২০০৬ সাল থেকে অধিক মুনাফার কথা বলে গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছিল গ্রিন বার্ড মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি। মুনাফার প্রলোভন দেখিয়ে প্রতিষ্ঠানটি সাধারণ মানুষের কাছ থেকে প্রায় ৫৬ কোটি টাকা সঞ্চয়ের নামে হাতিয়ে নেয়।
কিন্তু গ্রাহকরা এতদিন কিছু করতে পারেনি। গ্রাহকদের মধ্যে একজন মামলা করলে তদন্তে নামে সিআইডি। সঞ্চয় প্রকল্পের আড়ালে প্রতারণার মাধ্যমে সংগৃহীত অর্থ মানিলন্ডারিংয়ের প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়ায় প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারী আলাউদ্দিন আহম্মেদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছে অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)-এর ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট।
বিজ্ঞাপন
শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিআইডির অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) আবু তালেব।
সিআইডি জানিয়েছে, প্রাথমিক তদন্তে গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রতারণা করে ৫৫ কোটি ৯৮ লাখ ৮৭ হাজার ৯২৯ টাকা স্থানান্তর, রূপান্তর ও ভোগ-বিলাসে ব্যয়ের সত্যতা পেয়েছে সিআইডি। যার প্রেক্ষিতে গত ১৭ ডিসেম্বর ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত বরাবর অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।
সিআইডি’র তদন্তে উঠে আসে, প্রতারণার মাধ্যমে সংগৃহীত অর্থ ব্যবহার করে অভিযুক্ত আলাউদ্দিন আহম্মেদ রাজধানী ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন এলাকায় একাধিক স্থাবর সম্পত্তি ক্রয় করেন।
আলাউদ্দিন আহম্মেদের নামে রাজধানীর খিলগাঁও এলাকায় একটি ২ কাঠা ভূমির ওপর নির্মিত ৩ তলা ও অপর একটি ২ দশমিক ৪২ শতাংশ জমির ওপর নির্মিত ৫ তলা ভবন, রামপুরা থানাধীন খিলগাঁও তালতলা সুপার মার্কেটের ২য় তলায় ১টি দোকান, সবুজবাগ থানা এলাকায় ৪ দশমিক ৫ শতাংশের একটি প্লট এবং নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ থানা এলাকায় বিসিক জামদানি শিল্পনগরী ও গবেষণা কেন্দ্রের মধ্যে অবস্থিত একটি প্লটের সন্ধান পেয়েছে সিআইডি। আদালত থেকে ইতোমধ্যে নির্দেশ পেয়ে তার সব সম্পত্তি ক্রোক করে সিআইডি এবং ঢাকার বিভাগীয় কমিশনারকে রিসিভার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
আলাউদ্দিন আহম্মেদ ২০০৬ সাল থেকে ‘গ্রিন বার্ড মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড’ এর নামে সাধারণ মানুষকে অধিক মুনাফার প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন সঞ্চয় কর্মসূচি চালু করেন। প্রতি এক লাখ টাকা জমা রাখলে মাসিক দেড় হাজার থেকে ২ হাজার টাকা লাভসহ মূল অর্থ ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তিনি। এভাবে এই তিনি প্রায় ৯ হাজার ৪৫ জন গ্রাহকের কাছ থেকে মোট ৫৫ কোটি ৯৮ লাখ ৮৭ হাজার ৯২৯ টাকা সংগ্রহ করেন।
প্রতারণার অভিযোগ তুলে ২০২২ সালের ২৭ ডিসেম্বর রামপুরা থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। যার তদন্ত করতে নেমে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
এমআইকে/এফএ

