রোববার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

‘ইমামরা দয়া নয়, ন্যায্য অধিকার চায়’

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ০১:১১ পিএম

শেয়ার করুন:

‘ইমামরা দয়া নয়, ন্যায্য অধিকার চায়’

জাতীয় ইমাম সমাজ বাংলাদেশের সভাপতি শাইখুল হাদীস মুফতি আব্দুল হাফিজ বলেছেন, ইমামরা দয়া বা করুণা নয়, তাদের ন্যায্য অধিকার ও মানবিক মর্যাদা চায়। ইমাম ও খতিবরা কেবল নামাজের ইমাম নন, তারা সমাজ ও রাষ্ট্রের নৈতিক মেরুদণ্ড। অথচ আজ এই ইমাম সমাজই সবচেয়ে বেশি অবহেলা ও বঞ্চনার শিকার।

রোববার (২৮ ডিসেম্বর) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত জাতীয় ইমাম সমাজ বাংলাদেশের এক সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।


বিজ্ঞাপন


মুফতি আব্দুল হাফিজ বলেন, এ দেশের প্রতিটি সংকটে—ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ ও জাতীয় দুর্যোগে—ইমাম ও খতিবরা মানুষের পাশে থেকে সাহস যুগিয়েছেন। মসজিদ ও মকতবের মাধ্যমেই একসময় এ দেশের মানুষ শিক্ষার আলো পেয়েছে। জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত মানুষের জীবনের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে ইমামরা নিঃস্বার্থভাবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।

তিনি আরও বলেন, বর্তমান বাস্তবতায় একজন উচ্চশিক্ষিত ও অভিজ্ঞ ইমামকে অনেক ক্ষেত্রে সামান্য বেতনভুক্ত কর্মচারীর মতো আচরণের শিকার হতে হচ্ছে। চাকরির কোনো নিরাপত্তা নেই, নেই আইনি সুরক্ষা। তুচ্ছ অজুহাতে ইমামদের অপসারণ করা হয়, মিম্বরের কণ্ঠ রুদ্ধ করার চেষ্টা করা হয়।

অর্থনৈতিক বঞ্চনার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, আকাশচুম্বী দ্রব্যমূল্যের এই বাজারে ইমামদের যে সম্মানী দেওয়া হয়, তা অপমানজনক ও অমানবিক। যে মানুষ সমাজকে নৈতিক আলো দেখায়, সেই মানুষকেই অভাবের সঙ্গে লড়াই করতে হচ্ছে।

রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে ইমামদের প্রতিনিধিত্ব না থাকার বিষয়টিও তুলে ধরেন তিনি। বলেন, সমাজ সংস্কার ও নৈতিক উন্নয়নের বড় বড় সিদ্ধান্তে ইমাম সমাজের মতামত উপেক্ষিত থাকে। আমাদের শুধু দোয়া-মোনাজাতের মধ্যে সীমাবদ্ধ করে রাখা হয়েছে।


বিজ্ঞাপন


জাতীয় ইমাম সমাজ বাংলাদেশের সভাপতি বলেন, ইমাম সমাজকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে এবং সমকালীন রাষ্ট্রব্যবস্থা, অর্থনীতি ও প্রযুক্তি বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করতে হবে, যাতে কেউ তাদের অপ্রাসঙ্গিক বলার সাহস না পায়। সময় এসেছে আত্মমর্যাদাশীল এক নতুন ইমাম সমাজ গড়ে তোলার, যারা হবে দেশ ও জাতির প্রকৃত দিশারী।

সম্মেলন থেকে সরকারের প্রতি তিন দফা দাবি জানান তিনি। দাবিগুলো হলো—ইমামদের জন্য জাতীয় বেতন স্কেল প্রণয়ন, ইমাম সুরক্ষা আইন প্রণয়ন এবং প্রতিটি মসজিদে নিয়োগপত্র ও চাকরির নিশ্চয়তা প্রদান।

এসময় উপস্থিত ছিলেন— জামিয়াতুল উলুমিল ইসলামিয়ার প্রিন্সিপাল মাওলানা মাহমুদুল হাসান, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব আল্লামা সাজিদুর রহমান, জামিয়া নূরিয়া ইসলামিয়্যার প্রিন্সিপাল মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজি, জাতীয় হিফজুল কোরআন বাংলাদেশের সভাপতি শায়েখ মাওলানা আ. ক্বারী সাহেব, বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা সাখাওয়াত হোসাইন রাজি, আপ বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা বেলায়েত হোসাইন আল-ফিরুজী প্রমুখ।

এএইচ/এএস

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর