বাংলাদেশ রেলওয়ের ‘অনিয়ম ও দুর্নীতির’ বিরুদ্ধে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। গত ৭ জুলাই থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন রনি একা এই আন্দোলন শুরু করলেও ধীরে ধীরে তার সঙ্গে যোগ দেন সহপাঠীরা। এরই ধারাবাহিকতায় মিছিল নিয়ে কমলাপুর রেলস্টেশনে প্রবেশের চেষ্টা করেছেন বিক্ষোভকারীরা।
বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) বিকেল পৌনে ৫টার দিকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশনের গেট থেকে মিছিল নিয়ে স্টেশনের ভেতরে প্রবেশ করতে গেলে আন্দোলনকারীদের বাধা দেয় পুলিশ ও রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর (আরএনবি) সদস্যরা।
বিজ্ঞাপন
এ সময় শিক্ষার্থীরা স্টেশনের টিকেট কাউন্টারের সামনে অবস্থান নিয়ে রেলওয়ের দুর্নীতির বিরুদ্ধে নানা স্লোগান দিতে থাকেন। সেই সঙ্গে গানে গানেও তারা দুর্নীতির প্রতিবাদ করেন।
এ বিষয়ে আন্দোলনের সমন্বয়ক মহিউদ্দিন রনি ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘টিকিট কাটতে যাত্রী হয়রানী কালোবাজারি বন্ধসহ ছয় দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে। আগামীকাল (শুক্রবার) থেকে দেশের সব স্টেশনে শিক্ষার্থীরা আন্দোলান করবে। কেউ না এগিয়ে আসলে আমি একাই আন্দোলন চালিয়ে যাব।’

এর আগে গতকাল বুধবার (২০ জুলাই) ঢাবি শিক্ষার্থী রনির অভিযোগের ভিত্তিতে টিকিট কাটতে অনিয়মের প্রমাণ পাওয়ায় সহজ ডটকমকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করেছে ভোক্তা অধিকার অধিদফতর। তার আগের দিন রেলওয়ের অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতি নিরসনে ৬ দফা দাবিতে রেল ভবনে স্মারকলিপি দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মহিউদ্দিন রনি। মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) বেলা সাড়ে ৩টার দিকে রেলের মহাপরিচালক ধীরেন্দ্র নাথ মজুমদারকে ওই স্মারকলিপি দেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
উল্লেখ্য, রেলওয়ের অব্যবস্থাপনা দূর করার দাবি-সংবলিত প্ল্যাকার্ড হাতে কমলাপুর স্টেশনে গত ৭ জুলাই থেকে টানা ১২ দিন অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন মহিউদ্দিন রনি।
এরই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি রাজধানীর কমলাপুর রেল স্টেশনের বাইরে প্রধান সড়ক থেকে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রেল ভবনের দিকে লংমার্চ শুরু করেন তিনি। পরে টিএসসি হয়ে রেল ভবনে যান ঢাবির এই শিক্ষার্থী। এরপর আবারও টিএসসিতে আসেন এবং সেখানে সমাবেশ করেন। এ সময় তার সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরাও যোগ দেন। আন্দোলনকারীদের দাবিগুলো হলো-
- টিকিট ক্রয়ের ক্ষেত্রে সহজ.কম কর্তৃক যাত্রী হয়রানি অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। পাশাপাশি হয়রানির ঘটনায় তদন্ত-পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
- যথোপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে টিকিট কালোবাজারি প্রতিরোধ করতে হবে।
- অনলাইন-অফলাইন উভয় ক্ষেত্রেই টিকিট ক্রয়ের ক্ষেত্রে সর্বসাধারণের সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।
- যাত্রী চাহিদার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ট্রেনের সংখ্যা বৃদ্ধিসহ রেলের অবকাঠামো উন্নয়নে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।
- ট্রেনের টিকিট পরীক্ষক ও তত্ত্বাবধায়কসহ দায়িত্বশীলদের কর্মকাণ্ড সার্বক্ষণিক মনিটর ছাড়াও শক্তিশালী তথ্য সরবরাহ ব্যবস্থা গড়ে তোলার মাধ্যমে রেল সেবার মান বৃদ্ধি করতে হবে।
- ট্রেনে ন্যায্য দামে খাবার বিক্রি, বিনামূল্যে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ ও স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
টিএই/আইএইচ

