খুলনায় ভয়েস নেটওয়ার্কের আয়োজনে দিনব্যাপী নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের একটি প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। কর্মশালায় বক্তারা বলেন, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার এবং পেশিশক্তির ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে একটি শান্তিপূর্ণ, উৎসবমুখর ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন বাধাগ্রস্ত হতে পারে। বিগত কয়েকটি নির্বাচন নিয়ে জনমনে ব্যাপক অসন্তোষ থাকায় একটি অংশগ্রহণমূলক, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠান আজ অত্যন্ত জরুরি।
নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থাসমূহের জোট ‘ভয়েস নেটওয়ার্ক’ ও ‘ইমপ্যাক্ট ইনিশিয়েটিভ’-এর যৌথ উদ্যোগে শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় খুলনা মহানগরীর শিল্পকলা একাডেমির থিয়েটার হলে এ কর্মশালার আয়োজন করা হয়। প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সদস্য ও নির্বাচন বিশেষজ্ঞ জেসমিন টুলি।
বিজ্ঞাপন
জেসমিন টুলি বলেন, একটি স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে এই প্রশিক্ষণ ম্যানুয়াল অপরিহার্য। এর মাধ্যমে পর্যবেক্ষকরা তাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য সঠিকভাবে বুঝতে ও পালন করতে সক্ষম হবেন। এ লক্ষ্যে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ‘ইমপ্যাক্ট ইনিশিয়েটিভ’ প্রণীত ‘নির্বাচন পর্যবেক্ষণ ম্যানুয়াল’-এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয় কর্মশালায়।
খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরা জেলার বিভিন্ন নির্বাচনি আসন থেকে আগত তিন শতাধিক পর্যবেক্ষক এ কর্মশালায় অংশ নেন। কর্মশালায় পর্যবেক্ষণের নীতি-পদ্ধতি, নির্বাচনি আইন-বিধি ও অন্যান্য প্রাসঙ্গিক বিষয়ে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
বিজ্ঞাপন
ভয়েস নেটওয়ার্কের স্টিয়ারিং কমিটির সভাপতি ও ইমপ্যাক্ট ইনিশিয়েটিভের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এনায়েত হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী পর্বে স্বাগত বক্তব্য দেন ভয়েস নেটওয়ার্কের ভাইস চেয়ারম্যান ও শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. সাহাবুল হক। ভয়েস নেটওয়ার্কের সদস্য সচিব ও এটিএন বাংলার প্রধান প্রতিবেদক একরামুল হক সায়েম অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন খুলনা বিভাগীয় অতিরিক্ত আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা রাজু আহমেদ, খুলনা প্রেসক্লাবের সদস্য সচিব রফিউল ইসলাম টুটুল, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সহকারী মহাসচিব এহতেশামুল হক শাওন, নির্বাচন বিশেষজ্ঞ জাহিদুল ইসলাম ও আবদুল্লাহ শাহীন প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, সংশ্লিষ্ট সবাই যদি নিজ নিজ অবস্থান থেকে নির্বাচন সংক্রান্ত দায়িত্ব সততা ও নিষ্ঠার সাথে পালন করেন, তাহলে বাংলাদেশে একটি দৃষ্টান্তমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। তারা উল্লেখ করেন, পরপর কয়েকটি নির্বাচনে জনগণের প্রকৃত ভোটাধিকার প্রয়োগ সীমিত ছিল, যার ফলে একটি পুরো প্রজন্ম স্বাধীন ও নিশ্চিন্তভাবে ভোট দেয়ার অভিজ্ঞতা থেকে বঞ্চিত। একটি অনুকূল, অবাধ ও নিরাপদ নির্বাচনী পরিবেশ সৃষ্টির জন্য নির্বাচন পরিচালনায় জড়িত সকল প্রতিষ্ঠানের আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার ওপর গুরুত্বারোপ করেন বক্তারা।
তারা আরও বলেন, নিরপেক্ষ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের অপরিহার্য অনুষঙ্গ, যা গণতান্ত্রিক ভিতকে মজবুত করে। স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনই গণতান্ত্রিক শাসনের মূল ভিত্তি। নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষকদের উপস্থিতি ভোটারদের মধ্যে আস্থা বাড়ায় এবং তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগে উৎসাহিত করে।
ক.ম/

