শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

মিয়ানমার ইস্যু জাতিসংঘে গেলে সহায়তার আশ্বাস কূটনীতিকদের

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৫:১২ পিএম

শেয়ার করুন:

মিয়ানমার ইস্যু জাতিসংঘে গেলে সহায়তার আশ্বাস কূটনীতিকদের

গত কয়েকদিন ধরে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে পড়ছে মিয়ানমারের মর্টার সেল। এতে প্রাণহানির পাশাপাশি আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। বারবার মিয়ানমার রাষ্ট্রদূতকে ডেকে প্রতিবাদ জানালেও অবস্থার কোনো উন্নতি নেই। দেশটির এমন ধৃষ্টতা বন্ধে প্রয়োজনে জাতিসংঘে যাওয়ার কথা ভাবছে সরকার। মিয়ানমারের ইস্যু নিয়ে বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত জাতিসংঘে গেলে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা।

মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) কূটনীতিকদের ব্রিফিংয়ের পর সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব খুরশেদ আলম।


বিজ্ঞাপন


মিয়ানমার সীমান্তের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি ব্রিফ করতে মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) চীন-জাপান এবং পশ্চিমা দেশগুলোর কূটনীতিকদের ডাকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

এর আগে সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর আঞ্চলিক জোট আসিয়ানের কূটনীতিকদের ব্রিফ করা হয়।

রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় অনুষ্ঠিত মঙ্গলবারের বৈঠকে আমন্ত্রিত বেশিরভাগ দেশের কূটনীতিক হাজির হলেও ছিলেন না চীনের কোনো প্রতিনিধি।

ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব বলেন, বৈঠকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য দেশ, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, মিশর, তুরস্ক, জাপানসহ আরও কয়েকটি দেশের কূটনীতিকরা অংশ নেন। মিয়ানমারের উসকানিতে পা না দিয়ে বাংলাদেশ ধৈর্য পরীক্ষা দিয়ে যাচ্ছে এবং এই ইস্যুতে বাংলাদেশ জাতিসংঘে গেলে আমাদের উদ্যোগকে সহায়তা করার আশ্বাস দিয়েছেন রাষ্ট্রদূতরা।


বিজ্ঞাপন


খুরশেদ আলম বলেন, সীমান্তে অব্যাহত উসকানিতে মিয়ানমার যেন ফায়দা নিতে না পারে, এজন্য রাষ্ট্রদূতদের পরিস্থিতি অবহিত করেছে বাংলাদেশ। অভ্যন্তরীণ যে ধরনের গোলযোগই থাকুক না কেন, এ দেশের সীমানায় মিয়ানমারের গোলা, মর্টার শেল আসা অগ্রহণযোগ্য, এ বিষয়টিতে একমত হয়েছেন সব দেশের কূটনীতিকরা। তারা বলেছেন, তারা ঢাকার অবস্থান নিজেদের রাজধানীতে জানাবেন।

গত ১৬ সেপ্টেম্বর রাতে বান্দরবানের ঘুমধুম ঘোনারপাড়া সীমান্তে শূন্যরেখায় মিয়ানমার থেকে আসা মর্টারের গোলা বিস্ফোরণে মোহাম্মদ ইকবাল (২৮) নামে এক রোহিঙ্গা যুবক নিহত হন। আহত হন আরও অন্তত আটজন।

এই ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে গত ১৮ সেপ্টেম্বর দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত উ অং কিয়াউ মোকে তলব করা হয়।

তিনি এলে বাংলাদেশের প্রতিবাদপত্র দিয়ে বলা হয়, মিয়ানমার থেকে কোনো মর্টারের গোলা যেন আর বাংলাদেশের ভূখণ্ডে এসে না পড়ে।

burhan-2

এর আগে একই ধরনের ঘটনার কারণে ৪ সেপ্টেম্বর এবং ২১ ও ২৯ আগস্ট মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে প্রতিবাদ জানায় ঢাকা।

তবে মিয়ানমার বরাবরই এ ধরনের ঘটনার দায় চাপিয়ে আসছে সেখানে সংঘাতরত আরাকান আর্মি ও সশস্ত্র গোষ্ঠী আরসার ওপর। তাদের দাবি, বাংলাদেশের সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক নষ্ট করতে এ ধরনের হামলা চালানো হচ্ছে।

এদিকে বারবার এমন হামলার ঘটনায় সীমান্তের বাসিন্দাদের মধ্যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। সীমান্তের বাসিন্দাদের সরিয়ে নেয়ারও চিন্তা করা হচ্ছে সরকারের পক্ষ থেকে।

অন্যদিকে সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মঞ্জুরুল করিম খান চৌধুরীকে ডেকে নিয়ে মিয়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, বাংলাদেশের সঙ্গে বিদ্যমান সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক নষ্ট করতে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে চলছে।

আজকের বৈঠকের পর সীমান্তে পরিস্থিতি নিয়ে জানতে চাইলে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ওপারে গোলাগুলি এখনো থামেনি। মিয়ানমারে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে নেপিদো যে ব্যাখ্যা দিয়েছে সেটিও গ্রহণযোগ্য নয়।

বিইউ/এমআর

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর