বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

‘সরকার তথ্য অধিকার নিশ্চিত করেছে, সবাইকে দায়িত্বশীল হতে হবে’

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৬:৪৯ পিএম

শেয়ার করুন:

‘সরকার তথ্য অধিকার নিশ্চিত করেছে, সবাইকে দায়িত্বশীল হতে হবে’

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, সরকার যে বহুমাত্রিক গণতান্ত্রিক সমাজ নির্মাণ করছে, জনগণের তথ্য অধিকার সেই সমাজের ভিতকে মজবুত করবে। সেই সাথে তিনি বলেন, সরকার তথ্য অধিকার নিশ্চিত করেছে, পাশাপাশি দায়িত্বশীলতার দিকেও সকলকে সচেতন থাকতে হবে।

বুধবার (২৮ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস ২০২২ উপলক্ষে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে ফিল্ম আর্কাইভ মিলনায়তনে তথ্য কমিশন আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।


বিজ্ঞাপন


এ বছরের ইউনেস্কোর প্রতিপাদ্যের সাথে মিল রেখে ‘তথ্য প্রযুক্তির যুগে জনগণের তথ্য অধিকার নিশ্চিত করা’প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে তথ্য কমিশনার সুরাইয়া বেগমের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে তথ্য ও সম্প্রচার সচিব মো. মকবুল হোসেন এবং তথ্য কমিশনার ড. আবদুল মালেক সভায় বক্তব্য দেন। 

তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে ২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার গঠনের পর আইন প্রণয়ন করে তথ্য কমিশন গঠনের মাধ্যমে জনগণের তথ্যের অধিকার নিশ্চিত করার এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ নেন। তথ্যের অবাধ প্রবাহে জনগণ এবং সরকারের সংযোগের মাধ্যমে জনগণের উপকারই এ কমিশন গঠনের লক্ষ্য।

ড. হাছান স্মরণ করিয়ে দেন, সব দেশেরই রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা আছে, সেই গোপন তথ্য চাইলেই রাষ্ট্র দিতে পারে না। মানুষের ব্যক্তিগত গোপনীয়তাও সব দেশের মতো আমাদের দেশেও আইন দ্বারা সুরক্ষিত। অনেক সময় দেখা যায়, সে ধরনের তথ্যের জন্য নানা চাতুরির আশ্রয় বা ভিন্ন পন্থা অবলম্বন করা হয়, সেটি কোনোভাবেই সমীচীন নয়।

'তথ্যপ্রযুক্তির যুগে জনগণের তথ্যের অধিকার নিশ্চিত করা' প্রতিপাদ্য উল্লেখ করে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ই-গভর্নেন্সের মাধ্যমে রাষ্ট্র পরিচালনায় স্বচ্ছতাও আমাদের সরকারই এনেছে। যেমন ই-টেন্ডারিং হওয়ার আগে টেন্ডার বক্স ছিনতাই হতো, টেন্ডার ফেলার জন্য আসেপাশে পাহারা বসানো হতো, অনেক সময় সংঘর্ষ হতো, এরকম বহু ঘটনা হয়েছে। গত কয়েক বছর এমন হয়নি। সরকারের কোনো নীতিমালা প্রণয়নের আগে খসড়াটি সবার মতামতের জন্য সময় নির্দিষ্ট করে ওয়েবসাইটে দেওয়া হয়। কেউ যদি সময়ের মধ্যে মতামত না দিয়েই বলেন মতামত নেওয়া হয়নি, সেটিও কাম্য নয়। সরকারের এসব স্বচ্ছতাই প্রশংসার দাবিদার।


বিজ্ঞাপন


হাছান মাহমুদ বলেন, গণমাধ্যমের বিকাশের মধ্য দিয়ে তথ্য পাওয়া, সংবাদ পাওয়া, দেশের কাজে জনগণের অংশগ্রহণ এগুলো বৃদ্ধি পেয়েছে। একইসাথে আমাদের মনে রাখতে হবে আমাদের অধিকার যেমন আছে, একইসাথে দায়িত্বশীলতাও থাকতে হবে।

উদাহরণ দিয়ে মন্ত্রী বলেন, একজন এমপির বিরুদ্ধে একটি ভুল সংবাদ পরিবেশন করায় বিবিসির মতো প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী থেকে শুরু করে সবাইকে পদত্যাগ করতে হয়েছে। ১৬৭ বছরের পুরনো পত্রিকা নিউজ অব দ্যা ওয়ার্ল্ড একটি ভুল সংবাদের কারণে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার জরিমানা দিতে অসমর্থ হয়ে ২০১১ সালে বন্ধ হয়। অব ডলার তাদেরকে কনভেন্সি করতে হবে এবং সেই পত্রিকার সেই সামর্থ্য ছিল না, শেষ পর্যন্ত পত্রিকা বন্ধ করে দিতে হয়েছে। আমাদের দেশে এ ধরনের ঘটনা কখনও ঘটেনি। সেখানে যেমন স্বাধীনতা আছে, দায়িত্বশীলতাও আছে। আমরা স্বাধীনতার পাশাপাশি দায়িত্ববোধে সচেতন থাকবো।

দিবসটি উপলক্ষে স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব মো. সাইফুল হাসান বাদল এবং খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ইসমাইল হোসেনসহ মন্ত্রণালয়, অধিদফতর, বিভাগ, জেলা, উপজেলা পর্যন্ত সরকারি দফতর, তথ্য প্রদানকারী কর্মকর্তা ও কমিটি এই সাত পর্যায়ে ১৬ জনের হাতে তথ্য অধিকার বাস্তবায়ন পুরস্কার তুলে দেন অতিথিরা।

প্রসঙ্গত, তথ্য কমিশন গঠনের পর এ পর্যন্ত সারাদেশে এক লাখ ২৯ হাজার ৫৪১টি তথ্য প্রাপ্তির আবেদনের উত্তরে এক লাখ ২৪ হাজার ৫৪৫টি তথ্য সরবরাহ করা হয়েছে। দেশ ডিজিটাল হয়েছে, করোনা মহামারির সময় ২৭ জুলাই ২০২০ থেকে বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর মতো ৩৫৬টি অভিযোগের ভার্চুয়াল শুনানি ও এর মধ্যে ৩৪৩টি নিষ্পত্তি হয়েছে। আইনটি সম্পর্কে জনসচেতনতার জন্য তথ্য কমিশন এ পর্যন্ত ৬০ হাজার ৩০৯ জনকে প্রশিক্ষণ প্রদান করেছে। সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে সর্বমোট ৪২ হাজার ৫০৩ জন কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়েছে। ৬৮টি অভিযোগের ক্ষেত্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে ক্ষতিপূরণ, জরিমানা ও বিভাগীয় শাস্তি প্রদান করা হয়েছে।

টিএ/জেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর