তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তনের দিনে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় পরিবহন সংকটকে পুঁজি করে কয়েকগুণ ভাড়া আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। গুরুত্বপূর্ণ সড়ক বন্ধ করে দেওয়ায় গণপরিবহন চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে পড়ে। বিশেষ করে ইসিবি চত্বর এলাকায় বাস চলাচল বন্ধ থাকায় যাত্রীরা বাধ্য হয়ে রিকশা, অটোরিকশা ও সিএনজিতে উঠছেন। আর এই সুযোগে স্বাভাবিক ভাড়ার কয়েকগুণ আদায় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।
জানা গেছে, সকাল থেকেই ইসিবি চত্বর ও আশপাশের এলাকায় বাস চলাচল বন্ধ থাকে। কুড়িল বিশ্বরোড থেকে ইসিবি চত্বর বাসের ভাড়া যেখানে মাত্র ১০ টাকা, সেখানে একই দূরত্বে রিকশা ও অটোরিকশায় ৮০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। কোথাও কোথাও দেড়শ টাকা পর্যন্ত নেওয়ার অভিযোগও পাওয়া গেছে। বিকল্প পরিবহন না থাকায় যাত্রীরা বাধ্য হয়ে বাড়তি ভাড়া দিয়ে গন্তব্যে যেতে বাধ্য হচ্ছেন।
বিজ্ঞাপন
ভুক্তভোগী যাত্রীদের অভিযোগ, পর্যাপ্ত নজরদারি ও ভাড়া নিয়ন্ত্রণ না থাকায় পরিবহন শ্রমিকরা এই সুযোগ নিচ্ছে। দ্রুত বাস চলাচল স্বাভাবিক করা এবং অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন তারা।
ইসিবি চত্বরে আটকে পড়া যাত্রী রাশেদ মাহমুদ বলেন, সকাল থেকে বাস পাচ্ছি না। রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, কিন্তু বিকল্প কোনো ব্যবস্থা নেই। বাধ্য হয়ে রিকশায় উঠতে হয়েছে। যেখানে বাসে ভাড়া লাগে ১০ টাকা, সেখানে রিকশাওয়ালা ১০০ টাকা নিয়েছে। প্রতিবাদ করেও কোনো লাভ হয়নি, কারণ যাওয়ার আর কোনো উপায় ছিল না।

আরেক যাত্রী সালমা খাতুন বলেন, শিশু সন্তান নিয়ে বের হয়েছি। দীর্ঘ সময় রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে। অটোচালকরা পরিস্থিতির সুযোগ নিচ্ছে। ১০ টাকার পথের জন্য ১২০ টাকা চাইছে। না দিলে তারা বলে নেবেন না। এমন ভাড়া দিয়ে চলাচল করা সাধারণ মানুষের পক্ষে অসম্ভব।
বিজ্ঞাপন
বিশ্বরোড এলাকার যাত্রী কামাল হোসেন বলেন, নিয়মিত বাসে যাতায়াত করি। আজ বাস বন্ধ দেখে সিএনজিতে উঠতে গেলে ভাড়া চায় ১৫০ টাকা। কমাতে বললে চালক জানিয়ে দেয়, রাস্তা বন্ধ—যেতে হলে এই ভাড়াই দিতে হবে। প্রশাসনের কোনো নজরদারি না থাকায় তারা ইচ্ছেমতো ভাড়া আদায় করছে।
একজন বয়স্ক যাত্রী আব্দুল জলিল ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ভাড়া বৃদ্ধির বিষয়টি দেখার কেউ নেই। ট্রাফিক পুলিশ বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে কোথাও দেখা যায়নি। বাস বন্ধ করে দিয়ে সাধারণ মানুষকে জিম্মি করা হয়েছে। যারা রোজকারের মানুষ, তাদের জন্য এটা বড় কষ্টের।
আরেক যাত্রী নাসরিন আক্তার বলেন, যানজট কমানোর কথা বলে রাস্তা বন্ধ করা হয়েছে। কিন্তু আগে বিকল্প পরিবহন ব্যবস্থা করা হয়নি। এখন যাত্রীদের অসহায় অবস্থার সুযোগ নিয়ে কয়েকগুণ ভাড়া আদায় করা হচ্ছে, যা একেবারেই অমানবিক।
এএইচ/এএস

