অমর একুশে ফেব্রুয়ারি বাঙালির প্রেরণার অন্যতম উৎস। মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে তাই সর্বস্তরের মানুষের পাশাপাশি ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে যান রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীও। যদিও করোনা মহামারির কারণে গত দুই বছর সশরীরে শহীদ মিনারে যেতে পারেননি তাঁরা। তবে এ বছর ভাষা শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সশরীরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে যাবেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী। এ লক্ষ্যে কড়া নিরাপত্তায় প্রস্তুত করা হচ্ছে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার।
শুক্রবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকা ঘুরে দেখা গেছে- মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস সুষ্ঠুভাবে পালনের জন্য কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ধুয়ে-মুছে পরিষ্কার করা হচ্ছে। ইতোমধ্যেই বেষ্টনী দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়েছে শহীদ মিনারের চারপাশ। সেই সঙ্গে দক্ষিণ ও পূর্বদিকের শহীদ মিনারের প্রবেশপথ লোহার শিকল দিয়ে আটকে দেওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
এ দিন পুরো শহীদ মিনার এলাকায় পুলিশ সদস্যদের কড়া পাহারায় দেখা গেছে। সেই সঙ্গে পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকেও নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও।
দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা জানিয়েছেন, গত দুইদিন থেকেই কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের ভেতরে কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। ভেতরের অংশ ধুয়ে-মুছে পরিষ্কার করার কাজ চলছে। এছাড়া মূল বেদিসহ সংলগ্ন এলাকায় নতুন করে রঙের প্রলেপ দেওয়া হচ্ছে। সেই সঙ্গে নিরাপত্তা নিশ্চিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা শহীদ মিনারের চারদিকে সিসিটিভি স্থাপনের কাজ করছেন।
>> আরও পড়ুন: এলো রক্তে রাঙানো ফেব্রুয়ারি
গত সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে ২১ ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপনকে সামনে রেখে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত এক সভায় রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাতে যাওয়ার বিষয়টি জানানো হয়। ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
বিজ্ঞাপন
সভা শেষে তিনি জানান, শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, ২০২৩ উদযাপন উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী এ বছর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। তাদের আগমন, অবস্থানের সময় যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একই সঙ্গে শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকাকে ব্যাপক নিরাপত্তা বলয়ের আওতায় আনা হবে।
এদিকে, একুশে ফেব্রুয়ারি ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গতকাল বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে এক ভার্চুয়াল সভার আয়োজন করা হয়। ওই সভায় পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় একুশে ফেব্রুয়ারি ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফুল দেওয়ার জন্য আওয়ামী লীগ ও বিএনপির আলাদা রাস্তা রাখার নির্দেশ দেন পুলিশের আইজি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুন।
>> আরও পড়ুন: সাংস্কৃতিক বিকাশে ফেব্রুয়ারি মাসটি গুরুত্বপূর্ণ
আইজিপি বলেন, একুশের ভাবগাম্ভীর্য ও চেতনা বিরোধী অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবেলায় গোয়েন্দা তথ্য ও নিরাপত্তা ঝুঁকি পর্যালোচনা করে নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। গুজবের বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে এবং গুজব রটনাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিবিড় মনিটরিংয়ে রাখতে হবে।
এ দিন সভায় যে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে দেশের বড় বড় শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নজরদারির আওতায় আনার নির্দেশ দেন আইজিপি। সেই সঙ্গে তিনি আশা প্রকাশ করেন, অতীতের মতো এবারও দেশের নাগরিকরা একুশে ফেব্রুয়ারি নির্বিঘ্নে-নিরাপদে উদযাপন করতে পারবেন।
কেআর/আইএইচ