শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ঢাকা

কারও প্রতি অভিযোগ-অনুযোগ নেই: বিদায় বেলায় আইজিপি

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১২:৪৮ পিএম

শেয়ার করুন:

কারও প্রতি অভিযোগ-অনুযোগ নেই: বিদায় বেলায় আইজিপি

নষ্ট রাজনীতির দুষ্টচর্চায় যারা আমাকে তাদের বিপক্ষে আবিষ্কার করেছেন, তাদের নিয়ে কোনো অভিযোগ-অনুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেছেন পুলিশের বিদায়ী আইজিপি বেনজীর আহমেদ। তিনি বলেছেন, সবাইকে নিয়ে সামনে আগাব। যে যেখানে আছি হাতে হাত রেখে দায়িত্ব পালন করব।

বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে বিদায়ী সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।


বিজ্ঞাপন


দায়িত্ব পালনকালে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ কী ছিল এমন প্রশ্নের জবাবে বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘কোনো মানুষই আমাদের প্রতিপক্ষ নয়। রাষ্ট্রের কর্মচারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। এর বাইরে আরেকটা বিষয় থাকে সামাজিক প্রত্যাশা। সামাজিক প্রত্যাশার জন্যও অনেক কিছু করতে হয়েছে। দায়িত্ব পালনে যিনি অপর প্রান্তে, লাইনের উল্টো দিকে ছিলেন। তিনি নিজেকে প্রতিপক্ষ মনে করলে সঠিক হবে না।’

নিজের দায়িত্ব পালনের সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন জানিয়ে বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘সরকারি দায়িত্ব সঠিকভাবে পালনের চেষ্টা করেছি। যা কিছু ভালো হয়েছে তার ক্রেডিট সরকার এবং দেশের মানুষের। কোনো ব্যর্থতা থাকলে আমার। একান্তই সে ক্ষেত্রে হয়তো আমি রাষ্ট্রের দায়িত্ব ঠিকমতো করতে পারিনি।’

পুলিশ প্রধান বলেন, যেহেতু ৩৪ থেকে ৩৫ বছর সরকারি চাকরি করেছি, অবসরকালীন সময়ে আমি সমাজের অংশ হিসেবে থাকব। এখনো উচ্চ পর্যায়ে কাজ করছি। সরকারের বদান্যতায় প্রধানমন্ত্রীর বদান্যতায় আমাকে সবাই চেনে। অসংখ্য মানুষকে আমিও সবাইকে চিনি। এটা নিশ্চিত করে বলতে পারি অবসরকালীন আমি সমাজের অংশ হিসেবে থাকব।


বিজ্ঞাপন


‘আইজি হিসেবে কমিশনার হিসেবে রাষ্ট্রের মানুষ আমাকে তৈরি করেছে। বেতন সুযোগ-সুবিধা নিয়েই তো এখানে এসেছি। চাকরি করার সময়ে রাষ্ট্রের জন্য মানুষের জন্য করেছি অবসরকালীন অবশ্যই সমাজের জন্য কিছু করব। সেই সময়ও আপনাদের সঙ্গে আমি কাজ করব। সেটা ক্ষুদ্র হোক তুচ্ছ হোক ব্যক্তি পর্যায়ে হোক আমরা একসঙ্গে কাজ করব। ছোট ছোট কাজ অনেক বড় কিছু এনে দিতে পারে।-বলেন বেনজীর আহমেদ।

দুই বছরের বেশি সময় পুলিশ প্রধানের দায়িত্ব পালন করে আসা বেনজীর আহমেদ অবসরে যাচ্ছে আগামীকাল শুক্রবার। ২০২০ সালের ১৫ এপ্রিল পুলিশ মহাপরিদর্শক হন তিনি।

এর আগে ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর এলিট ফোর্স র‌্যাবের মহাপরিচালকের (ডিজি) দায়িত্ব পালন করেন। ছয় বছর র‌্যাবের ডিজি হিসেবে দায়িত্ব পালনের আগে প্রায় সাড়ে চার বছর ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার ছিলেন।

২০১৫ সালের ৭ জানুয়ারি র‌্যাবের দায়িত্ব বুঝে নিয়ে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, মাদকসহ বিভিন্ন অপরাধ দমনে ভূমিকা পালন করে ব্যাপক প্রশংসা কুড়ান তিনি। দেশের ক্রীড়াক্ষেত্রেও অবদান রাখেন বেনজীর। অবদান রেখেছেন সুন্দরবনের জলদস্যুতার অবসান ঘটাতেও। ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানও তার সাফল্যের মুকুটে আরও একটি উজ্জ্বল পালক।

igp

মেধাবী ও চৌকস পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিত বেনজীর আহমেদের জন্ম ১৯৬৩ সালের ১ অক্টোবর। গোপালগঞ্জে জন্ম নেওয়া বেনজীর শিক্ষাজীবনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে এমএ এবং এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করেন।

জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা বিভাগে চিফ অব মিশন ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড সাপোর্ট সার্ভিসেস হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থিত জাতিসংঘ সদর দফতরে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদে কাজ করেছেন। কর্মদক্ষতায় তিনবার জাতিসংঘ শান্তিপদক অর্জন করেন।

এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের এশিয়া প্যাসিফিক সেন্টার ফর সিকিউরিটি স্ট্যাডিজ, অস্ট্রেলিয়ার ক্যানবেরা চার্লস স্ট্রার্ট ইউনিভার্সিটি ও সিঙ্গাপুরের বিশ্বব্যাংক আঞ্চলিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে পড়াশোনা করেন।

সপ্তম বিসিএস পুলিশ ক্যাডারের কর্মকর্তা বেনজীর আহমেদ ১৯৮৮ সালে সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) হিসেবে চাকরিতে যোগ দেন।

এছাড়া তিনি কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার, ডিএমপিতে ডিসি নর্থ, পুলিশ একাডেমির প্রধান প্রশিক্ষক, পুলিশ সদর দফতরের এআইজি, পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার টাঙ্গাইলের কমান্ড্যান্ট, ডিআইজি (প্রশাসন ও অপারেশনস্) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা বিভাগে চিফ অব মিশন ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড সাপোর্ট সার্ভিসেস হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থিত জাতিসংঘ সদর দফতরে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদে কাজ করেছেন। কর্মদক্ষতায় তিনবার জাতিসংঘ শান্তিপদক অর্জন করেন।

এমআর

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর