শনিবার, ৪ মে, ২০২৪, ঢাকা

ফোনে ফোনে চলছে অবৈধ মানি এক্সচেঞ্জ ব্যবসা

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১৮ জানুয়ারি ২০২৩, ০৩:২৫ পিএম

শেয়ার করুন:

ফোনে ফোনে চলছে অবৈধ মানি এক্সচেঞ্জ ব্যবসা

দেশে ডলারের দাম বাড়ায় হাজারের বেশি প্রতিষ্ঠান মানি এক্সচেঞ্জ নাম দিয়ে ব্যবসা চালাচ্ছে। অথচ বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, বৈধ মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠান মাত্র ২৩৫টি। অবৈধ এসব ব্যবসার কৌশলও ভিন্ন। কর্মী নিয়োগ করে তারা তাদের ব্যাগে দিচ্ছে ডলার। কোনো ব্যক্তির লাগলে তারা ফোনে অর্ডার করছে। এরপর তা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে সেই ব্যক্তির কাছে। এসব প্রতিষ্ঠানের নেই কোনো ধরনের বৈধতা। অনুমতি ছাড়াই অবৈধভাবে ব্যবসা করছে তারা। 

বুধবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর মালিবাগে সিআইডির প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সিআইডির প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আলী মিয়া।


বিজ্ঞাপন


এর আগে মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) রাতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তিনটি অবৈধ মানি এক্সচেঞ্জ ব্যবসা পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানের ১৪ জনকে গ্রেফতার করে সিআইডি। পরে তাদের জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য।

গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন- আবু তালহা ওরফে তাহারত ইসলাম তোহা (৩২), আছাদুল শেখ (৩২), হাছান মোল্যা (১৯), আব্দুল কুদ্দুস (২৪), হাসনাত এ চৌধুরী (৪৬), শামসুল হুদা চৌধুরী ওরফে রিপন (৪০), সুমন মিয়া (৩০), তপন কুমার দাস (৪৫), আব্দুল কুদ্দুস (৩২), কামরুজ্জামান রাসেল (৩৭), মনিরুজ্জামান (৪০), নেওয়াজ বিশ্বাস, আবুল হাসনাত (৪০) ও শাহজাহান সরকার (৪৫)। এ সময় তাদের কাছ থেকে এক কোটি ১১ লাখ ১৯ হাজার ৮২৬ টাকা সমমূল্যের ১৯টি দেশের বৈদেশিক মুদ্রাসহ সর্বমোট এক কোটি ৯৯ লাখ ৬১ হাজার ৩৭৬ টাকা জব্দ করা হয়।

তিনটি অবৈধ মানি এক্সচেঞ্জ অফিস হচ্ছে- গুলশানের জে এম সি এইচ প্রাইভেট লিমিটেড, মোহাম্মদপুরের টোকিও স্কয়ারের আলম অ্যান্ড ব্রাদার্স এবং উত্তরার আশকোনা মুক্তিযোদ্ধা মার্কেটের তৈমুর মানি এক্সচেঞ্জ। বাকি দুটি ফেরারি প্রতিষ্ঠান।

 রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় নিজস্ব অফিস এবং ভাসমান যোগাযোগের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি (লাইসেন্স) ছাড়া বৈদেশিক মুদ্রা ক্রয়-বিক্রয় করে আসছিল তারা।


বিজ্ঞাপন


Money2

সিআইডি প্রধান বলেন, প্রতিটি প্রতিষ্ঠান প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৭০ থেকে ৭৫ লাখ টাকা সমমূল্যের বিদেশি মুদ্রা অবৈধভাবে ক্রয়-বিক্রয় করে আসছিল। মাসে ২২ বা ২৪ কর্মদিবসে আরও কী পরিমাণ তারা ক্রয়বিক্রয় করেছে এর ধারণা করা যায়। সারাদেশে আরও এক হাজারের বেশি অবৈধ মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠান রয়েছে।

মোহাম্মদ আলী মিয়া বলেন, অভিযানের কারণে অনেক অবৈধ প্রতিষ্ঠান অফিস গুটিয়ে ব্যাগ নিয়ে ঘুরে ঘুরে ফোনে ফোনে যোগাযোগ করে ব্যবসা করছে। যার যেখানে যে পরিমাণ বিদেশি মুদ্রা দরকার সেখানে পৌঁছে দিচ্ছে। বিনিময়ে ডলার বা অন্য বিদেশি মুদ্রার ন্যায্যমূল্যের তুলনায় বেশি টাকা নিচ্ছে।

অতিরিক্ত আইজিপি বলেন, বিদেশে যাওয়ার অনুমতি পাওয়ারা ভিসা পাবার পর বাংলাদেশের যেকোনো ব্যাংকে ভিসা দেখালে বিদেশি মুদ্রা পাবেন এবং সংশ্লিষ্ট ব্যাংক তা দিতে বাধ্য। তাহলে কেন তারা অবৈধভাবে ১০০ টাকার ডলার ১১৫ বা ১২০ টাকায় কিনবেন! এটা অন্যায় ও অবৈধ। আমরা এই অবৈধ কাজকে উৎসাহিত করতে পারি না। লাগবেই যখন তখন বৈধভাবে নেব, ব্যাংক কিংবা বৈধ মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠান থেকে নেব। তাহলে ফুলে-ফেঁপে উঠা এসব অবৈধ মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠান অটোমেটিক্যালি বন্ধ হয়ে যাবে।

গ্রেফতার ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইন, ১৯৭৪ অনুযায়ী মামলা দায়েরের বিষয় প্রক্রিয়াধীন বলে জানান সিআইডি প্রধান।

এমআইকে/জেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর