বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

প্রমাণ করেছি যত দুর্যোগ আসুক আমরা মোকাবিলায় সক্ষম: প্রধানমন্ত্রী

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১৩ অক্টোবর ২০২২, ০৫:১৭ পিএম

শেয়ার করুন:

প্রমাণ করেছি যত দুর্যোগ আসুক আমরা মোকাবিলায় সক্ষম: প্রধানমন্ত্রী

দুর্যোগ সহনশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে জায়গা পেয়েছে এমন মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘যতই দুর্যোগ আসুক আমরা সেটা মোকাবিলা করতে সক্ষম। এটা আমরা প্রমাণ করেছি। এটা অব্যাহত রাখতে হবে।’

আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস ২০২২ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানে যুক্ত হন।


বিজ্ঞাপন


অনুষ্ঠানে ২৫টি জেলা ত্রাণ/গুদাম/দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা তথ্য কেন্দ্র, ৫০টি মুজিব কেল্লা এবং ৮০টি বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।

অনেকটা আক্ষেপের সুরে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের বাংলাদেশটা একটা অদ্ভুত দেশ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেমন মোকাবিলা করতে হয় আবার অগ্নিসন্ত্রাসের মতো দুর্যোগও আমাদের মোকাবিলা করতে হয়। যেটা মানুষ সৃষ্ট। চলন্ত গাড়িতে আগুন, বাসে আগুন, লঞ্চে আগুন। এটাই হলো আমাদের দুর্ভাগ্য।

দায়িত্বহীন কেউ যেন ভবিষ্যতে ক্ষমতায় না আসে সে বিষয়ে সতর্ক থাকার জন্য দেশবাসীকে অনুরোধ জানান সরকারপ্রধান।

শেখ হাসিনা বলেন, আবার ও রকম যেন কেউ না আসে ক্ষমতায় যে, 'যত মানুষ মারা যাওয়ার কথা ছিল তত মানুষ মরে নাই' এই কথা বলে দায়-দায়িত্বহীনতার পরিচয় যেন কেউ না দেয় ভবিষ্যতে সেদিকেও দেশবাসীকে সতর্ক থাকার অনুরোধ জানাচ্ছি।


বিজ্ঞাপন


জলবায়ু অভিঘাত প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের যে অভিঘাত বাংলাদেশে আসছে আসলে বাংলাদেশ কিন্তু কোনো মতেই এর জন্য দায়ী নয়। আমরা সব সময় সতর্ক। আওয়ামী লীগ ও কৃষক লীগসহ অন্যান্য সহযোগী সংগঠন আমরা একটা কর্মসূচি সবসময় করতাম-'৮৪ সালে আমরা সিদ্ধান্ত নেই, '৮৫ সাল থেকে প্রতি বছর পহেলা আষাঢ় থেকে ৩ মাস বৃক্ষ রোপণ কর্মসূচি। আমাদের প্রতিটি নেতা-কর্মীর ওপর নির্দেশ আছে, যে যেখানে পারবে, গাছ লাগাবে। তখন জলবায়ু পরিবর্তনের কোনো বিষয় ছিল না। আমাদের বাংলাদেশ সবুজ বাংলাদেশ, এই সবুজায়ন যাতে থাকে সেদিকে লক্ষ রেখেই আমাদের কর্মসূচি আমরা দীর্ঘ দিন থেকে অনুসরণ করে যাচ্ছি।

বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, বাংলাদেশ কোনো রকম ইমিশন করে না, বাংলাদেশ ক্ষতিকারক না কিন্তু বাংলাদেশ সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। উন্নত দেশগুলো উন্নয়ন করে ফেলেছে। আর তার ফলে আজকে আমরা ভুক্তভোগী। আমাদের এটাই দাবি ছিল, যেসব ক্ষতিগ্রস্ত দেশ; জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে যেসব দেশ সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে এদের সব রকমের সহযোগিতা তাদের দেওয়ার কথা।

শেখ হাসিনা বলেন, দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো আমরা তো অনেক প্রতিশ্রুতি পাই কিন্তু বাস্তবে কতটুকু সহযোগিতা পাওয়া যায়! তারপরও আমি বলব, প্যারিস চুক্তি হওয়ার ফলে একটা আশার প্রদীপ জ্বেলে আছে। পাশাপাশি গ্লাসগোতেও কিছু সিদ্ধান্ত হয়েছে, ভবিষ্যতে কী হয়...কিন্তু আমাদের একটা কথা মনে রাখতে হবে আমাদের দেশের ভৌগলিক অবস্থার কথা চিন্তা করে আমাদের ব্যবস্থাটা আমাদের নিজেদেরই করে নিতে হবে।

পরিবেশ রক্ষায় নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বন্যা আমাদের প্রয়োজন। সারা বছর বৃষ্টিতে যে ভূমিটা ক্ষয় হয়, বন্যায় পলি পড়ে সেই ভূমিটা আবার পুনরুদ্ধার হয় কিন্তু এই বন্যায় মানুষ যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেদিকেও আমরা সতর্ক। সেজন্য বন্যাপ্রবণ এলাকায় আমরা এখন বন্যা ও সাইক্লোন শেল্টার আমরা নির্মাণ করে দিচ্ছি।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও প্রতিরোধে বর্তমান সরকারের নেওয়া বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন শেখ হাসিনা। ভবিষ্যত পরিকল্পনা উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, জাতির পিতার ডাকে সাড়া দিয়ে অস্ত্র তুলে নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জন করে আমরা এ দেশ গড়ে তুলেছি। অনেক ঘাত-প্রতিঘাত আমাদের ওপর এসেছে, সেগুলো মোকাবিলা করে বাংলাদেশ আজ এগিয়ে যাচ্ছে। একদিকে করোনা, অপর দিকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, নিষেধাজ্ঞা-এসব মোকাবিলা করেই কিন্তু আমাদের এগিয়ে যেতে হচ্ছে। তবে ইনশাল্লাহ আমরা এগিয়ে যেতে পারব।

বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, 'কেউ দাবায়া রাখতে পারবা না'। তো বাঙালি জাতিকে কেউ দাবায়া রাখতে আর পারবে না। প্রাকৃতিক দুর্যোগ, মনুষ্য দুর্যোগ সব মোকাবিলা করে বাংলাদেশ তার অভিষ্ঠ লক্ষ্যে পৌঁছাবে।

বিইউ/এমআর

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর