শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

খালি নির্ধারিত বোর্ড, পোস্টারের ছড়াছড়ি দেয়ালে

দেলাওয়ার হোসাইন দোলন
প্রকাশিত: ২০ জানুয়ারি ২০২৩, ১০:৪৪ পিএম

শেয়ার করুন:

খালি নির্ধারিত বোর্ড, পোস্টারের ছড়াছড়ি দেয়ালে
ছবি: ঢাকা মেইল

যত্রতত্র পোস্টার, ব্যানার আর ফেস্টুনের ছড়াছড়ি রাজধানীর সৌন্দর্যকে ম্লান করে অনেকটাই। বিষয়টির সমাধানে ইতোমধ্যেই উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। পোস্টার লাগানোর জন্য ওয়ার্ডভিত্তিক জায়গা নির্ধারণ করা শুরু করেছে সংস্থাটি। তবে এরপরও নির্ধারিত স্থানে পোস্টার লাগাতে নাগরিকদের মাঝে অনীহা দেখা গেছে।

উত্তর সিটির মিরপুর এলাকা ঘুরে দেখা গেছে- বিভিন্ন অলিগলি ছাড়াও ওভারব্রিজের পিলার, ল্যাম্পপোস্ট এমনকি দেয়ালসহ সর্বত্রই পোস্টার-ব্যানারে ছেয়ে আছে। আবার কোথাও কোথাও টু-লেট ছাড়াও ব্যক্তিগত প্রচারণামূলক পোস্টার, বিজ্ঞপ্তিও ঠাঁই পেয়েছে। যদিও এসবের পাশেই আছে ডিএনসিসির পোস্টার লাগানোর নির্ধারিত স্থান। তবে সেখানে নেই একটিও পোস্টার!


বিজ্ঞাপন


Posterডিএনসিসি বলছে, যত্রতত্র পোস্টার, ব্যানারে যেন শহরের সৌন্দর্য নষ্ট না হয় সেই লক্ষ্যে সিটি করপোরেশনের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে পরীক্ষামূলক পাইলটিং প্রকল্পের আওতায় পোস্টার-ব্যানার লাগানোর বড় বোর্ড বসানো হয়েছে। মিরপুর ১০ নম্বর এলাকায় ১৬/৬ ফুটের এই বোর্ড লাগানো হয়েছে। একই ওয়ার্ডে আরও ৫টি বোর্ড বসানো হবে। আশেপাশের এলাকার যে কোনো বিষয়ে প্রচারণার জন্য এসব স্থানেই ব্যানার-পোস্টার লাগাতে হবে। যেখানে-সেখানে পোস্টার লাগিয়ে সৌন্দর্যহানির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে যাবে সংস্থা। আর এই প্রকল্পে সুফল মিললে অন্যান্য ওয়ার্ডেও একই রকমের বোর্ড স্থাপন করতে চায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন।

যদিও সরেজমিন ঘুরে নাগরিকদের মাঝে নির্ধারিত স্থানে পোস্টার লাগাতে অনীহা দেখা গেছে। শুক্রবার (২০ জানুয়ারি) নির্ধারিত স্থানের পাশের দেয়ালে দোকানের বিজ্ঞাপন লাগাতে দেখা যায় সামছুল আরেফিন নামে একজনকে।

নির্ধারিত বোর্ডে না লাগিয়ে দেয়ালে লাগানোর কারণ জানতে চাইলে ঢাকা মেইলকে তিনি বলেন, সিটি করপোরেশনের নির্ধারিত স্থান দেখেছি। তবে এখানে পোস্টার লাগাতে গেলে টাকা দিতে হবে কি-না জানা নেই, তাই বাইরে লাগিয়েছি। এ সময় স্থানটি যে সবার জন্য পোস্টার লাগানোর ক্ষেত্রে উন্মুক্ত এ বিষয়টি জানা ছিল না বলেও দাবি করেন তিনি।

Posterতবে এখনই হতাশ হতে চান না প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। ডিএনসিসির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন- মিরপুর এলাকায় শুধুমাত্র পাইলটিং প্রকল্প হিসেবে এটা চালু করা হয়েছে। এই প্রকল্পে বোর্ডগুলোয় সাধারণ মানুষ কীভাবে তাদের প্রচারণার পোস্টার লাগাবে, একজন কয়টি পোস্টার লাগাতে পারবেন অথবা লাগানো পোস্টার কতদিন রাখা যাবে- এসব বিষয় নিয়ে একটি নীতিমালা তৈরি করতে হবে। এরপরই পোস্টার বোর্ড প্রকল্পটি সফল হবে। সেই সঙ্গে যত্রতত্র ব্যানার, পোস্টারে আর শহরের সৌন্দর্য নষ্ট হবে না।


বিজ্ঞাপন


এ বিষয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা মকবুল হোসাইন ঢাকা মেইলকে বলেন, ঢাকা শহরে যত্রতত্র অবৈধভাবে পোস্টার, রেক্সিন, দেয়াল লিখন, সাইনবোর্ড কিংবা ব্যানার লাগানোর ফলে নগরীর সৌন্দর্য ব্যাহত হচ্ছে। পাশাপাশি নগরীও অপরিচ্ছন্ন হয়ে পড়ছে। শহরের সৌন্দর্য রক্ষায় এবং একটি স্মার্ট সিটি গড়ে তুলতে হলে এসব বন্ধ করতে হবে।

মকবুল হোসাইন বলেন, বিষয়টি সমাধানের লক্ষ্যে ডিএনসিসির পক্ষ থেকে মিরপুরে একটি পোস্টার লাগানোর বোর্ড স্থাপন করা হয়েছে। এখানেই সবাইকে পোস্টার লাগাতে হবে। পাশাপাশি মেয়রের নির্দেশনায় ডিএনসিসির প্রতিটি ওয়ার্ডেও পোস্টার লাগানোর স্থান নির্ধারণ করে দেওয়া হবে। নির্ধারিত স্থানেই কেবল পোস্টার লাগানো যাবে। কেউ অন্যত্র পোস্টার লাগাতে পারবে না।

Posterউল্লেখ্য, গত ৭ জানুয়ারি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসির) দ্বিতীয় পরিষদের ১৯তম করপোরেশন সভায় ব্যানার-ফেস্টুনে শহরের সৌন্দর্যহানির বিষয়টি তোলা হয়। যেখানে কাউন্সিলরদের সর্বসম্মতিতে বিষয়টিতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

সেদিন সভায় মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেছিলেন, ঢাকা শহরের সৌন্দর্য রক্ষায় এবং একটি স্মার্ট সিটি গড়ে তুলতে হলে এসব বন্ধ করতে হবে। অবৈধভাবে পোস্টার, ব্যানার লাগালে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ডিএনসিসির প্রতিটি ওয়ার্ডে পোস্টার লাগানোর স্থান নির্ধারণ করে দেওয়া হবে। নির্ধারিত স্থানেই কেবল পোস্টার লাগানো যাবে। নির্ধারিত স্থান ছাড়া অন্য কোথাও কেউ পোস্টার লাগাতে পারবে না।

এ নিয়ে গত বুধবার (১৮ জানুয়ারি) ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসির) সচিব ড. মোহাম্মদ মাহে আলম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতেও বলা হয়, যেখানে-সেখানে পোস্টার লাগিয়ে সৌন্দর্যহানির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে যাবে সংস্থাটি।

এতে আরও বলা হয়, ঢাকা শহরে যত্রতত্র অবৈধভাবে পোস্টার, রেক্সিন, দেয়াল লিখন, সাইনবোর্ড, ব্যানার লাগানোর ফলে নগরীর সৌন্দর্য ব্যাহত হচ্ছে। পাশাপাশি নগরীর অপরিচ্ছন্ন হয়ে পড়ছে। ঢাকা শহরের সৌন্দর্য রক্ষা এবং একটি স্মার্ট সিটি হিসেবে গড়ে তুলতে হলে যত্রতত্র পোস্টার বন্ধ করতে হবে। পোস্টার, ব্যানার ও ফেস্টুন লাগানোর বিষয়ে সুনির্দিষ্ট আইন রয়েছে। নির্ধারিত স্থান ব্যতীত অন্য স্থানে পোস্টার-ব্যানার লাগানো আইনগত দণ্ডনীয় অপরাধ বলেও এতে উল্লেখ করা হয়।

ডিএইচডি/আইএইচ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর