জুলাই যোদ্ধা ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শহীদ শরিফ ওসমান হাদির কবর দলে দলে দেখতে আসছেন ছাত্র-জনতা। একইসঙ্গে কাজী নজরুল ইসলামের সমাধিসৌধের পাশে দাঁড়িয়ে করছেন দোয়া।
রোববার (২১ ডিসেম্বর) সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশের এমন দৃশ্য দেখা গেছে।
বিজ্ঞাপন
সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল থেকে ছাত্র-জনতা দেখতে আসছেন বিপ্লবী হাদির কবর। কেউ কেউ তার সমাধির বাউন্ডারি থেকে দূর থেকে ঘুরে ঘুরে, কেউ কেউ কবর দেখছেন, কেউ কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে দোয়া করছেন। আবার কেউ পরিবার নিয়ে এসেছেন হাদির কবর দেখতে। সবার চোখে মুখেই রয়েছে শোক আর ক্ষোভের ছায়া।
সকাল ১১টার দিকে মিরপুর থেকে পরিবার নিয়ে হাদির কবর দেখতে এসেছেন বেসরকারি চাকরিজীবী আব্দুল আহাদ। এসময় কবরের পাশে দাঁড়িয়ে তিনি ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
আব্দুল আহাদ বলেন, ‘স্বাধীন দেশে ভারত হস্তক্ষেপ করতে পারে না। কীভাবে খুনি ভারতে পালিয়ে যায়? খুনিদেরকে ভারত কেন আশ্রয় দেবে। ভারতের উচিত খুনিদের ফেরত দেওয়া এবং গুপ্তহত্যাকারীদের কোনো ধরনের সহায়তা না করা।’
তিনি আরও বলেন, ‘ভারত আর আওয়ামী লীগ একসূত্রে গাঁথা। তাদেরকে বাংলাদেশের মাটিতে আর জায়গা দেওয়া যাবে না। শহীদের রক্তে কেনা বাংলাদেশ। এই দেশে আধিপত্যবাদী শক্তির জায়গা দেওয়া যাবে না।’
বিজ্ঞাপন
আরেক দর্শনার্থী শরিফ হাসান বলেন, ‘হাদির হত্যার যথাযথ বিচার চাই। খুনিদেরকে ধরতে হবে। আর কেউ যেন এমন হত্যাকাণ্ডের সাহস না পায়, এমন দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে।’

উল্লেখ্য, গত ১২ ডিসেম্বর রাজধানীর বিজয় নগরে নির্বাচনি প্রচারণার সময় সন্ত্রাসীদের গুলিতে মাথায় গুরুতর আঘাত পান ওসমান হাদি। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও এভারকেয়ার হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য গত সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) তাকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়েছিল। বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত পৌনে ১০ টায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
পরে শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় হাদির লাশ দেশে আনা হয়। শনিবার (২০ ডিসেম্বর) দুপুরে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় হাদির জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। লাখো ছাত্র-জনতা জানাজায় উপস্থিত হন। জানাজা শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদ ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবরের পাশে শহীদ শরিফ ওসমান হাদিকে সমাহিত করা হয়।
এসএইচ/এফএ

