রোববার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

তামাক নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশ অনুমোদনে সরকারকে স্বাগত বিএটিটিপির

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৩:৪৯ পিএম

শেয়ার করুন:

তামাক নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশ অনুমোদনে সরকারকে স্বাগত বিএটিটিপির

বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনকে আরও শক্তিশালী করতে সরকারের গৃহীত ‘ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ অনুমোদনের পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে বাংলাদেশ নেটওয়ার্ক ফর টোব্যাকো ট্যাক্স পলিসি (বিএটিটিপি)। জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় এই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ায় সরকারের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করেছে সংগঠনটি। সম্প্রতি বিএটিটিপির পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা  জানানো হয়।
 
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দীর্ঘ এক যুগ পর গৃহীত সরকারের এই উদ্যোগ দেশে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা জোরদার করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। একই সঙ্গে শিশু-কিশোর ও তরুণ প্রজন্মকে তামাকের ভয়াবহ আগ্রাসন থেকে রক্ষায় এটি কার্যকর পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হবে। বিশেষ করে ই-সিগারেট, হিটেড টোব্যাকো প্রডাক্টসহ নতুন প্রজন্মের তামাক ও নিকোটিন পণ্যের উৎপাদন, বিপণন ও ব্যবহার নিষিদ্ধ করার প্রস্তাবকে জনস্বাস্থ্য রক্ষায় যুগান্তকারী, সাহসী ও সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত বলে উল্লেখ করেছে বিএটিটিপি।
 
সংগঠনটি জানায়, অনুমোদিত অধ্যাদেশে সব পাবলিক প্লেস ও গণপরিবহনে ধূমপানসহ সব ধরনের তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পাশাপাশি তামাকজাত দ্রব্যের সব ধরনের বিজ্ঞাপন, প্রচার ও প্রদর্শন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তামাকজাত দ্রব্যের মোড়কে স্বাস্থ্য সতর্কবার্তার পরিসর ৭৫ শতাংশে উন্নীত করা এবং নিকোটিন পাউচসহ নতুন পণ্যকে তামাকজাত দ্রব্যের সংজ্ঞার আওতায় আনার সিদ্ধান্তগুলো জনস্বার্থে অত্যন্ত ইতিবাচক বলে মনে করে বিএটিটিপি।
 
তবে প্রস্তাবিত খসড়া অধ্যাদেশ থেকে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বাদ পড়ায় উদ্বেগও প্রকাশ করেছে সংগঠনটি। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, খুচরা শলাকা বিক্রি নিষিদ্ধকরণ এবং তামাকজাত দ্রব্যের বিক্রেতাদের লাইসেন্সিং বা নিবন্ধন ব্যবস্থা তামাক নিয়ন্ত্রণে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ও কার্যকর পদ্ধতি। খসড়া অধ্যাদেশে এসব বিধান অন্তর্ভুক্ত থাকলেও উপদেষ্টা পরিষদ কর্তৃক অনুমোদিত অধ্যাদেশে তা রাখা হয়নি। এর ফলে শিশু-কিশোর ও স্বল্প আয়ের মানুষের কাছে তামাকজাত দ্রব্য সহজলভ্য থেকে যাচ্ছে, যা তামাক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষার লক্ষ্যকে পিছিয়ে দিচ্ছে এবং সরকারের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের অগ্রগতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে বলে মন্তব্য করা হয়।

বিএটিটিপির প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, তামাক কোম্পানির কর ফাঁকি, অবৈধ বাণিজ্য এবং অপ্রাপ্ত বয়স্কদের কাছে তামাক বিক্রি রোধে বিক্রেতা নিবন্ধন ও খুচরা শলাকা বিক্রি নিষিদ্ধকরণ অবিলম্বে বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন। এ বিষয়ে সরকার দ্রুত পরিপূরক আইনগত ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে তারা আশা প্রকাশ করেছে।
 
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দেশে প্রতি বছর তামাকজনিত রোগে এক লাখ ৬১ হাজারের বেশি মানুষ মারা যায়। তামাক ব্যবহারের কারণে স্বাস্থ্য ব্যয়, পরিবেশগত ক্ষতি ও উৎপাদনশীলতা হ্রাসসহ দেশের অর্থনীতিতে বছরে সাতাশি হাজার কোটি টাকারও বেশি আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে। এই প্রেক্ষাপটে সরকার গৃহীত সংশোধন অধ্যাদেশটি একটি তামাকমুক্ত ও সুস্থ ভবিষ্যৎ গড়ার পথে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে মন্তব্য করেছে বিএটিটিপি।
 
তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার আন্দোলনে সরকারের পাশাপাশি রাজনৈতিক নেতৃত্ব, গণমাধ্যম, নাগরিক সমাজ ও তরুণ প্রজন্মকে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।
 
এএইচ/ক.ম 

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর