শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

বড় বোনের সঙ্গে প্রেমে ব্যর্থ, ছোট বোনকে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১৯ আগস্ট ২০২২, ০১:০৪ পিএম

শেয়ার করুন:

বড় বোনের সঙ্গে প্রেমে ব্যর্থ, ছোট বোনকে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি

সায়ের আলম পাভেল (৩৪)। নিজেকে কখনো বিবিএ, এমবিএ ডিগ্রীধারী কখনো বা ম্যাজিস্ট্রেটের ছেলে দাবি করত। তার ভাই লন্ডনের বড় ব্যবসায়ী। আসলে সে একজন রং মিস্ত্রি কর্মী।

পাভেল তেজগাঁও এলাকার একটি মেয়েকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে ব্যর্থ হয়। পরে সে তার প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ওইসব পরিচয় দিয়ে ১৪ বছরের এক কিশোরীকে অপহরণের পরিকল্পনা করতে থাকে। এক পর্যায়ে সেই কিশোরীকে বলে তার ভাই লন্ডনে থাকে। তার সাথে সে তাকে প্রেম করিয়ে দেবে। এ কথা বলে কিশোরীকে টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে নিয়ে যায়। এরপর মেয়ের মুদি দোকানি বাবাকে কল করে মুক্তিপণ দাবি করে। কিশোরীর বাবা পরে বিষয়টি তেজগাঁও থানা পুলিশকে জানালে অভিযান চালিয়ে সেই পাভেলসহ অপহরণকারী চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় পুলিশ। 


বিজ্ঞাপন


বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) রাতে তাদেরকে টাঙ্গাইল থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। তারা হলেন- সায়ের আলম পাভেল (৩৪), শেখ আলমগীর (২৩) ও জাহাঙ্গীর আলম (৩৫)।

শুক্রবার (১৯ আগস্ট) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের ডিসি এইচ এম আজিমুল হক।

আজিমুল হক বলেন, জাহাঙ্গীর তার বড় বোনকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে ব্যর্থ হয়। পরে সে তার ছোট বোনকে অপহরণ করে। মূলত মেয়েদের অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় তার কাজ ছিল। এর আগে তার বিরুদ্ধে একই অপরাধে দুটি মামলা রয়েছে। 

তিনি কিশোরীকে অপহরণ ও অপহরণকারীদের পরচয় তুলে ধরে জানান, শেখ আলমগীর (২৩) তেজগাঁও ট্রাক স্ট্যান্ডের রং মিস্ত্রির কাজ করে। রং মিস্ত্রির কাজের সুবাদে আলমগীর এর সাথে পাভেলের পরিচয়। আলমগীরের মাধ্যমে পাভেলের সাথে সুমি (ছদ্মনাম) এর বড় বোন সুমানার সাথে প্রেমের সম্পর্ক করার চেষ্টা করে। প্রেমে ব্যর্থ হয়ে এবং সুমানার বাবা মার কাছে অপমানিত হয়ে তাদেরকে উচিত শিক্ষা দেওয়ার জন্য পাভেল সুমানার ছোট বোন সুমির সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে এবং সুযোগের অপেক্ষায় থাকে। ১৪ আগস্ট সুযোগ বুঝে পাভেল সুমিকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ফুসলিয়ে নিয়ে তার বন্ধু জাহাঙ্গীর আলম (৩৫) এর ভাড়াটিয়া বাড়ি টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে নিয়ে যায়। পাভেলের স্ত্রী ও এক সন্তান থাকার বিষয়টি গোপন রেখে সুমিকে সে নিয়ে যায়।


বিজ্ঞাপন


এরপর কিশোরীর বাবা-মার কাছে অপমান হওয়ার প্রতিশোধ নেওয়ার অংশ হিসেবে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করে নতুবা মেয়েকে পতিতালয়ে পাচার করে দিবে বলে হুমকি দেয় পাভেল। এই কথা পুলিশকে জানালে মেয়েকে চিরতরে গুম করে দেওয়ার ভয় দেখায়। কিশোরীর বাবা ৩ দিন ভয়ের মধ্যে থাকার পর অবশেষে বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) বাবা তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার শরণাপন্ন হন ও থানায় মামলা করেন। এরপর তেজগাঁও পুলিশ অভিযান চালিয়ে অপহরণের শিকার সুমাকে উদ্ধারসহ তিন অপহরণকারীকে গ্রেফতার করে।

জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানিয়েছে, সুমানার বাবা-মার প্রতি আক্রোশ থেকেই তাদের কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায় করে কিশোরীকে কোনো পতিতালয়ে পাঠানো উদ্দেশ্যে ছিল। 

তেজগাঁও ডিসি বলেন, ইন্টারনেটের যুগে অভিভাবকদের তাদের ছেলে-মেয়েরা কোথায় যাচ্ছে, কাদের সাথে মিশছে এই সব বিষয়ে খেয়াল রাখার জন্য অনুরোধ করা হলো।

এমআইকে/এএস

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর