শুক্রবার, ১০ মে, ২০২৪, ঢাকা

আধুনিকায়নের ছোঁয়ায় জট খুলবে সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালের

দেলাওয়ার হোসাইন দোলন
প্রকাশিত: ২২ আগস্ট ২০২২, ০৭:২৫ এএম

শেয়ার করুন:

আধুনিকায়নের ছোঁয়ায় জট খুলবে সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালের

* দেশের প্রথম আধুনিক টার্মিনাল
* আগামী মার্চে উদ্বোধন 
* টোল আদায় হবে স্বয়ংক্রিয়ভাবে
* জট কমে বাড়বে আয় 
* আধুনিকায়ন ব্যয় প্রায় ৩৫ কোটি টাকা

দেশের পূর্বাঞ্চলের ১৮টি জেলার সড়কের নির্ভরযোগ্য যাতায়াত মাধ্যম সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল। এরই মধ্যে পদ্মা সেতুতে ঢাকার সাথে আরও প্রায় ১৯ জেলা যুক্ত হয়েছে। যাদের যাতায়াতের মাধ্যম এ টার্মিনাল। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশ (ডিএসসিসি) আওতাধীন রয়েছে টার্মিনালটি। বর্তমানে চাপ সামলাতে নানা সমস্যায় জর্জরিত টার্মিনালটি। অবহেলা, অপরচ্ছিন্ন পরিবেশ আর চাঁদাবাজদের দৌরাত্ম্যে এখানকার পরিবেশ করেছে বিঘ্ন। 


বিজ্ঞাপন


সে কারণে দূরপাল্লার বাসগুলো টার্মিনালকে গ্যারেজ হিসেবে ব্যবহার করে। পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের একাধিক কমিটির চাঁদাবাজদের সাথে চিহ্নিত সন্ত্রাসী, ছিনতাইকারী, মলমপার্টির আনাগোনাতো আছেই। যাদের ভয়ে মালিক, শ্রমিক এমনকি যাত্রীরাও থাকে আতঙ্কিত। অনিয়ম, বিশৃঙ্খলা আর অপরিচ্ছন্ন পরিবেশের কারণে ঐতিহ্যবাহী এই টার্মিনাল নিয়ে যাত্রীদের সাথে পরিবহন মালিকরাও বিরক্ত। যার মূলে সীমানা প্রাচীর না থাকাসহ নিরাপত্তাহীনতাই দায়ী।

এমন নানা সমস্যা অবসানে এরই মধ্যে উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। প্রায় ২১ বিঘা আয়তনের টার্মিনালটির সবকিছু নতুন করে সাজানো হচ্ছে। যার মাধ্যমে অধুনিকায়নের ছোঁয়ায় জট খুলবে সায়দাবাদ বাস টার্মিনাল এমনটাই বলছেন সংশ্লিষ্টরা। সীমানা প্রচীরের নির্ধারণের পাশাপাশি আসছে পুরো টার্মিনাল সিসি ক্যামেরার আওতায়। যেখানে সেবা মিলবে আন্তর্জাতিক মানের। পুরোদমে চলছে উন্নয়ন কাজ। কাউন্টারগুলো নতুনরূপে সাজানোর পাশাপাশি আন্তঃজেলা ও সিটি টার্মিনালকে আলাদা করে সংস্কার করা হচ্ছে। যত্রত্র পার্কিং বন্ধ সহ টোল আদায় হবে স্বয়ংক্রিয়ভাবে। যার মধ্যদিয়ে আয়ও বাড়বে সংস্থাটির। এমন আধুনিকায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৩৫ কোটি টাকা। নাগরিক জীবনে এ সেবা দিতে আগামী মার্চে উদ্বোধন করার কথা বলছে দক্ষিণ সিটি করপোরেশন।   

একনজরে যা থাকছে আধুনিক টার্মিনালে
টার্মিনালে আসা যাত্রীদের ব্যক্তিগত গাড়ি পার্কিং করার সুযোগ না থাকায় যত্রতত্র পাকিং করতে দেখা যায়। এ প্রকল্পের আওতায় থাকবে যাত্রীর গাড়ি পার্কিং এর সুবিধা। বেহাল অবস্থা সৃষ্টি হওয়া রাস্তাগুলোর সংষ্কার। প্রি-কাস্ট রোড ডিভাইডার। টোল বুথ নির্মাণ। টার্মিনাল সংষ্কার ও মেরামত।

bus


বিজ্ঞাপন


এছাড়াও থাকবে ওয়াসা পয়ঃলিফট স্টেশন সংলগ্ন রাস্তা মেরাতম। টার্মিনালের সীমানা প্রাচীর নির্মাণ। বাস শ্রমিকদের বিশ্রাম নেওয়ার জন্য থাকবে (টার্মিনালের) অভ্যন্তরীণ ডরমেটরি বিল্ডিং। কুমিল্লা টিকিট কাউন্টার নতুন করে নির্মাণ। চট্রগ্রাম টিকিট কাউন্টার ১ ও ২ এর সংষ্কার। নোয়াখালী টিকিট কাউন্টার সংষ্কার কাজ। দক্ষিণ বঙ্গের টিকিট কাউন্টার সংষ্কার কাজ। সিলেট টিকিট কাউন্টার সংষ্কার কাজসহ টার্মিনালে টয়লেট সংষ্কার।

সরেজমিনে কাজের অগ্রগতি, বাড়বে আয়
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) দাবি এরই মধ্যে প্রকল্পের ৪০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। সরেজমিন দেখা যায়, সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালের বিশাল এলাকা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে। নর্দমা নির্মাণ, সীমানা প্রাচীর, পাবলিক টয়লেট ও সিটি টার্মিনালের সংস্কার কাজ চলছে। এ ছাড়া কাউন্টারে যাত্রীদের আনা ও নেওয়ার পরিবহনের পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তৈরি করা হচ্ছে আধুনিক মানের ডরমেটরি। সিটি টার্মিনালের কাজ চলমান। সায়দাবাদ মূল ডিপোর সংষ্কার কাজ চলছে। টার্মিনাল বিল্ডিং মেরামত হচ্ছে। কুমিল্লা কাউন্টারের নতুন করে ডেকোরেটর করা হচ্ছে। ডর্মেটরির কাজ চলছে। ডিপোর কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে।

টানা ১৫ বছর নানা কারসাজি করে একই প্রতিষ্ঠানের কবজায় ছিলো সায়দাবাদ টার্মিনালের ইজারা। সবশেষ তারা ১ কোটি ৪২ লাখ টাকায় ইজারা নিয়েছিল। এক যুগেরে বেশি সময়ের  সিন্ডিকেট ভেঙ্গে গতবছর (২০২১ সালে) রাজধানীর সায়েদাবাদ আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল ইজারা দিয়ে প্রায় চারগুণ রাজস্ব পেয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। যেখানে সর্বোচ্চ পাঁচ কোটি ৩৬ লাখ টাকায় বাস টার্মিনালটির ইজারা পেয়েছে সেভেন-ইলেভেন ঢাকা লিমিটেড। বর্তমান পদ্ধতিতে আধুনিকায়নে টোল আদায় হবে সংক্রিয়। এর মাধ্যমে নতুন ব্যবস্থাপনায় টার্মিনালে শৃঙ্খলা ফিরে আসার পাশাপাশি বাড়বে সিটি করপোরেশনের আয়।

bus

যা বলছে ডিএসসিসি
উন্নয়ন কাজের সাথে সংশ্লিষ্টরা বলছেন-প্রতি বর্ষা মৌসুমে টার্মিনালের একটি অংশ বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে যায়। যে বিষয়টি প্রাধান্য দিয়ে নর্দমা সংস্কারসহ টার্মিনাল আধুনিকায়নের কাজ চলমান। এছাড়াও রাজধানীর গণপরিবহণের শৃঙ্খলা আনয়নের লক্ষ্যে ইতোমধ্যে বাসরুট রেশনালাইজেশনের কাজ শুরু হয়েছে। ওই কমিটির সভাপতি ডিএসসিসি মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। কমিটির পরিকল্পনা অনুযায়ী রাজধানীর ভেতর থেকে আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল সরিয়ে ফেলা হবে। সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালের আন্তঃজেলার বাসগুলো কাঁচপুরের নিকটস্থ টার্মিনালে স্থানান্তর করা হবে। তখন সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালটি সিটি টার্মিনাল হিসাবে ব্যবহৃত হবে। নির্ধারিত ব্যয়ের মধ্যে রয়েছে ম্যানুয়াল পদ্ধতির টোল আদায় বন্ধ করে স্বয়ংক্রিয় ভাবে টোল আদায় পদ্ধতি গড়ে তোলা। ৩০ কোটি টাকার বেশি ব্যয়ে আধুনিকায়নের কাজ চলছে। আর স্বয়ংক্রিয় টোল আদায় পদ্ধতি গড়ে তুলতে আরও এক কোটি টাকার কাজ করা হবে। সব মিলিয়ে নির্মাণ ব্যয় প্রায় ৩৫ কোটি টাকা।

প্রকল্পটির সাথে সংশ্লিষ্ট অঞ্চল-৫ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাইফুল ইসলাম জয় ঢাকা মেইলকে বলেন, পুরো সায়দাবাদ টার্মিনালে আগে নিরাপত্তারহীনতার একটা বিষয় ছিল। এখানে কোনো প্রকার প্রাচীর ছিলো না। মানুষ যে কোনো জায়গা গিয়ে প্রবেশ করতে পারত। এখানে মানুষকে কোনো দোষ দিচ্ছি না, কিন্তু কিছু দুষ্ট মানুষের জন্য যাত্রীসাধারণ উৎসাহ পেতেন না। এককথায় এটি ব্যবহার হয়ে আসছে বাস ডিপোতে। 

তিনি আরও বলেন, বর্তমানে নেওয়া উদ্যোগের মধ্য রয়েছে চারপাশে একটা বাউন্ডারি থাকবে। নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা থাকবে। আনসার থাকেন। আমাদের যে কন্টোলরুম আছে টার্মিনাল মেইন ভবনে। তার উপরে কন্টোল রুম থাকবে। পুরো এলাকা সিসি ক্যামেরার আওতায় থাকবে। হাঁটার পথ সহ যাত্রীরা তাদের মালামাল নিয়ে গণপরিবহন থেকে নেমে সরাসরি তার কাঙ্খিত টার্মিনালে যেতে পারে সে জন্য কন্টিনিউয়াস একটা হাঁটার পথ থাকবে। সেই সাথে থাকবে কাউন্টার নির্দেশিকা।

bus

এ প্রকৌশলী বলেন, আগের যে টার্মিনাল বিল্ডিং, যেমন: চট্টগ্রাম বিল্ডিং বা কাউন্টার সেগুলোকে সংষ্কার করা হচ্ছে। বর্তমানে যত্রতত্র পার্কিং হচ্ছে। হয়তো নির্ধারিত স্থানে ৩০ মিনিট বাস থাকার কথা তারা সরছে না। যাত্রীর জন্য দাঁড়িয়ে জট বাড়াচ্ছে। কিন্তু তখন সংক্রিয় ভাবে যে ৩০ বা ৬০ মিনিট নির্ধারণ কারা হবে, সেই নির্ধারিত সময় পর তাকে ছেড়ে যেতে হবে। কোনো বাস টার্মিনালে প্রবেশ করতে গেলেও তাকে অটোমেশনের আওতায় এসে প্রবেশ করতে হবে। যা এন্টি থাকবে। নিয়ম না মানলে জরিমানার আওতায় আসতে হবে। এছাড়াও যে বাস টার্মিনাল ছাড়বে, তাকে অবশ্যই ফ্লাইওভার দিয়ে বের হতে হবে। নির্ধারিত সময়ে ১ মিনিট দেরি করলেও জরিমানার আওতায় আসবে। টার্মিনালে কোনো বাস থাকতে পারবে না। বাস থাকবে ডিপোতে। 

সাইফুল ইসলাম জয় বলেন, ডিপো এলাকায় হবে একটা ডর্মেটরি। যেখানে বাস ড্রাইবার থেকে শুরু করে পরিবহন শ্রমিকরা ডিউটির পর বিশ্রাম করতে পারবে। সেখানে তাদের জন্য কেন্টিন থাকবে। পর্যাপ্ত গোসলখানা থাকবে। গাড়ি ওয়াশসহ ১০০ বাস থাকার মতো ডিপো থাকবে।

সেন্ট্রাল মনিটরিং পদ্ধতির আওতায় কোনো গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে কিনা বা নিয়ম ভাঙছে কিনা দেখা যাবে জানিয়ে জয় বলেন, এছাড়াও কোনো যাত্রী নিরাপত্তাহীনতায় আছে কিনা তাও দেখা যাবে। কন্ট্রোল রুমে সার্বক্ষণিক প্রতিনিধি থাকবেন। যেখানে অভিযোগ করার সুযোগ থাকবে। 

bus

টার্মিনাল এরিয়ার আগের চেয়ে বাড়বে জানিয়ে তিনি বলেন, বলতে গেলে পরিসর বাড়বে। কারণ- টার্মিনালের ঠিক সামনের দিকে থাকা পুলিশ ফাঁড়িটা স্থানান্তর করা হবে। সেখানে যাত্রীদের গাড়ি পার্কিং করার সুযোগ রাখা হবে। এছাড়াও এখান থেকে যাত্রীরা নিজেদের গন্তব্যে যেতে পারবেন নিজস্ব পরিবহনে। এছাড়াও সিটি করপোরেশনের যে কেন্দ্রীয় মটর গেরেজ ছিল- যেখানে ডিএসসিসির বর্জ্যর গাড়িসহ অন্যান্য গাড়িগুলো রাখা হত। এ জায়গাটা মেয়র টার্মিনালকে দিয়ে দিচ্ছে। সেই জায়গায় ডর্মেটরি এবং কার ওয়াশের ব্যবস্থা থাকবে। 

প্রকল্প নিয়ে যা বলছেন ডিএসসিসি মেয়র
২০২৩ সালের মার্চের মধ্যেই রাজধানীর সায়েদাবাদে আধুনিক বাস টার্মিনালের নির্মাণকাজ শেষ হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।

তাপস বলেন, এখানে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন বাস টার্মিনাল নির্মাণ করা হচ্ছে। আগামী বছরের মার্চের মধ্যে এটির কাজ হবে। বাস রুট রেশনিংয়ের কার্যক্রম শুরু করেছি। একটির যাত্রাপথ শুরু হয়েছে, আরও দুটির কার্যক্রম আগামী পহেলা সেপ্টেম্বর উদ্বোধন করব। এসব কার্যক্রম বেগবান করতে সায়দাবাদ বাস টার্মিনালকে আধুনিকায়ন নিজ অর্থায়নে শুরু করেছি। 

ফজলে নূর তাপস বলেন, সায়দাবাদ টার্মিনালে জলাবদ্ধতাসহ অবকাঠামো ভঙ্গুর ও খারাপ অবস্থায় ছিল। এজন্য বাস রুট রেশনালাইজেশনের মাধ্যমে ঢাকা শহরের গণপরিবহন যেন শৃঙ্খলাবদ্ধ করা যায় সেজন্য আমরা এই কার্যক্রম হাতে নিয়েছি।

tapash

এ প্রসঙ্গে ডিএসসিসি মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, সায়েদাবাদ আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালকে আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন টার্মিনালে রূপ দেওয়া হবে। সে লক্ষ্যে ৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে কাজ চলছে। কয়েকটি প্যাকেজে কাজগুলো বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এখন নর্দমা, সেন্ট্রাল ডিপো, স্টাফদের থাকার ব্যবস্থা, বাউন্ডারি ওয়াল, পুরনো স্থাপনা মেরামতসহ কয়েকটি কাজ চলছে।

তিনি বলেন, সায়দাবাদ বাস টার্মিনাল অনেক পুরোনো। দীর্ঘ দিনেও কোনো সংস্কার হয়নি। এখানে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। অবকাঠামো খারাপ অবস্থায় ছিল। জলাবদ্ধতা নিরসন চিন্তা থেকে সংস্কারকাজ শুরু করতে গিয়ে অন্যান্য বিষয়ও যুক্ত করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে আলাদাভাবে বাস রাখার ব্যবস্থা, শ্রমিকদের বিশ্রামের জায়গা, সাধারণ মানুষের জন্য শৌচাগারের ব্যবস্থা এবং যাত্রীরা যেন টার্মিনালের ভেতরে ঢুকে সেবা নিতে পারেন সে ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। এ ছাড়া আরও দুটি আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল নির্মাণ কার্যক্রম হাতে নিয়েছি। একটি কাঁচপুরে ও অপরটি কেরানীগঞ্জে। দুটির মধ্যে একটির জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে।

ডিএইচডি/এএস

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর