আইনের তোয়াক্কা না করে মহাসড়কে উঠে যাচ্ছে তিন চাকার নিষিদ্ধ যান। যাত্রী বহন করে বড় গাড়ির সাথে পাল্লা দিয়ে ধাপিয়ে বেড়াচ্ছে মহাসড়ক। এতে করে এক দিকে যেমন আইনের ব্যতয় ঘটাচ্ছে তেমনটি দুর্ঘটনার আশঙ্কা বাড়াচ্ছে কয়েকগুণ। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক ঘুরে তিন চাকার যানের আধিপত্য দেখা গেছে।
শনিবার (১৬ জুলাই) সকাল ৯টায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের মাওনা চৌরাস্তা থেকে গাজীপুর চৌরাস্তা পর্যন্ত দেখা গেলো মহাসড়ক দাপিয়ে বেড়াচ্ছে তিন চাকার নিষিদ্ধ যান। কোথাও কোথাও দেখা গেলো যাত্রী নেওয়া বা উঠা নামা করার কারণে পেছনে থাকা বড় গাড়ি ওভারটেক করতে বিড়ম্বনার দৃশ্যই দেখা যায়। শুক্রবার (১৫ জুলাই) ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের চন্দ্রা থেকে গোরাই পর্যন্ত মহাসড়কে দেখা গেছে নিষিদ্ধ যানের দাপট।
বিজ্ঞাপন
দুর্ঘটনা বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে ২০১৫ সালের আগাস্ট মাসে দেশের ২২টি মহাসড়কে তিন চাকার যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দেয় সরকার। এরপর হাইকোর্ট ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে দেশের সব প্রধান মহাসড়কে তিন চাকার যান না চালানোর আদেশ দিয়ে সেই নিষেধাজ্ঞা আরও জোরদার করেন। সর্বশেষ গত ৪ এপ্রিল এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে সর্বোচ্চ আদালত এক আদেশে বলেন, ব্যাটারিচালিত তিন চাকার যান মহাসড়কে উঠতে পারবে না। তিন চাকার যানের কারণে দেশে সড়ক দুর্ঘটনা বাড়ছে।
বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের (এআরআই) তথ্য বলছে, দিন দিন পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ হয়ে উঠছে যে তিন চাকার যানবাহনের দুর্ঘটনার সংখ্যা ২০২০ সালের তুলনায় ২০২১ সালে তিন গুণ বেড়েছে।

বুয়েটের দুর্ঘটনা গবেষণা কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালে দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হওয়া যাত্রীদের মধ্যে ৩১০ জন ছিলেন বিভিন্ন ধরনের তিন চাকার বাহনের চালক ও যাত্রী। এত কিছুর পরও মহাসড়কে তিন চাকার যান চলাচল বন্ধ করা যায়নি বরং সুযোগ সন্ধানী চালকরা কখনো পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে কখনো অসাধু কর্মকর্তাদের ‘ম্যানেজ’ করে উঠে মহাসড়কে। যদিও বিভিন্ন হাইওয়ে থানার যোগাযোগ করে জানা গেছে তাদের নিয়মিত টহল কার্যক্রম চলছে, মামলাও দেওয়ার কথা বলেছেন কর্মকর্তারা।
বিজ্ঞাপন
সরজেমিনে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে দেখা গেছে সিএনজি, নসিমন, করিমন, ব্যাটারিচালিত রিকশার রাজত্ব। কখনো কখনো তিন চাকার সিএনজি, নসিমন দূরপাল্লার বাসের সাথে পাল্লা দিয়ে চলছে। বড় গাড়িকে সামনে যাওয়ার জন্য জায়গাও দিচ্ছে না। অথচ পেছনে থাকা বাস বার বার হর্ন বাজিয়ে যাচ্ছে। মাওনা চৌরাস্তায় দেখা যায়, বাস স্ট্যান্ডে সিএনজি গাজীপুর চৌরাস্তা, রাজেন্দ্রপুর যাওয়ার জন্য যাত্রী উঠাচ্ছেন।
মহাসড়কে যেতে দেয় কিনা জানতে চাইলে সিএনজি চালক আসলাম মিয়া বলেন, ‘যাবেন কিনা উঠেন। নেওয়ার দায়িত্ব আমার। পুলিশ-টুলিশ কোনো বিষয় না মিয়া। কয়ডা ট্যাহা লাগলে দিমু। এখন ঈদের মৌসুম মানুষ গাড়ি পায় না, এখনইতো কয়টা টাহা কামামো।’
ঈদের ছুটি শেষে ঢাকা ফেরা মানুষগুলো যারা রাস্তা থেকে উঠতে চায় দীর্ঘক্ষণ গাড়ি না পেয়ে এসব যানে চেপে বসেন। আবার স্বল্প দূরত্বে ঈদের সময় যাত্রী উঠায় না দূরপাল্লার বাসগুলো। এই সুযোগে তিন চাকার যানগুলোর দৌরাত্ম্য বেড়ে যায়। রাজেন্দ্রপুর চৌরাস্তা, সালনা এলাকায় দেখা যায় বাসস্ট্যান্ডে একের পর এক তিন চাকার বিভিন্ন যান এসে ভিড় জমিয়ে যাত্রী উঠাতে। এতে করে বড় বাসগুলো এসে আর চেপে দাঁড়ানোর জায়গা পাচ্ছে না ফলে মহাসড়কের একপাশ জুড়ে যানজট লেগে যায়।
সালনা থেকে গাজীপুর চৌরাস্তাগামী সিএনজি চালক আতর আলী বলেন, সবসময় চালাই না। মাঝে মধ্যে পুলিশে বেশি জ্বালাইলে তখন বন্ধ রাখি। তবে এখন অনেকেই মহাসড়কে চালায় কোনো উৎসব আসলে একটু বেশি চলে।

মহাসড়কে তিন চাকার যান ঝুঁকিপূর্ণ কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, না আমাদের গাড়ি আমরা এক সাইড দিয়া যাই। কোনো ঝুঁকি না।
অবশ্য অন্যান্য নসিমন করিমনে কোনো চালক এটাকে ঝুঁকিপূর্ণ মনে করেন। তবে যাত্রীরা ঝুঁকিপূর্ণ জেনেও চেপে বসছেন এসব যানে।
গত ৭ জুলাই মহাসড়কসহ সব আন্তঃজেলা সড়কে তিন চাকার যানবাহন চলাচল বন্ধের দাবি জানায় নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটি।
এক বিবৃতিতে সংগঠনটি জানান, মহাসড়ক ও দূরপাল্লার আন্তঃজেলা সড়কে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাসহ তিন চাকার সব ধরনের গাড়িসহ ইঞ্জিনচালিত নসিমন, করিমন, ভটভটি ও আলম সাধুর মতো স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ হলেও সারাদেশেই এ ধরনের শত শত বাহন চলছে। এসব যানবাহন মহাসড়কে বাসসহ অন্য যাত্রীবাহী গাড়ির গতি কমিয়ে দিয়ে যানজটের সৃষ্টি করে। অন্যদিকে এগুলোর কারণে দুর্ঘটনার ঝুঁকিও বাড়ে। তাই জরুরি ভিত্তিতে দুর্ঘটনাপ্রবণ এসব গাড়ি চলাচল বন্ধে প্রশাসনকে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানায় এ সংগঠন।
সালনা থেকে চৌরাস্তাগামি আব্দুল ওয়াহিদুজ্জামান একটি সিএনজিতে উঠেছেন। জানতে চাইলে ঢাকা মেইলকে বলেন, সিএনজি একটু গতিতে যেতে পারে। ব্যাটারির যানবাহন বেশি ঝুঁকিপূর্ণ তবে সিএনজিতেও ঝুঁকি থাকে। তিনি বলেন, আমার উপায় নেই। আধাঘণ্টায় কোনো বাস নিতে চায়নি, বাধ্য হয়ে উঠলাম, ভাড়াও বেশি।
পোড়াবাড়ি থেকে মাওনা যেতে ঝুঁকিপূর্ণ যানে উঠেন সাত্তার মিয়া ও তার পরিবার। সাত্তার মিয়া বলেন, অন্য সময় গাড়ি পাই ঈদের সময় কষ্ট হয়। তাই এসব ছোট ছোট গাড়িই ভরসা। এতে পরিবারের নিরাপত্তার বিষয়ে পশ্ন করলে তিনি বলেন, আসলে ওইভাবে ভাবি নাই। কিছু সময়ের ব্যাপার তাই উঠে পড়েছি।
ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কেও দেখা গেছে হরহামেশাই চলাচল করতে এসকল নিষিদ্ধ যানবাহন। এসড়কে চলা যানবাহনের একাধিক চালকের যাথে কথা বলে জানা গেছে, কেউ কেউ মামলা খেয়েছেন চলাচল করতে গিয়ে তবে অতিরিক্ত আয়ের আশায় বারবার উঠেন মহাসড়কে। কখনো পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে কখনো টহল পুলিশের কিছু সদস্যদের ম্যানেজ করে।
গোড়াই থেকে চলাচল করা চালক আমিনুল ইসলাম বলেন, লোকাল যাত্রীর চেয়ে মহাসড়কে যাত্রী বেশি থাকে। কখনো পুলিশ ধরলে মামলা দেয় কখনো কিছু নিয়ে ছেড়ে দেয়। তিনি বলেন, আসলে সংসারে খরচ বেশি, আয়ওতো দরকার। ঢাকা-ময়মনসিংহ, ঢাকা-টাঙ্গাইল ও টঙ্গী-ঘোড়াশাল-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কে নিত্য যানজট ও দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে তিন চাকার যানবাহন।
দূরপাল্লার বাসচালকরা বলছেন, তিনচাকার চালকদের অদক্ষ, ধীর গতি, ভারসাম্যহীনতা মহাসড়কে চলা ঝুঁকিপূর্ণ। এদের নিয়ন্ত্রণ খুব জরুরি, আইনের বাস্তবায়ন কঠোর হওয়া দরকার। সৌখিন বাসের চালক বলেন, আমরা বড় গাড়িতে একটি নিয়মে চলি। এরা সাইড দেয় না। সিগন্যাল বুঝে না। এতে করে দুর্ঘটনার শঙ্কাতো থাকেই।
ইমাম পরিবহনের চালক মাজেদুল বলেন, এসকল ধীর গতির গাড়ি আমাদের সাথে পাল্লা দেয়। আইন আছে এর কঠোর বাস্তবায়ন দরকার। গাজীপুর চৌরাস্তা থেকে ময়মনসিংহ পর্যন্ত এই ছোট গাড়িগুলো খুব যন্ত্রণা দেয়।
সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে কাজ করেন বুয়েটের অধ্যাপক ও গণপরিবহন বিশেষজ্ঞ ড. শামসুল হক বলেছেন, রেজিস্ট্রেশনবিহীন যেসব গাড়ি যেমন ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, নছিমন, করিমন সেগুলোর বিষয়ে করণীয় নিয়ে কেউ ভাবছেন বলে মনে হচ্ছে না। সারাদেশে শুধু ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাই আছে ১৫ লাখের বেশি। স্থানীয় পর্যায়ের এসব গাড়ি নিয়ে আমরা খুব ঝুঁকির মধ্যে আছি। প্রতিদিনই এসব গাড়ির জন্য সড়কে দুর্ঘটনায় ঝরছে প্রাণ। এসব গাড়ির চালকের গাড়ি চালানোর কোনো দক্ষতাই নেই। নেই গাড়ির কোনো নিবন্ধনও। বিআরটিএ এসব গাড়ির বিষয়ে এখনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না কেন বুঝি না। মহাসড়কে ধীরগতির এসব ঝুঁকিপূর্ণ যানবাহন দুর্ঘটনার বড় কারণ। মহাসড়ক সব সময় অবারিত থাকা উচিত। এসব ছোট গাড়ির জন্য আলাদা লেন করতে পারলে সুফল পাওয়া যাবে বলে মত তার।
গাজীপুর রিজিয়নের হাইওয়ে পুলিশ বিভাগের এক কর্মকর্তা ঢাকা মেইলকে জানান, পুলিশের নিয়মিত অভিযান অব্যাহত আছে। এসব যানবাহনের বিরুদ্ধে তারা মামলা, জরিমানা করেন। জরিমানা দিয়ে আবার তারা সড়কে নামে। পুলিশের নিয়মিত টহল কার্যক্রম চলে বলেও জানান ওই কর্মকর্তা।
সালনা হাইওয়ে থানা, মাওনা হাইওয়ে থানা, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহসড়কের গোরাই থানা সূত্রে জানা গেছে, সড়কে ঈদে ব্যস্ততা বাড়ে। এই সুযোগ নেয় অনেক সময়। তবে পুলিশের নিয়মিত টহল চলে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা দিক নির্দেশনাও দেন বলে জানা গেছে।
ঢাকা-চট্টগ্রাম এই মহাসড়কের কুমিল্লার বিভিন্ন অংশে তিনচাকার যান চলাচলের তথ্য জানা গেছে। মহাসড়কের চৌদ্দগ্রাম বাজার এলাকায় মহাসড়কের ওপরেই সারি সারি সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা দাঁড়িয়ে থাকে। এসব তিন চাকার যানবাহনের চালকরা ডেকে ডেকে যাত্রী তুলেন বিভিন্ন গন্তব্যের। এরপর মহাসড়ক হয়েই এসব যানবাহন চলাচল করছে বিভিন্ন স্থানে।
দেখা গেছে, ঢাকা ও চট্টগ্রামগামী মহাসড়কের দুটি লেনই অবৈধ তিন চাকার যানবাহনের দখলে থাকে। এ কারণে যানজটের পাশাপাশি দুর্ঘটনাও ঘটে। চৌদ্দগ্রামের মিয়াবাজার, সদর দক্ষিণ উপজেলার সুয়াগাজি, পদুয়ার বাজার, কুমিল্লা সদরের আলেখারচর বিশ্বরোড, সেনানিবাস এলাকা, বুড়িচংয়ের নিমসার, চান্দিনা বাসস্ট্যান্ড, দাউদকান্দির ইলিয়টগঞ্জ, গৌরীপুর, বলদাখাল, শহীদনগর এলাকায়ও অবাধে তিন চাকার যানবাহন চলাচল করে।

ময়নামতী হাইওয়ে থানার ওসি বেলাল উদ্দিন জাহাঙ্গীর বলেছেন, আগের চেয়ে হাইওয়ে পুলিশের বেশি সদস্য মহাসড়কে তৎপর রয়েছে। কোথাও এসব তিন চাকার যানবাহনকে মহাসড়কে উঠতে দেওয়া হচ্ছে না। এসব যানবাহনের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত আছে।
এদিকে, ঢাকা-আরিচা মহাসড়কেও দাপিয়ে বেড়ায় এসব নিষিদ্ধ যানবাহন। ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের বারবাড়িয়া থেকে আরিচা ঘাট পর্যন্ত প্রায় ৩০ কিলোমিটার অংশ পড়েছে মানিকগঞ্জ জেলায়। যদিও মানিকগঞ্জের গোলড়া হাইওয়ে থানার সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে এখন পর্যন্ত তিন চাকার যান চলাচলের জন্য আলাদা লেন নির্মাণ করা হয়নি। নিষেধাজ্ঞা থাকলেও এ কারণেই তিন চাকার যানবাহন মহাসড়কে ওঠে। এদের বিরুদ্ধে মামলা বা জরিমানা করেও ঠেকানো যাচ্ছে না।
সিরাজগঞ্জের মহাসড়কে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে নছিমন, করিমন, ভটভটি নামে পরিচিত ব্যাটারিচালিত বিভিন্ন ধরনের অটোরিকশা ও অটোভ্যান। হাইওয়ে পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে ঠিকই চলছে এসব যানবাহন। হাটিকুমরুল গোলচত্বর মহাসড়ক এলাকায় নছিমন ও সিএনজি’র চালকরা জানিয়েছেন, সরকারের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও জীবিকার তাগিদে পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই মহাসড়কে চলাচল করতে হয়।
হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লুৎফর রহমান জানান, মহাসড়কে তিন চাকার গাড়ি যেন না উঠতে পারে সেজন্য আমাদের টহল পুলিশ রয়েছে। তারা নিয়মিত টহলও দিচ্ছেন। এরমধ্যে এই যানগুলো উঠে। গত মাসেও ১৮৯টি তিন চাকার গাড়ি ধরে মামলা দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও যোগ করেন, টহল পুলিশকে মহাসড়ক জুড়ে টহল দিতে হয়। এ কারণে যখন এক জায়গা থেকে অন্য জায়গা যখন চলে যায় তখন সুযোগটা নেয় অনেকে, মহাসড়কে উঠে আসে।
বুয়েটের দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক হাদিউজ্জামান মনে করেন, সড়ক পরিকল্পনায় অনেকটা ঘাটতি আছে। সড়ক প্রকল্পগুলো যখন বাস্তবায়ন হয় তখন কিন্তু পাশে যে সিঙ্গেল ছোট সড়ক থাকে সেটার প্রতি কারো খেয়াল থাকে না।
তিনি বলেন, স্থানীয়ভাবে তিন চাকার বাহনগুলো তৈরি হয় বলে এগুলোর ভারসাম্য খুবই নাজুক। ব্রেকও ভালো না। এই গাড়িগুলো এমনিতেই ঢালু সড়ক বা মোড় ঘোরানোর সময় উল্টে যেতে পারে। বড় গাড়ির সঙ্গে ধাক্কা লাগার পর এসব বাহনের যাত্রী ও চালকদের হতাহতের হার খুবই বেশি। আবার এসব গাড়ির চালকদের প্রশিক্ষণেরও কোনো ব্যবস্থা নেই।
হাদিউজ্জামান বলেন, স্থানীয় মানুষদের স্বল্প দূরত্বে যাতায়াতের প্রয়োজনে এসব বাহন জনপ্রিয় হয়েছে। ফলে রাতারাতি এসব বন্ধ করা যাবে না। বিকল্প রাস্তার ব্যবস্থা না করে আইন করে কখনোই এসব যানবাহন বন্ধ করা সম্ভব নয় বলে মনে করেন তিনি।
সংশ্লিষ্টরা মনে করেন সরকার যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল এরপর কয়েক বছর এসব ছোট যানে দুর্ঘটনা কমতে থাকে। আবার এদের দাপট বাড়ছে। এজন্য প্রয়োজন সুষ্ঠু পরিকল্পনা। অনেকেই জীবন জীবীকা ঠিক রেখে দুর্ঘটনা কমাতে আলাদা লেনের কথাও বলছেন।
ডব্লিউএইচ/এএস

