বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

দেশে চায়ের উৎপাদন ও ব্যবহার দুটোই বাড়ছে

ওয়াজেদ হীরা
প্রকাশিত: ০৬ মার্চ ২০২২, ০৯:৫৩ এএম

শেয়ার করুন:

দেশে চায়ের উৎপাদন ও ব্যবহার দুটোই বাড়ছে

এক সময় চা উৎপাদনে পিছিয়ে ছিল বাংলাদেশ। কয়েক বছর ধরে দেশে চা উৎপাদন উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে চায়ের ব্যবহারও। একটা সময় ছিল যখন চায়ের ক্রেতা ছিল উচ্চবিত্ত। সময়ের পরিক্রমায় মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তরা চা পানে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছে। অলিগলির মোড় থেকে শুরু করে বিভিন্ন উৎসব কিংবা বাসা বাড়িতে চায়ের ব্যবহার বেড়েছে। জনসংখ্যা বৃদ্ধি, অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং মানুষের খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনের ফলে এখন সব শ্রেণিপেশার মানুষই চা পান করে। এখন এই শিল্পের বাজার ২০ হাজার কোটি টাকার ওপরে। উৎপাদনের প্রায় পুরোটাই ব্যবহার হয় দেশে।

করোনা মহামারির মধ্যেও চা চাষের ইতিহাসে রেকর্ড উৎপাদন হয়েছে ২০২১ সালে। বাংলাদেশ চা বোর্ডের তথ্য অনুসারে, গত বছর দেশের ১৬৭টি চা-বাগান ও ক্ষুদ্রায়তন চা-বাগানে উৎপাদিত হয়েছে ৯ কোটি ৬৫ লাখ কেজি। এর আগে সর্বোচ্চ রেকর্ড ছিল ২০১৯ সালে। সেবার ৯ কোটি ৬০ লাখ কেজি চা উৎপাদিত হয়েছিল।


বিজ্ঞাপন


২০২০ সালে মহামারির প্রথম বছরে চা উৎপাদনেও ধাক্কা লেগেছিল। তখন ৮ কোটি ৬৩ লাখ কেজি চা উৎপাদিত হয়। এক বছরের মাথায় উৎপাদন ১ কোটি ১ লাখ কেজি বেড়ে নতুন রেকর্ড তৈরি হয়। উত্তরাঞ্চলে সমতলের চা-বাগান ও ক্ষুদ্র চাষ থেকে সবচেয়ে বেশি সাফল্য এসেছে। চলতি ২০২২ সালে চা বোর্ডের লক্ষ্য ৯ কোটি ৭০ লাখ কেজি চা উৎপাদনের।

দেশের উৎপাদন এবং ভোগ নিয়ে বাংলাদেশ চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. আশরাফুল ইসলাম ঢাকা মেইলকে বলেন, আমাদের জনসংখ্যা বাড়ছে। চা এমন একটা পানীয় যার চাহিদা সব জায়গায় আছে। এই কারণে আমাদের স্থানীয় মার্কেট অনেক বেড়ে গেছে। আগে যেমন স্বাধীনতার আগে বা পরে ৩০ মিলিয়ন চা উৎপাদন হতো। তখনো আমরা অনেক চা রপ্তানি করতাম। ওই সময় দেশে চায়ের চাহিদা কম ছিল। ওই সময় অনেকেই চায়ে অভ্যস্ত ছিলেন না। এখনতো চা কমন বিষয়। এমন একটা পানীয় সব বয়সী মানুষের পক্ষে খাওয়া সম্ভব।

চায়ের এমন রেকর্ড উৎপাদন নিয়ে বাংলাদেশ চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. আশরাফুল ইসলাম জানান, মহামারির সময়েও প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় দেশের সব চা-বাগানের সার্বিক কার্যক্রম স্বাভাবিক ছিল। সরকারের আর্থিক প্রণোদনা, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ চা বোর্ডের নিয়মিত তদারকি, বাগানমালিক ও শ্রমিকদের নিরলস প্রচেষ্টায় এ অর্জন সম্ভব হয়েছে। পাশাপাশি সঠিক সময়ে ভর্তুকি মূল্যে সার বিতরণ, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চা নিলাম কেন্দ্র চালু রাখা, চা-শ্রমিকদের মজুরি, রেশন ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা হয়েছে। উত্তরাঞ্চলে চাষিদের হাতেকলমে প্রশিক্ষণ ও আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে সমতলের চা-বাগান ও ক্ষুদ্র চা চাষে উৎপাদন এ বছর ৪১ শতাংশ বেড়েছে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) ও চা বোর্ডের তথ্যে দেখা যায়, ১৯৮০ সালে চা উৎপাদন ছিল তিন কোটি ১৩ লাখ ৭০ হাজার কেজি। ২০১৯ সালে উৎপাদন হয়েছে ৯ কোটি ৬০ লাখ কেজি। অর্থাৎ চার দশকে চায়ের উৎপাদন বেড়েছে তিন গুণ। ২০২১ সালের উৎপাদন ২০১৯ সালকেও ছাড়িয়ে গিয়ে নতুন রেকর্ড গড়ে, যা দেশে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ রেকর্ড পরিমাণ উৎপাদন।

বিবিএসের এই উৎপাদন তথ্যে দেখা যায়, ২০১৬-১৭ সালে দেশে চা উৎপাদন ছিল আট কোটি ১৮ লাখ কেজি। ২০১৭-১৮ সালে ছিল সাত কোটি আট লাখ ১১ হাজার কেজি। এর আগের তিন বছরে (২০১৩-২০১৫) গড় উৎপাদন ছিল ছয় কোটি ৫৮ লাখ কেজি। ২০১৬-১৭ সালে চা উৎপাদন হয়েছিল এক লাখ ৩৩ হাজার একর জমিতে। পরের বছর তা দাঁড়ায় এক লাখ ৬৫ হাজার একর। ২০১৮-১৯ সালে দাঁড়ায় এক লাখ ৩৩ হাজার একরে।

চা-বাগানের মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ টি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এম শাহ আলম বলেন, বছরের পর বছর ধারাবাহিকভাবে চা-বাগানে যে সংস্কার কার্যক্রম চলছে, তারই ফল এ রেকর্ড উৎপাদন। নতুন চারা ও নতুন আবাদে উৎপাদন বেড়েছে। বছরের শুরুর দিকে চা উৎপাদনের প্রতিকূল আবহাওয়া থাকলেও পরে তা কেটে যায়। তাতেই রেকর্ড উৎপাদন সম্ভব হয়েছে।

এক সময় রপ্তানি পণ্যের তালিকায় চা ছিল। গত ৫১ বছরে চা বাগান বেড়েছে, উৎপাদনও বেড়েছে তবে রপ্তানি সেভাবে বাড়েনি। ফলে চায়ের বাজার ধরেছে দেশেই। দেশে ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার চাহিদা মেটাচ্ছে উৎপাদিত চা। এখন প্রতিনিয়ত চা ছাড়া যেন চলেই না একদা চা পানে অনভ্যস্ত বাঙালির। মহল্লার অলি গলিতে হরহামেশাই চোখে মেলে চায়ের ছোট বড় দোকান। এসব দোকানে ঘন্টার পর ঘন্টা আড্ডা দেন বিভিন্ন বয়সী মানুষ।

সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, ১৭ কোটি বিশাল জনগোষ্ঠির এই দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদাই চা-শিল্পকে উপরে নিয়ে যাওয়ার জন্য যথেষ্ট। দেশের আর্থিক উন্নতি হওয়ার কারণে মানুষের জীবনযাত্রায়ও উন্নয়ন ঘটছে। ফলে বাড়ছে চায়ের চাহিদা। মানুষের খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন ঘটছে।

 

চা সংশ্লিষ্টদের গবেষণা অনুযায়ী ২০০১ সালে দেশে প্রতিজনের গড় চা পানের পরিমাণ ছিল ১১৩ কাপ। ২০ বছর পর তা উন্নীত হয়েছে ২৩০ কাপে। স্বাধীনতার পরে বার্ষিক চা উৎপাদন ছিল ৩ কোটি ১০ লাখ কেজি। এখন তা বেড়েছে কয়েক গুণ।  ২০২৫ সালে অন্তত সাড়ে ১২ কোটি কেজি চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে। এই লক্ষ্য অর্জন সম্ভব বলে মনে করছেন উদ্যোক্তারা। কারণ এর মধ্যে বিদ্যমান চা-বাগানে উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি নতুন উৎপাদনে এসে পড়বে আরও কিছু চা-বাগান। এখানে উচ্চফলনশীল চা-গাছ লাগানো হচ্ছে। এক্ষেত্রে পাহাড়ে যে চারা লাগানো হচ্ছে সেগুলো হাইব্রিড ক্লোন চা এবং সমতলে বাইক্লোন চা।

চাষাবাদের ক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন ঘটেছে। বিশেষ করে পঞ্চগড় জেলায় সমতলে চা-বাগান এই শিল্পে বাড়তি মাত্রা যোগ করেছে। চা-বাগানের জন্য বেশি উর্বর ভূমির প্রয়োজন হয় না। অনুর্বর পাথুরে ভূমি চা চাষের জন্য উপযোগী। 

বাংলাদেশ টি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এম শাহ আলম জানিয়েছেন, আমাদের দেশে অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে চায়ের ব্যবহার বেড়েছে। আশির দশকে দেশে যে চা উৎপাদন হতো তার ৮০ শতাংশই রপ্তানি হয়ে যেত। বর্তমানে যা উৎপাদন হয় তার ৯৫ থেকে ৯৬ শতাংশই দেশের বাজারের জন্য লাগে। তবে এখন রপ্তানি যেমন হচ্ছে, তেমন আমদানিও হচ্ছে।

বাংলাদেশ টি অ্যাসোসিয়েশনের সিলেট ব্র্যাঞ্চের চেয়ারম্যান জিএম শিবলী ঢাকা মেইলকে জানান, চায়ের ব্যবহার বাড়ছে এটি নি:সন্দেহে বলতে হবে। দেশের উৎপাদিত চায়ের বড় অংশতো দেশেই ব্যবহার হচ্ছে।

সিলেটকে এক সময়ে চায়ের রাজধানী মনে হলেও সেই চা-বাগান এখন আর সিলেটেই সীমাবদ্ধ নেই। পাহাড় ছেড়ে চা-বাগান এখন নেমে আসছে সমতলে। বাংলাদেশের আবহাওয়া চা চাষের জন্য খুবই সহায়ক। এই খাতে নতুন নতুন উদ্যোক্তারা এগিয়ে আসায় চায়ের সম্ভাবনাও ক্রমেই উজ্জ্বল থেকে উজ্জ্বলতরও হচ্ছে।

বাংলাদেশ চা বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী দেশে এখন ১৬৭টি বাগানে চা উৎপাদিত হচ্ছে যার মধ্যে বৃহত্তর সিলেটেই ১৩৫টি চা-বাগান। এছাড়াও মৌলভীবাজারে ৯১, হবিগঞ্জে ২৫ ও সিলেটে ১৯টি। এছাড়া চট্টগ্রামে ২২, পঞ্চগড় জেলায় ৭ রাঙ্গামাটিতে ২ এবং ঠাকুরগাঁওয়ে ১টি চা-বাগান রয়েছে। দেশের বড় বড় শিল্প গ্রুপগুলো চা-বাগানের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠেছে।

বাংলাদেশে চায়ের প্রথম বাণিজ্যিক আবাদ শুরু হয় সিলেটে ১৮৫৪ সালে। সে বছর সিলেট শহরের উপকণ্ঠে মালনিছড়া চা-বাগান প্রতিষ্ঠিত হয়। এ বাগানে চা উৎপাদনের মধ্য দিয়ে চা-শিল্পের যাত্রা শুরু হয়। তখন থেকে ধীরে ধীরে চা এদেশে একটি কৃষিভিত্তিক শ্রমঘন শিল্প হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। কর্মসংস্থান সৃষ্টি, রপ্তানি আয় বৃদ্ধি, আমদানি বিকল্প দ্রব্য উৎপাদন এবং গ্রামীণ দারিদ্র্য হ্রাসকরণের মাধ্যমে চা জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও ক্রমাগত নগরায়নের ফলে ও জনতার শহরমুখিতার কারণে চায়ের অভ্যন্তরীণ চাহিদা ক্রমশ বাড়ছে। এছাড়া সামাজিক উন্নয়নের ফলেও চায়ের অভ্যন্তরীণ চাহিদা বেড়েছে। বিগত ৩ দশক ধরে চায়ের অভ্যন্তরীণ চাহিদা ব্যাপকভাবে বেড়েছে।

টি ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের তথ্যমতে, প্রতি সপ্তাহের সোমবার দেশের নিলামকেন্দ্রগুলোতে চা নিলাম হয়। তার আগে শ্রমিক, মিল ও ব্রোকারের হাত ঘুরে আসে নিলামকেন্দ্রে। নিলামে প্রতি কেজি চা বিক্রি হয় ২০০ থেকে ৩০০ টাকার মধ্যে। নিলামের দর হিসাব করেই চা-শিল্পের বাজারের আকার বোঝা যায়। তার হিসাবে বর্তমানে প্রতিবছর ১৯ হাজার কোটি টাকার বেশি চা বিক্রি হয়। বাজারজাতকরণ, পরিবহনসহ সব মিলিয়ে চা-শিল্পের বাজারের আকার হবে ২০ হাজার কোটি টাকার ওপরে। জানা যায়, দেশে বর্তমানে দুই ধরনের চা উৎপাদন হয়। ব্ল্যাক টি ও গ্রিন টি। এগুলোকে প্রক্রিয়াজাত করে প্যাকেটে ভরে বিভিন্ন কোম্পানি বিভিন্ন ব্র্যান্ড নামে বিক্রি করে।

চা নিয়ে রপ্তানিতে আশার কথা শুনিয়েছেন বাংলাদেশ চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. আশরাফুল ইসলাম। ঢাকা মেইলকে আশরাফুল ইসলাম বলেন, আমরা চা শিল্পকে রপ্তানিমুখী করার চেষ্টা করছি। সেক্ষেত্রে চায়ের উৎপাদন আরও বাড়াতে হবে। দেশের চাহিদা পূরণ করে ২০২৫ সালের মধ্যে ২০ মিলিয়ন কেজি চা রপ্তানি করার চেষ্টা করবো, সেই পরিকল্পনা আছে আমাদের। এখানে অনেক বিষয় সম্পৃক্ত রয়েছে যেমন আবহাওয়া, ক্ষুদ্র চাষিদের অন্তর্ভূক্তি, চা বোর্ডের টেকনিক্যাল দিক এগুলো রয়েছে। কিছু সীমাবদ্ধতাও আছে। এখনো কিছু চা রপ্তানি হচ্ছে।

চায়ের লক্ষ্য ও পরিকল্পনা নিয়ে চা বোর্ডের চেয়ারম্যান বলেন, ২০২৫ সালের মধ্যে ১৪০ মিলিয়ন কেজি অর্থাৎ ১৪ কোটি কেজি চা উৎপাদন করতে চাই। এখন যেটা ১০ কোটির কাছাকাছি হচ্ছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চা-শিল্প বর্তমানে বিনিয়োগের অভাবে তীব্র আর্থিক সংকটের সম্মুখীন। ব্যাংক ঋণের সুদের হার এত বেশি যে বিনিয়োগের জন্য তহবিল সংগ্রহ করা উৎপাদনকারীদের পক্ষে কঠিন। তাছাড়া চা-বাগানের জমির মালিকানা নিয়ে বিরোধ রয়েছে। এরপরও চায়ে সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

বাংলাদেশ চা গবেষণা ইন্সটিটিউটের (বিটিআরআই) পরিচালক ড. মোহাম্মদ আলী বলেন, ২০২০ সালে দেশে ৮৬ দশমিক ৩৯৪ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদন হয়েছিল। এবছর ১০ মিলিয়নের কিছু বেশি চা অতিরিক্ত উৎপাদন হয়েছে। করোনা মোকাবেলা করেও অতীতের সকল রেকর্ড অতিক্রম করে চায়ের বাম্পার ফলন হয়েছে, যা প্রমাণ করে দেশে চা শিল্পের সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এর কারণ হিসেবে বছরের পর বছর ধারাবাহিকভাবে চা-বাগানে যে সংস্কার কার্যক্রম চলছে, তারই ফসল এ রেকর্ড উৎপাদন।

ডব্লিউএইচ/এমআর/ একেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

টাইমলাইন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর