শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

অপেক্ষার দিন শেষ, জেলে পল্লিতে উৎসবের আমেজ

জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ২২ জুলাই ২০২২, ০৫:০৯ পিএম

শেয়ার করুন:

অপেক্ষার দিন শেষ, জেলে পল্লিতে উৎসবের আমেজ
ছবি: ঢাকা মেইল

আল্লাহ তায়ালা চাইলে এবার পরিবারের অভাব আর অনটন দূর হবেন। উপকূলের জেলে পল্লিতে গিয়ে এমন উৎসবের আমেজ দেখা গেছেন।

শুক্রবার (২২ জুলাই) শুক্রবার বিকেলে পাথরঘাটার জেলে পল্লিতে গেলে সেলিম মিয়া হাসি উজ্জ্বল মুখে ঢাকা মেইলকে এমনটাই বলেন, ট্রলার মেরামতের কাজ শেষ। এখন বাজার সদয় করব। আশা করছি এবার সাগরে ভালো মাছ পাবো। আর এবার পরিবারের অভাব-অনাটনও দূর হবে ইনশাআল্লাহ।


বিজ্ঞাপন


অপরদিকে জেলে মাহাতাব বলেন, আমাদের ট্রলারের মেরামত শেষ হয়েছে। এখন রঙয়ের কাজ বাকি। ২২ তারিখ ট্রলার খালে নামাব। 

দেশের উপকূলীয় অঞ্চলের জেলেরা এখন বেশ ব্যস্ত সময় পার করছেন। যেন দম ফেরানোর সুযোগ নেই। জেলে পল্লীগুলোতে উৎসবের আমেজে সমুদ্রযাত্রার  প্রস্তুতি চলছে।

বঙ্গোপসাগরে বিচরণরত সব ধরনের মাছসহ বিভিন্ন সামুদ্রিক প্রাণীর প্রজননের জন্য সরকারের দেয়া ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞার বাকি আর এক দিন। শনিবার (২৩ জুলাই) রাত ১২টার পরপরই মাছ ধরতে ফের সাগরে যাবেন জেলেরা।

ট্রলার মালিক সালাম মিয়া বলেন, অনেকেই এখন বরফ নেওয়ার জন্য ট্রলার নিয়ে খালে অপেক্ষা করছেন। কেউ কেউ ট্রলার মেরামত শেষে করছেন রঙয়ের কাজ। কেউ বুনছেন জাল। আবার কেউ কেউ শিশুদের সঙ্গে নিয়ে ট্রলারে উঠাচ্ছেন জাল। দীর্ঘদিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ায় সব মিলিয়ে মহাখুশি তারা।


বিজ্ঞাপন


সংশ্লিষ্ট জেলে, ট্রলার মালিক ও মৎস ব্যবসায়ীরা জানান, নিষেধাজ্ঞার কারণে এতদিন উপকূলে পড়েছিল মাছ ধরার ট্রলারগুলো। ফলে অনেক ট্রলারে পড়ে যায় মরিচা। তবে এবার সাগরে কাঙ্ক্ষিত মাছ ধরা পড়বে বলে আশা করছেন তারা।

বরগুনার ডকইয়ার্ডে দেখা যায়, অধিকাংশ ট্রলার মেরামত শেষে খালে অবস্থান করছে। অনেক ট্রলারে জেলেরা বাজার সদয়ের কাজে ব্যস্ত। কেউ কেউ ব্যস্ত ট্রলারে জাল, রশি ও প্রয়োজনীয় বিভিন্ন সামগ্রী তোলার কাজে।

জেলেরা জানান, গত মৌসুমের মতো এবারো ধরা পড়বে ঝাঁকে ঝাঁকে বড় বড় রূপালি ইলিশ। তা বিক্রি করে পরিবারে ফিরবে স্বাচ্ছন্দ্য। এমন স্বপ্ন নিয়ে সাগর যাত্রার অপেক্ষায় আছেন হাজার হাজার জেলে।

ট্রলার মালিক বাতেন বলেন, আমার সবগুলো ট্রলার মাছ ধরার জন্য সাগরে যেতে প্রস্তুত রয়েছে। সরকারের ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা সঠিক সিদ্ধান্ত ছিল। এ কারণে সাগরে মাছ বাড়বে। আশা করছি জেলেরা এখন বেশি মাছ নিয়ে ফিরবেন।

তবে বেশ কয়েকজন ট্রলার মালিক আক্ষেপ করে বলেন, কষ্ট করে নিষেধাজ্ঞার সব নিয়ম আমরা পালন করেছি। অথচ অনেকেই প্রশাসনকে ম্যানেজ করে সাগরে গিয়ে মাছ ধরেছে।

হরিণঘাটা এলাকার নুরুল আলম বলেন, দীর্ঘদিন আমার ট্রলার স্থলে পড়ে থাকায় ভাঙন ধরেছে। ট্রলার মেরামত শেষ করেছি। এখন সাগরে যাওয়ার অপেক্ষা।

বরগুনা জেলা ফিশিং ট্রলার শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক দুলাল মিয়া বলেন, ৬৫ দিন নিষেধাজ্ঞা থাকায় সাগরে যেতে পারেনি জেলেরা। অনেকে কোরবানিও দিতে পারেনি। পরিবার নিয়ে চলতে ফিরতে কষ্ট হয়েছে।

এ বিষয়ে বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, ৬৫ দিনের সরকারি নির্দেশনা মেনে কোনো ট্রলার সাগরে যেতে পারেনি। এখন ২৩ জুলাইয়ের অপেক্ষায় আছে সবাই।

উল্লেখ্য যে, সামুদ্রিক মাছের প্রজনন মৌসুম হওয়ায় প্রতিবারের মতো এ বছরও গত ২০ মে থেকে আগামী ২৩ জুলাই মধ্যরাত পর্যন্ত উপকূলীয় এলাকার ২০০ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত সব ধরনের মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা ছিলেন।

এজে

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর