শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

রাত ১০টা পর্যন্ত দোকান খোলা রাখার দাবি ব্যবসায়ীদের

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১১:৩৯ এএম

শেয়ার করুন:

রাত ১০টা পর্যন্ত দোকান খোলা রাখার দাবি ব্যবসায়ীদের

রাত ১০টা পর্যন্ত দোকান খোলা রাখাসহ ভোক্তা অভিযানের নামে ক্ষুদ্র দোকান মালিকদের হয়রানি বন্ধের দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ দোকান ব্যবসায়ী মালিক সমিতি।

বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) ডিআরইউ বাংলাদেশ দোকান ব্যবসায়ী মালিক সমিতি ও ঢাকা মহানগর দোকান ব্যবসায়ী মালিক সমিতি আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এ দাবি করেন।


বিজ্ঞাপন


ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ বলেন, বর্তমান সময়ে ভ্যাট আদায়ের পদ্ধতিতে ভুল রয়েছে, এ পদ্ধতি সহজীকরণ প্রয়োজন। বর্তমান ভ্যাট পদ্ধতির কারণে আমাদের মতো দোকান মালিকদের হয়রানির মধ্যে পড়তে হচ্ছে। চলমান হয়রানি বন্ধে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।

ঢাকা মেইলের করা এক প্রশ্নের জবাবে ঢাকা মহানগর দোকান ব্যবসায়ী মালিক সমিতি (বিএমডিবিএমএস) সভাপতি মো. আব্দুর রহমান টিপু বলেন, রাত ৮টায় দোকান বন্ধ করায় ব্যবসায়ীদের ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে। সমানে রোজা এবং ঈদ। এমতাবস্থায় আমাদের রাত ১০টা পর্যন্ত দোকান খোলা রেখে ব্যবসা করার সুযোগ দিতে হবে।

আয়োজকরা বলেন, আমাদের ব্যবসায়ীদের প্রদত্ত ভ্যাট, ট্যাক্স উন্নয়নের চাবিকাঠি, আমরাও ভ্যাট দিতে চাই। দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির প্রধান পাঁচটি খাতের মধ্যে উল্লেখযোগ্য পাইকারি ও খুচরা ব্যবসা ২০২০-২১ অর্থবছরে জিডিপিতে এ খাতের অবদান ছিল দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৩ দশমিক ০৪ শতাংশ। দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে হলে অন্যান্য খাতের পাশাপাশি এ খাতে বিশেষ দৃষ্টিক্ষেপন জরুরি।

তারা বলেন, আমরা ৫০ লাখ টাকা টার্নওভারের উপরের সকল দোকান ব্যবসায়ী বর্তমান আইন অনুযায়ী ফ্ল্যাট। মোট বিক্রয় মূল্যের উপর ৫ শতাংশ পাসে এর পরিবর্তে নীট মুনাফার উপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রদান করতে চাই। বর্তমান চ্যাট আইন অনুযায়ী একজন দোকান ব্যবসায়ীকে পাঁচটি খাতা বই সংরক্ষণ করতে হয় একজন ক্ষুদ্র দোকান ব্যবসায়ীর পক্ষে তা সম্ভব হয়ে ওঠে না। কারণ ওই কাজে অভিজ্ঞ একজন লোক ১০/১৫ হাজার টাকা বেতনে নিয়োগ দিতে হবে। ৫/৬ লাখ টাকা বিনিয়োগকারী দোকান ব্যবসায়ীর পক্ষে তা সম্ভব হয়ে ওঠে না।


বিজ্ঞাপন


ব্যবসায়ী নেতারা বলেন, পাইকারি ও খুচরা বিক্রয়ের নিট মুনাফার হার নির্ধারণের জন্য দোকান ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্ট সকল মান্দালয় প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে একট ৫০ লাখ টাকা টার্নওভারের উপরের সকল দোকান ব্যবসায়ী EFD মেশিন গ্রহণ করিতে ইচ্ছুক। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের মতো রাজস্ব বোর্ড কর্তৃত সকল দোকান ব্যবসায়ীকে একযোগে EFD মেশিন প্রদান করা হোক, অথবা রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত শর্তসাপেক্ষে ইলেক্ট্রিক মিটার এর না ইত পদ্ধতিতে আমদানির অনুমোদন দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর নিকট আবেদন করছি, এতে সকল দোকান ব্যবসায়ী বাজার থেকে EFD মেশিন ক্রয় করে স্থাপন করিতে পারবে এবং সরকারের রাজস্ব বৃদ্ধি পাবে।

প্রকৃত মজুদকারীদের শাস্তি চান বলে জানিয়ে নেতৃবৃন্দ বলেন, অভিযানের পূর্বে ডিলার, পরিবেশক, পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতা কত কেজি পণ্য বা কত পরিমাণ পণ্য মজুদ রাখতে পারবে তার একটি নীতিমালা প্রণয়ন প্রয়োজন, যার ভিত্তিতে ভোক্তা অধিকারের অভিযান পরিচালিত হবে। ডিলার, পরিবেশক, পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতা কর্তিক পণ্যের ক্রয় মূল্য সরকার নির্ধারিত দামের বেশি হলে বিক্রেতা না উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে জরিমানা আরোপ করতে হবে বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান অর্থাৎ খুচরা দোকান ব্যবসায়ীকে হয়রানিমুক্ত রাখতে হবে।

ব্যবসায়ী নেতারা বলেন, দোকান ব্যবসায়ী কোনো পণ্য উৎপাদন বা আমদানি করে না, ৫৪ লাখ দোকান ব্যবসায়ীর পক্ষে কোনো সিন্ডিকেট পরিচালনা সম্ভব নয় বা করতে পারে না। সিন্ডিকেট পরিচালনা করে দেশের গুটিকয়েক সর্বোচ্চ ১৫/২০ জন পণ্য আমদানিকারক, উৎপাদনকারী এবং সুপার বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান যা আপনারা সকলে অবগত আছেন। তাদের বিরুদ্ধে দৃশ্যমান শাস্তি বা অভিযান পরিচালিত হলে দ্রব্যমূল্যের বাজার স্থিতিশীল হবে বলে। আমরা মনে করি।

বাংলাদেশ দোকান ব্যবসায়ী মালিক সমিতি সভাপতি মো. নাজমুল হাসান মাহমুদ বলেন, দোকান ব্যবসায়ীদের বেচা-বিক্রি হয়ে থাকে সাধারণত মাগরিবের নামাজের পর। সরকারের সিদ্ধান্তের সাথে একমত পোষণ করে বর্তমানে আমরা রাত আটটায় দোকানপাট বন্ধ করে ব্যবসায়িকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছি। দোকান ব্যবসায়ীদের বিষয়টি বিবেচনা করে পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে ১৫ রমজান পর্যন্ত রাত আটটার পরিবর্তে ১০টা পর্যন্ত এবং ১৫ রমজানের পর থেকে পবিত্র ঈদুল ফিতরের চাঁদ রাত পর্যন্ত ক্রেতার উপস্থিতির উপর ভিত্তি করে দোকান খোলা রাখাতে চাই।

চলমান দোকান ব্যবসায়ী ও কর্মচারীর চরম অর্থনৈতিক সঙ্কট থেকে উত্তরণের পক্ষে দোকান খোলা রাখার সময় বাড়ানো, ভোক্তা অধিকারের অভিযান, ভ্যাট আদায়ের পদ্ধতি সহজীকরণ ও ভ্যাট আদায়ে হয়রানি বন্ধ এর দাবিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেন। এসময় তারা যেসব দাবি জানান—

১। বর্তমান ভ্যাট আইন সহজীকরণ করে পাঁচটি খাতা/বহি সংরক্ষণ এর পরিবর্তে ফ্ল্যাট/মোট বিক্রয় মূল্যের নীট মুনাফার উপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করার বিধান করার দাবি/প্রস্তাব করছি।

২। একজন ডিলার, পরিবেশক, পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতা কত কেজি পণ্য বা কত পরিমাণ পণ্য মজুদ রাখতে পারবে তার একটি নীতিমালা প্রণয়নের দাবি/প্রস্তাব করছি।

৩। পাইকারি ও খুচরা বিক্রয়ের নিট মুনাফার হার নির্ধারণের জন্য দোকান ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্ট সকল মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠনের দাবি/প্রস্তাব করছি।

৪। পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে ১৫ রমজান পর্যন্ত রাত আটটার পরিবর্তে ১০টা পর্যন্ত এবং ১৫ রমজান এরপর থেকে ঈদুল ফিতরের চাঁদ রাত পর্যন্ত ক্রেতার উপস্থিতির উপর ভিত্তি করে দোকান খোলা রাখার অনুমোদনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর নিকট আবেদন করছি।

ডিএইচডি/এএস

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর