতন ও বোনাসের দাবিতে আন্দোলনে নামে। তারা এসময় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। এতে টানা দুই ঘণ্টা থমকে ছিল উত্তরা থেকে আসা ও যাওয়ার পথ। ফলে এই ভোগান্তির মধ্যে পড়েন সাধারণ মানুষ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইন্ট্রাকো নামের একটি গার্মেন্টস কারখানার শ্রমিকরা তাদের বকেয়া বেতনের দাবিতে উত্তরার জসিম উদ্দিন সড়কে বিক্ষোভে নামেন। এসময় কয়েকশ শ্রমিক একযোগে সড়কে অবস্থান নেন। তাদের প্রায় প্রত্যেকের হাতে লাল ঝান্ডা ছিল। তারা বেতন ও বোনাসের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।

jam2

শ্রমিকদের অবরোধে উত্তরা থেকে আসা ও যাওয়ার সব যানবাহন বন্ধ হয়ে যায়। কুর্মিটোল জেনারেল হাসপাতালের সামনের সড়ক হয়ে আজিমপুর পর্যন্ত যেতে পারলেও অধিকাংশ বাস ও বিভিন্ন যানবাহন দাঁড়িয়ে ছিল। ফলে উত্তরাগামী যাত্রীদের অনেকে বাস থেকে নেমে পায়ে হেঁটে রওনা হন। রমজানে রোজা রেখে ক্লান্ত হয়ে পড়ার ভয়ে অনেকে বাসেই টানা দুই ঘণ্টা বসেছিলেন। 


বিজ্ঞাপন


আজ দুপুরের পর থেকে বিকেল ৪টা ২০ পর্যন্ত টানা দুই ঘণ্টার যানজটে অনেকের ঘাম ছুটেছে। বিশেষ করে যারা বিদেশ যাওয়ার জন্য ফ্লাইট ধরতে বের হয়েছিলেন। বেশির ভাগ বিদেশগামী মানুষজন কুর্মিটোলা হাসপাতালের সামনে যানবাহন থেকে নেমে হেঁটেই বিমানবন্দর রওনা হয়েছেন। তবে বিমানবন্দর থেকে মহাখালী আসার পথ পুরোটাই ফাঁকা ছিল। উত্তরা থেকে পল্টন আসা যাত্রী আসাদুল বলেন, উত্তরার জসিম উদ্দিন সড়ক থেকে আসতেই তিন ঘণ্টা লেগেছে।

গার্মেন্টস শ্রমিকদের সড়ক অবরোধের কারণে তার প্রভাব পড়ে তেজগাঁও, সাতরাস্তা, মহাখালী, গুলশান, মধ্যবাড্ডা ও নতুনবাজার এলাকায়। এছাড়াও ফার্মগেট টু জাহাঙ্গীর গেট, হাতিরঝিল থেকে গুলশান, তেজগাঁও লিংক রোড এবং মহাখালী থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত থমকে যায় পুরো সড়ক। শুধু এসব এলাকায় নয়, মিরপুর ডিওএইচএসগামী ফ্লাইওভারেও যানজট ছিল। ফলে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে।   

এদিকে শ্রমিকরা দাবি নিয়ে মাঠে নেমেছে খবর শুনে সেই কারখানার মালিক পালিয়ে গেছেন। এখনো তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে সেই গার্মেন্টসের ম্যানেজারসহ অন্যাদের সাথে কথা বলে শ্রমিকদের বকেয়া দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করতে পুলিশ কাজ করছে।

jam3

উত্তরা পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ তুলে নেওয়ার পর যানবাহন চলাচল সচল হলেও ঢাকা থেকে বের হওয়া গাড়ির জট রয়েছে। এই জট দূর হতে আরও কিছুক্ষণ সময় লাগবে।

এ বিষয়ে উত্তর বিভাগের বিমানবন্দর জোনের এডিসি তৌহিদুল ইসলাম ঢাকা মেইলকে বলেন, শ্রমিকরা তাদের বেতন ও বোনাসের দাবিতে সড়কে নেমেছিল। তারা এসময় বিক্ষোভ শুরু করলে রাস্তায় বন্ধ হয়ে যায়। পরে তাদেরকে বুঝিয়ে রাস্তা থেকে তুলে দেওয়া হয়েছে।

ট্রাফিকের উত্তরা বিভাগের এডিসি মো. কামরুজ্জামান ঢাকা মেইলকে জানান, শ্রমিকরা সড়কে অবস্থান নিয়েছিল। তারা তাদের বুঝিয়ে তুলে দেওয়া হয়েছে। সড়ক এখন সচল হয়েছে। যানবাহন চলতে শুরু করেছে। তবে মালিককে এখনো খুঁজে পাওয়া যায়নি। তারপরও বিষয়টি পুলিশ দেখছে। 

উত্তরা বিভাগের এডিসি বদরুল হাসান বলেন, শ্রমিকরা মাঠে নেমেছিল। তাদের সাথে কথা বলে সড়ক থেকে তুলে দিয়েছে পুলিশ। ফলে এখন রাস্তা স্বাভাবিক। উত্তরা থেকে আসা ও যাওয়ার পথে কোনো ধরনের যানজট নেই। তবে ঢাকা থেকে বাহির হওয়ার গাড়ির হালকা চাপ আছে।

এমআইকে/জেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর