সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

জেঁকে বসছে শীত, কদর বাড়ছে গরম কাপড়ের

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২৯ ডিসেম্বর ২০২২, ১১:২৭ পিএম

শেয়ার করুন:

জেঁকে বসছে শীত, কদর বাড়ছে গরম কাপড়ের
ছবি: ঢাকা মেইল

হেমন্তের হিমেল হাওয়ার সঙ্গে কুয়াশার চাদর মুড়িয়ে ধীরে ধীরে প্রকৃতিতে জেঁকে বসছে শীত। দিনের বেলায়ও তাই দীর্ঘসময় মেঘের আড়ালেই লুকিয়ে থাকছে সূর্য। কুয়াশা আর সূর্যের এমন লুকোচুরির মাঝেই দরজায় কড়া নাড়ছে শৈত্যপ্রবাহ। আগামী দিনগুলোয় ‘হাড়ভাঙা শীতের’ দাপট সঙ্গে নিয়ে কমপক্ষে দুটি মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহের আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস। সবমিলিয়ে তাই শীতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কদর বাড়ছে গরম কাপড়ের।

সরেজমিনে ঢাকার নিউমার্কেট, গুলিস্তান ও পল্টন ছাড়াও মিরপুরসহ বেশকিছু এলাকা ঘুরে শীতের পোশাক বিক্রির হিড়িক দেখা গেছে। অধিকাংশ দোকানেই আলাদাভাবে পসরা সাজিয়ে বিক্রি করতে দেখা গেছে শীতের পোশাক। সেই সঙ্গে ক্রেতাদের উপস্থিতিও চোখে পড়ার মতো।


বিজ্ঞাপন


Special Reportকনকনে শীতের দাপট থেকে সুরক্ষা দিতে ইতোমধ্যেই সাধারণ ব্রান্ডের পাশাপাশি বাজারে উঠেছে নামিদামী সব ব্রান্ডের জ্যাকেট। এরমধ্যে বৃহস্পতিবার বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে জিন্সের জ্যাকেট ১২০০ টাকা, প্যাটিন (লেদার) জ্যাকেট ১৬০০ টাকা ও এক্সপোর্টের জ্যাকেট ২৪০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হতে দেখা গেছে। আর চায়না থেকে এক্সপোর্ট করা বিভিন্ন ধরনের জ্যাকেট মানভেদে দুই হাজার থেকে ২২০০ টাকায়ও বিক্রি করতে দেখা গেছে দোকানিদের। এ ক্ষেত্রে নারীদের শীতের পোশাকও ৭০০ থেকে ১২০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।

যদিও দোকানিরা বলছেন, এখনও দাম ক্রেতাদের নাগালের মধ্যেই রয়েছে। তবে শীতের আমেজ আরও বাড়লে গ্রাহকের চাহিদার সঙ্গে দর ওঠানামা করতে পারে। সে যাই হোক, শীত বাড়ায় বেশি পরিমাণে গরম কাপড় স্টকে রাখছেন দোকানিরা।

বিষয়টিতে কথা হলে নিউমার্কেটের দোকানি সাইফুল আলম ঢাকা মেইলকে বলেন, এবার শীতকে টার্গেট করে প্রায় সাড়ে ৭ লাখ টাকার কাপড় তুলেছি। গতকাল এবং আজ শীত বাড়ায় বিক্রিও বেড়েছে। সামনের দিনগুলোতে দাম আরও বাড়বে বলে আশা তার।

Special Reportপ্রতিবছরই মিরপুর সড়কের দুই পাশে শীতের পোশাকের বাহারি পশরা দেখা যায়। এবারও এর ব্যত্যয় হয়নি। বিশেষ করে মিরপুর-১০ নম্বরের আশপাশে প্রায় সব দোকানেই দেখা মিলছে সোয়েটার ছাড়াও উলের পোশাক, ব্লেজার, ট্রাউজার, জ্যাকেট, চাদর, মাফলার, কানটুপিসহ নানা ধরনের শীতবস্ত্রের। তবে মার্কেটের তুলনায় এখানে অনেকটা সস্তাতেই গরম কাপড় কিনতে দেখা গেছে ক্রেতাদের।


বিজ্ঞাপন


উম্মুল ওয়ারা নামে এক ক্রেতা জানালেন, মার্কেটে খুঁজে পছন্দ করতে পারেননি। আবার কোথাও পছন্দ হলেও দরদামে না মেলায় এখন ফুটপাতে শীতের কাপড় দেখছেন।

দাম নিয়ে কথা হতেই এই ক্রেতা ঢাকা মেইলকে বলেন, কিছুদিন আগেও দাম হাতের নাগালে ছিল। তবে এখন অন্য বছরের তুলনায় দাম কিছুটা বেশি। তার ধারণা- গত এক-দুদিনে শীতের সঙ্গে গরম কাপড়ের চাহিদা বাড়ায় দামও বাড়িয়েছেন দোকানিরা।

যদিও ইউসুফ নামে এক বিক্রেতার দাবি, আমাদের আর দোকানের মালের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। আমাদের দোকান ভাড়া নেই, অন্যান্য খরচও নেই। তাই কিছুটা কমেই শীতের পোশাক বিক্রি করতে পারছি।

Special Reportসে যাই হোক, ধেয়ে আসা কনকনে শীতের ঢাল প্রস্তুত রাখতে এখন সবাই ছুটছেন মার্কেটে। ফলে গুলিস্তান, পল্টনসহ বিভিন্ন এলাকায় শীতের কাপড়ের দোকানগুলোয় বেশ ভিড় করছেন ক্রেতারা। বৃহস্পতিবার গুলিস্তানের বাইতুম মোকাররম মসজিদ সংলগ্ন মার্কেট ঘুরেও দেখা যায়, এখানেও মানভেদে ৫০০ থেকে শুরু করে ২৫০০ টাকা পর্যন্ত দামের সোয়াটার বিক্রি হচ্ছে। আবার লেদারের জ্যাকেট পাওয়া যাচ্ছে ১৫০০ থেকে ৪০০০ টাকায়। সঙ্গে হুডি ৪০০ থেকে ১৫০০ টাকা, ব্লেজার ১৫০০ থেকে ৫০০০ টাকা, শাল ৩০০ থেকে ৫০০০ টাকা পর্যন্ত দরে পাওয়া যাচ্ছে। আর শীত নিবারণে ভালো মানের ফুলহাতা গেঞ্জি পাওয়া যাচ্ছে ২৫০ থেকে ১০০০ টাকায়।

তবে গুলিস্তানে গরম কাপড়ের বড় বেচাকেনা হয় ফুটপাতে। এ জন্য মার্কেটে ক্রেতার সমাগম কম থাকলেও ফুটপাতের দোকানগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় চোখে পড়ার মতো। বৃহস্পতিবারও তাই ফুটপাতে বিভিন্ন ধরনের গরম কাপড় ১০০ থেকে ৬০০ টাকার মধ্যে কিনতে দেখা গেছে ক্রেতাদের।

রাজধানীসহ সারাদেশে এবার এই শীতের পোশাকের বাজার প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা ধরা হচ্ছে। যদিও অন্যবার করোনাসহ নানা কারণে বিক্রি কম হলেও এবার ঠিকমতো হবে কি-না সেটি নিয়েও সংশয় আছে দোকান মালিক সমিতির।

বিষয়টি নিয়ে কথা হলে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন ঢাকা মেইলকে বলেন, আমাদের দেশে দোকান বা ফুটপাতে সবমিলে ৮ হাজার কোটি টাকার শীতের পোশাকের বাজার রয়েছে। গত দুই বছর করোনার কারণে ব্যবসা নেই। তবে এ বছরও যে হবে সেটি এখনই বলা যাচ্ছে না।

ডিএইচডি/আইএইচ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর