বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

নতুন রাষ্ট্রপতি হিসেবে আলোচনা তাদের ঘিরেই

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৬ জানুয়ারি ২০২৩, ১১:০৯ পিএম

শেয়ার করুন:

নতুন রাষ্ট্রপতি হিসেবে আলোচনা তাদের ঘিরেই

আগামী ২৩ এপ্রিল শেষ হচ্ছে বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের মেয়াদ। নিয়ম অনুযায়ী, এর ৬০ কিংবা ৯০ দিন আগেই নতুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করতে হবে। আবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে রাষ্ট্রপতি পদে মনোনয়ন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, অনেক সময় নির্বাচনকালে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে রাষ্ট্রপতির। ফলে দলীয় আলোচনার বাইরেও এখন সাধারণ মানুষের প্রশ্ন একটাই- কে হচ্ছেন দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি?

সংবিধান অনুযায়ী, দেশের কোনো নাগরিক তার জীবনে দু’বারই রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হতে পারেন। এটা পরপর কিংবা যে কোনো সময়েই হতে পারে। এ ক্ষেত্রে বর্তমান রাষ্ট্রপতি পদে দ্বিতীয়বারের মতো দায়িত্ব থাকা আবদুল হামিদের পদে যে নতুন মুখ আসছে তা বলার অবকাশ থাকে না। সম্প্রতি আইনমন্ত্রী আনিসুল হকও এ কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, রাষ্ট্রপতি পদে নতুন কেউ আসবেন। আর সেই নির্বাচন নির্ধারিত সময়েই হবে।


বিজ্ঞাপন


তৃণমূল থেকে উঠে আসা বর্ষীয়ান ও জনপ্রিয় রাজনীতিবিদ মো. আবদুল হামিদ বাংলাদেশের একমাত্র রাষ্ট্রপতি, যিনি টানা দ্বিতীয় মেয়াদে এই পদে দায়িত্ব পালন করছেন। প্রথমে ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল দেশের ২০তম রাষ্ট্রপতি হিসাবে শপথ নেন তিনি।  পরে পাঁচ বছর মেয়াদপূর্তির পর আবারও ২০১৮ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দেশের ২১তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন।

Special Newsজাতীয় সংসদে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় আওয়ামী লীগ যাকে মনোনয়ন দেবে তিনিই হবেন রাষ্ট্রপতি। আবদুল হামিদ যেভাবে বিগত দুটি নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন, এমন একজনকেই এই পদে আনতে চায় ক্ষমতাসীন দলটি। আর বর্তমান সংসদে যেহেতু বিএনপি নেই, আওয়ামী লীগের একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা এবং এমপিদের দলের বাইরে ভোট দেওয়ার বিধান নেই, তাই সংখ্যাগরিষ্ঠ দল আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের মনোনীত প্রার্থীই হতে চলেছেন পরবর্তী রাষ্ট্রপতি।

ক্ষমতাসীন দলটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের ভাষ্য- রাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় পদে রাজনৈতিকভাবে পোড় খাওয়া ও বিশ্বস্ত কাউকেই বেছে নিতে চায় আওয়ামী লীগ। এ জন্য রাজনীতির অন্দরমহলে রাষ্ট্রপ্রধানের পদের জন্য বিভিন্ন ব্যক্তির নামও আলোচিত হচ্ছে। তবে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

যদিও এই মুহূর্তে রাষ্ট্রের বড় এই পদে চার-পাঁচটি নাম বেশি আলোচিত হচ্ছে। এরমধ্যে থেকেই একজনকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মনোনয়ন দেবেন- এমনটাই শোনা যাচ্ছে।


বিজ্ঞাপন


ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী

২২তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন মহলে সবচেয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছে জাতীয় সংসদের বর্তমান স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীকে নিয়ে। এর পেছনে যুক্তিও আছে। প্রথমত, এর আগে বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ স্পিকার ছিলেন। সে জন্য স্পিকার থেকে আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রপতি নিয়োগ করতে পারে- এরকম একটি ধারণা অনেকের মধ্যেই কাজ করছে।

Special Newsআবার অনেকেই মনে করছেন, ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী সভাপতি শেখ হাসিনার অত্যন্ত বিশ্বস্ত এবং আস্থাভাজন। আবদুল হামিদ যেমন স্পিকার হিসেবে আস্থাভাজন ও সর্বজন গ্রহণযোগ্য ছিলেন তেমনি শিরিন শারমিনেরও গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। এ কারণে তাকে আবদুল হামিদের বিকল্প হিসেবে বিবেচনা করতে পারেন শেখ হাসিনা।

ড. মসিউর রহমান

প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা মসিউর রহমান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে কাজ করেছেন। আবার তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একজন বিশ্বস্ত ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত। সেই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর অর্থবিষয়ক উপদেষ্টাও বটে। দেশের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও বেশ গ্রহণযোগ্য মসিউর রহমান। ফলে রাষ্ট্রপতি হওয়ার দৌড়ে যাদের নাম এখন সবচেয়ে বেশি আলোচিত হচ্ছে তাদের মধ্যে ড. মসিউর রহমান অন্যতম- এমনটা মনে করছেন অনেকেই।

Special Newsবিচারপতি খায়রুল হক

বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সাবেক বিচারপতি খায়রুল হক একজন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ব্যক্তি। তিনি অনেকগুলো যুগান্তকারী এবং ঐতিহাসিক রায় দেওয়ার কারণে বেশ আলোচিত। একজন সৎ, নিষ্ঠাবান বিচারপতি হিসেবেও তাঁর রয়েছে যথেষ্ট সুনাম। তার নেতৃত্বেই বাংলাদেশের পঞ্চম সংশোধনী বাতিল ঘোষিত হয়েছিল। পাশাপাশি দেশে আইনের শাসন এবং বিচার বিভাগের স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রেও একজন পথিকৃৎ তিনি। এ কারণে রাষ্ট্রপতি হিসেবে তার নামও ব্যাপক আলোচিত হচ্ছে। অনেকেই মনে করছেন- সরকারের নীতিনির্ধারকদের বিবেচনায় রাষ্ট্রপতি পদের জন্য খায়রুল হকই একটি পছন্দের নাম।

Special Newsওবায়দুল কাদের

এছাড়াও রাষ্ট্রপ্রধানের পদের আলোচনায় আছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী। কিছুদিন আগেই তৃতীয়বারের মতো সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পেয়েছেন তিনি। তবে দলে তাকে নিয়ে বেশ আলোচনা চলছে। সারাদেশের মানুষের মধ্যে ওবায়দুল কাদের নিজের অন্যন্য অবস্থান তৈরি করেছেন। জনপ্রিয়তাতেও শীর্ষে তিনি। দলের দায়িত্ব থেকে বড় এই পদে আসার আলোচনা আওয়ামী লীগের কাউন্সিলের আগেও ছিল। এবারও রাষ্ট্রপ্রধানের পদের আলোচনায় আছেন আওয়ামী লীগের শীর্ষ এই নেতা।

Special Newsএছাড়াও সম্ভাব্য রাষ্ট্রপতির আলোচনায় রয়েছেন বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী মোজাম্মেল হকের নামও। আবার অনেকেই আলোচনায় আনছেন বেগম মতিয়া চৌধুরীকে। তবে কেউ কেউ বলছেন তাকে জাতীয় সংসদের উপনেতা হিসাবেও দেখা যেতে পারে।

Special Newsসংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রাষ্ট্রপতি নির্বাচন আইন, ১৯৯১ (১৯৯১ সালের ২৭ নম্বর আইন) এর ৫ ধারা অনুসারে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য তফসিল ঘোষণা করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে এই নির্বাচনের তফশিল ঘোষণার প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসি। এরপরই নিশ্চিত হওয়া যাবে কে হচ্ছেন পরবর্তী রাষ্ট্রপতি।

ডব্লিউএইচ/আইএইচ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর