‘আমি এখনো বাবাকে দেখিনি। আমার বাবা কোথায় আছে, তা-ও জানি না। বাবাকে ছাড়া আমার ভালো লাগে না। বাবাকে একটু আমি ছুঁয়ে দেখতে চাই। সরকারের কাছে একটাই দাবি আমার বাবাকে ফিরিয়ে দেন।’
এভাবেই বাবার খোঁজে দিশেহারা ছোট্ট সাদিকা সরকার সাফা আকুতি জানাচ্ছিলেন আন্তর্জাতিক গুম দিবসের অনুষ্ঠানে।
বিজ্ঞাপন
রাজধানীর বংশালের একটি স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী সাফার বাবা মো. সোহেল গত নয় বছর ধরে নিখোঁজ। তিনি বংশাল থানা ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি ছিলেন। ২০১৩ সালের ২ ডিসেম্বর শাহবাগ এলাকা থেকে তাকে কে বা কারা তুলে নিয়ে যায়। এরপর থেকে আর খোঁজ মেলেনি।
সময়ের পরিক্রমায় দিনে দিনে বড় হচ্ছে সাফা। বয়সের সঙ্গে ছোট্ট মেয়েটি অনুভব করছে বাবার অনুপস্থিতিও। তাই নিখোঁজদের নিয়ে যখনই কোনো আয়োজন হয়, তখনই গুঁটিপায়ে ছুটে আসে সাফাও।
বাবা মো. সোহেল যখন নিখোঁজ হন, তখন সাদিকা সরকার সাফার বয়স ছিল মাত্র তিন মাস। বর্তমানে তার বয়স ৯ বছর।
বিজ্ঞাপন
মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এই মানববন্ধনেই নয়, এর আগেও অনেক অনুষ্ঠানে বাবার খোঁজ চেয়ে কথা বলেছে সাফা। তবে এবার কান্নাভেজা বক্তব্য যেন ছুঁয়ে গেছে সবার মন। এ দিন মানববন্ধনে বসে থাকা বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ শীর্ষ নেতাদের অনেকের চোখই ভিজে যাচ্ছিল সাফার কথা শুনে।
ইতোমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে সাফার ছবি ও ভিডিও। যাতে দেখা যায়, ছোট্ট সাফার চোখ বেয়ে পানি পড়ছে। ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে আর বাবার খোঁজ চাইছে মেয়েটি। একইভাবে কাঁদতে দেখা গেছে, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকেও।
সাফা তার বক্তব্যে বাবাকে কাছে পাওয়ার আকুতি জানিয়ে আরও বলেন, ‘আমার বন্ধুদের সবার বাবা আছে। বাবার সঙ্গে তারা স্কুলে আসে। আমি কখনোই বাবাকে দেখিনি। বাবা ফিরে এলে তাঁর হাত ধরে স্কুলে যাব।’
বিইউ/আইএইচ