শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

প্রতি ইভিএমে খরচ পৌনে চার লাখ টাকা

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১১:৩৬ এএম

শেয়ার করুন:

প্রতি ইভিএমে খরচ পৌনে চার লাখ টাকা
ফাইল ছবি

রাজনৈতিক বিতর্কের মধ্যেই ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। বিপুল অংকের এই প্রকল্পের আওতায় কেনা হবে দুই লাখ ইভিএম। এতে ভ্যাট ও ট্যাক্স ছাড়া প্রতি ইউনিট ইভিএমের খরচ ধরা হয়েছে তিন লাখ পাঁচ হাজার টাকা। আর ভ্যাট ও ট্যাক্স যুক্ত করলে খরচ প্রতি ইউনিটে প্রায় তিন লাখ ৬০ হাজার টাকা পড়বে বলে ইসি সূত্রে জানা গেছে। তবে ভ্যাট-ট্যাক্স ২৩ শতাংশ পর্যন্ত নেওয়া হলে ইভিএম প্রতি খরচ বেড়ে তিন লাখ ৭৬ হাজারে চলে যেতে পারে বলে জানা গেছে।

নির্বাচন কমিশনকে নতুন ইভিএম সরবরাহ করবে বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরি (বিএমটিএফ)।


বিজ্ঞাপন


ইভিএম কেনার বাইরে আট হাজার ৭১১ কেটি ৪৪ লাখ টাকার প্রকল্পের বাকি ব্যয় ধরা হয়েছে ইভিএম রক্ষণাবেক্ষণ, এগুলো পরিচালনার জন্য জনবল নিয়োগ ও দক্ষ করে গড়ে তুলতে প্রশিক্ষণ এবং গাড়ি কেনার জন্য।

প্রস্তাবিত মূল্য অনুযায়ী দুই লাখ ইভিএম কেনার জন্য ছয় হাজার ১০০ কোটি টাকার মতো ব্যয় হবে। ভ্যাট-ট্যাক্স যুক্ত হলে তা সাত হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।

নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, নতুন এ প্রকল্পে পড়তে ইউনিট ইভিএমের খরচ ধরা হয়েছে তিন লাখ পাঁচ হাজার টাকা। এর সাথে সরকারি হারে ভ্যাট ট্যাক্স যুক্ত হবে। এই দামে দুই লাখ ইভিএম কেনা হবে বলে জানান তিনি।

গতকাল সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) নির্বাচন ভবনে অনুষ্ঠিত ইসির মুলতবি কমিশন সভায় এই প্রকল্প গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়। সভায় অসুস্থতার কারণে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল


বিজ্ঞাপন


বৈঠক শেষে ইসি মো. আলমগীর জানান, নির্বাচন কমিশনের কাছে থাকা ইভিএম দিয়ে ৭০ থেকে ৭৫টি আসনে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন করা সম্ভব। সর্বোচ্চ দেড়শ আসনে নির্বাচন করতে নতুন করে দুই লাখের মতো ইভিএম কিনতে হবে। সেই প্রকল্প অনুমোদন দিয়ে তা পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানোর জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। এখন জনবলের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাজ আছে। পরে একনেক এটি চূড়ান্ত করবে।

গত জুলাইয়ে ইসির সংলাপে ২২টি রাজনৈতিক দল ইভিএম নিয়ে মতামত দিয়েছিল। এর মধ্যে নয়টি দল সরাসরি ইভিএমের বিপক্ষে মত দিয়েছে। আরও পাঁচটি দল ইভিএম নিয়ে সংশয় ও সন্দেহের কথা বলেছে। কেবল আওয়ামী লীগসহ চারটি দল ইভিএমে ভোট চেয়েছে।

যদিও ইসি বলছে, বেশিরভাগ দল ইভিএমের পক্ষে মতামত দেওয়ায় তারা ইভিএমে ভোট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, ইভিএম কেনা ছাড়াও একই প্রকল্পের আওতায় নির্বাচন কমিশনের দশটি আঞ্চলিক অঞ্চলে ১০টি ওয়্যারহাউজ (গুদামঘর) স্থাপন করা হবে। ইভিএম পরিবহনসহ দাফতরিক কাজে ব্যবহারে প্রতিটি উপজেলা নির্বাচন অফিসের অনুকূলে একটি করেসহ মোট ৫৩৪টি ডাবল কেবিন পিকআপ ভ্যান, চারটি পাজেরো জিপ, এক হাজার ৩০৫ জন জনবল নিয়োগ এবং সংশ্লিষ্টদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এসব খাতের খরচ ধরে পুরো প্রকল্পের আকার দাঁড়িয়েছে আট হাজার ৭১১ কেটি ৪৪ লাখ টাকা।

এর আগে একাদশ সংসদ নির্বাচনে ইভিএম কেনার জন্য কে এম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশনের কেনা ইভিএমে ভ্যাট-ট্যাক্সসহ খরচ হয়েছিল দুই লাখ ৩৪ হাজার টাকা। ডলারের দাম বাড়ায় এবার প্রতি ইভিএমে ১ থেকে দেড় লাখ টাকার মতো খরচ বাড়ছে বলে জানিয়েছেন ইসির কর্মকর্তারা।

প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রতিটি ইভিএমের তিনটি পার্ট আছে। এগুলো হলো কন্ট্রোল ইউনিট, ব্যালট ইউনিট ও ডিসপ্লে ইউনিট। এতে ভোটারের নিজেদের পরিচয় নিশ্চিত করতে আঙুলের ছাপ দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ডিসপ্লেতে ওই ভোটারের ছবিসহ যাবতীয় তথ্য চলে আসে। ব্যাটারির মাধ্যমে ইভিএম চলবে। চার্জ থাকবে ৪৮ ঘণ্টা।

ইভিএমের সঙ্গে বাইরের কোনো ইন্টারনেট বা এ ধরনের কোনো সংযোগ থাকবে না। ফলে এটি হ্যাক করার সুযোগ নেই বলে দাবি ইসির।

বিইউ/জেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর