গৃহশিক্ষক আল-আমিনের মাধ্যমে আবুবক্কর উগ্রবাদী সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ায় জড়ায় বলে জানিয়েছে র্যাব।
সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জ থেকে আবুবক্কর নিখোঁজ হওয়ার পর তার মায়ের আবেদনের সূত্র ধরে হিন্দালের দুই অর্থ সরবরাহকারীসহ তিনজনকে গ্রেফতারের পর এমন তথ্য জানতে পারে এলিট ফোর্সটি।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন: তুমি ভুল পথে আছো, ফিরে আসো: জঙ্গি ছেলের উদ্দেশে মা
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- অর্থ সরবরাহকারী আব্দুল হাদি ওরফে সুমন (৪০), মো. আবু সাঈদ ওরফে শের মোহাম্মদ (৩২) এবং দাওয়াতি কার্যক্রমে জড়িত মো. রনি মিয়া (২৯)।
মঙ্গলবার মধ্যরাতে নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করে র্যাব। এ সময় তাদের থেকে তিনটি উগ্রবাদী বই, ৯টি লিফলেট এবং দুটি ব্যাগ জব্দ করা হয়। এছাড়া জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ একজন নারী সদস্যকে ডি-রেডিকালাইজড করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে র্যাব।
বুধবার (৯ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানান র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
বিজ্ঞাপন
খন্দকার মঈন বলেন, সম্প্রতি কুমিল্লা থেকে বেশ কয়েকজন তরুণ উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে বাড়ি থেকে নিরুদ্দেশ হয়। তদন্তে নেমে নতুন উগ্রবাদী সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার সন্ধান পায়। নিরুদ্দেশ তরুণদের বিষয়ে র্যাবের গোয়েন্দা শাখা নজরদারি করতে গিয়ে জানতে পারে নারায়ণগঞ্জ থেকে আবু বক্কর রিয়াসাদ রাইয়ান নামে ১৫ বছরের এক তরুণ গত মার্চে নিরুদ্দেশ হয়। এ ঘটনায় তার পরিবার সংশ্লিষ্ট থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করে। এর আগে নিরুদ্দেশ হওয়া ৫৫ জনের তালিকাতেও আবুবক্করের নাম ছিল।
র্যাবের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, আম্বিয়ার ছেলে আবুবক্কর ২০১১ সালের প্রথম দিকে গৃহশিক্ষক আল-আমিনের মাধ্যমে উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে হিন্দাল শারক্বীয়ায় যোগ দেয়। পরে আবুবক্কর ২০২২ সালের মার্চ মাসে আল আমিনের নির্দেশনায় প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্যে হিজরতের নামে বাড়ি থেকে বের হয়। এরপর আর বাড়িতে ফিরে আসেনি। অন্যান্য প্রশিক্ষণ শেষে সেপ্টেম্বর মাসের মাঝামাঝিতে আল-আমিনের নির্দেশনায় গ্রেফতার রনি পাহাড়ে প্রশিক্ষণের জন্য আবুবক্করকে বান্দরবানে নিয়ে যায়। আম্বিয়া তার ছেলের নিরুদ্দেশ হওয়ার কারণ ও অবস্থান সম্বন্ধে জানলেও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের কাছে তা গোপন রাখেন। এ ঘটনায় অবুবক্করের বাবা থানায় ছেলের নিখোঁজের জিডি করাসহ ছেলের সন্ধানে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর শরণাপন্ন হন।

খন্দকার আল মঈন বলেন, আম্বিয়াকে বলা হয়েছিল আবুবক্কর মাঝেমধ্যে বাড়িতে আসবে এবং খোঁজখবর জানাবে। কিন্তু যাওয়ার পর থেকে পরিবারের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করেনি আবুবক্কর। সন্তানের খোঁজখবর না পেয়ে আম্বিয়াও দিশেহারা হয়ে পড়েন। একপর্যায়ে নিজের ভুল বুঝতে পেরে অনুশোচনা করতে থাকেন। র্যাব সদস্যরা তার সন্ধান পেলে সন্তানকে ফিরে পেতে ও স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। পরে তাকে ডি-রেডিকালাইজড করে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
র্যাবের কমান্ডার আরও বলেন, আম্বিয়ার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রনিকে গ্রেফতার করা হয়। রনির দেওয়া তথ্যমতে অন্য দুইজনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় র্যাব।
এমআইকে/এমআর

