জেঁকে বসেছে শীত। বাঙালির ঘরে ঘরে এই সময়ে তৈরি হয় হরেক রকমের পিঠা-পুলি। যা তৈরির অন্যতম উপকরণ নারকেল ও খেজুরের গুড়। শীত ঘিরে তাই রাজধানীতে পিঠা-পুলি তৈরির এই দুই উপকরণের বিক্রি বেড়েছে। সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে দামও।
সরেজমিনে রাজধানীর বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি দোকানেই নারকেল, খেজুর গুড় ছাড়াও মিঠাই ও চিড়া বিক্রির ধুম পড়েছে। তবে শীত মৌসুম চলায় এসব বিক্রির পাশাপাশি বেড়েছে সব ধরনের পিঠা-পুলি তৈরির পণ্যের দামও।
বিজ্ঞাপন
বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি খেজুর পাটালি মানভেদে বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত। এরমধ্যে ভালো মানের এক কেজি খেজুর পাটালি বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকায়। এছাড়া মোটামুটি মানের একই পরিমাণ ওজনের খেজুর পাটালি ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা এবং কিছুটা নিম্নমানের একই পরিমাণ ওজনের খেজুর পাটালি বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২২০ টাকায়।

একইভাবে বর্তমানে একটি ছোট বা মিডিয়াম সাইজের নারকেল বিক্রি ১০০ থেকে ১১০ টাকায়। আর বড় সাইজের একেকটি নারকেল ১৫০ থেকে ১৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বিক্রেতাদের দাবি, দুই মাস আগেও খেজুর গুড় মানভেদে কেজিপ্রতি ২০ থেকে ৪০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছিল। এছাড়া শীত আসায় নারকেলের দামও প্রায় ২০ থেকে ৩০ টাকা বেড়েছে।
বিজ্ঞাপন
এ নিয়ে কথা হলে কারওয়ান বাজারের মায়ের দোয়া ট্রেডার্সের পাভেল হায়দায় ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘আগে যে নারকেল আমরা ৮০-৯০ টাকায় বিক্রি করতাম, সেটি এখন ১৩০ টাকা দরে বিক্রি করছি। তবে আমরা যে নারকেল ১৩০ টাকায় বিক্রি করছি পাড়া-মহল্লায় অনেকে সেই একই নারকেল বিক্রি করছে ১৫০, ১৬০ টাকায়।’
তবে শীত ঘিরে দোকানিদেরও আগের তুলনায় বেশি দামে এসব পণ্য কিনতে হচ্ছে দাবি করে তিনি বলেন, আগে প্রতি কেজি খেজুর গুড় মানভেদে ১৮০-৩৫০ টাকায় কেনা যেত। তবে এখন ১৮০ টাকা কেজিতে যেগুলো ক্রয় করতে পারছি সেগুলো অনেক নিম্নমানের এবং মোটামুটি মানেরগুলো কিনতে হচ্ছে ২৫০ টাকা কেজিতে। পাশাপাশি ভালো মানের খেজুর গুড় ৩৫০ টাকা কেজিতে কিনতে হচ্ছে। এ সময় আগের তুলনায় প্রতি কেজিতে মানভেদে প্রায় ২০ থেকে ৩০ টাকা দাম বেড়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।
বুধবার (১১ জানুয়ারি) মগবাজার থেকে নারকেল আর খেজুর পাটালি কিনতে কারওয়ান বাজারে এসেছেন মাকসুদা খাতুন। কথা হলে এই গৃহিণী ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘শীতে পরিবারের সবারই পিঠা পছন্দ। বাইরের পিঠা খাওয়া হয় না। বাচ্চাদের স্কুল ছুটি শেষ হলেও গ্রামে যাওয়া হয়নি। সংসারে নানা ব্যস্ততার মাঝেও শীত এলে পিঠা বানাই। তাই নারকেল আর খেজুর গুড় কিনতে এসেছি।
কারওয়ান বাজারে দোকানিরা জানিয়েছেন, শীতে সাধারণত পিঠা-পুলি তৈরির উপকরণগুলোর বিক্রি অন্য সময়ের তুলনায় বেড়ে যায়। ফলে সবার চাহিদা থাকায় দামও কিছুটা বেড়ে যায়। তবে পাড়া-মহল্লার দোকানগুলোতে দাম আরও বেশি বলেও দাবি দোকানিদের।
বিষয়টি নিয়ে কথা হলে কারওয়ার বাজারের কিচেন মার্কেটের ভাই ভাই ট্রেডার্সের সাফায়েত হোসেন ঢাকা মেইলে বলেন, ‘শীতের সময় আমাদের বিক্রি অন্যান্য সময়ের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ হয়। দুই মাস আগের তুলনায় বর্তমানে বিক্রি অনেক বেড়েছে। আগে দোকানে প্রতিদিন যদি ৬০ হাজার টাকার মতো বিক্রি হতো। তবে এখন প্রতিদিনের বিক্রি লাখ টাকাও ছাড়িয়ে যায়।’
বিএইচআর/আইএইচ

