দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান বলেছেন, ‘ভারতের সঙ্গে দালালি করে বাংলাদেশে কোনো রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় যেতে পারবে না, এমনকি ক্ষমতায় গিয়েও টিকে থাকা সম্ভব হবে না। ভারতের আশ্রয়ে থাকতে হলেও শেখ হাসিনাকে দেশ ছেড়ে পালাতে হয়েছে— এটাই প্রমাণ করে দিল্লির সঙ্গে আপস করে ক্ষমতা রক্ষা করা যায় না।’
সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) বিকেলে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদির ওপর হামলার প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আয়োজিত সর্বদলীয় প্রতিরোধ সমাবেশে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
ড. মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘আন্তর্জাতিক আইনের দৃষ্টিতে ভারত ইতোমধ্যে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অঘোষিত যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। কোনো রাষ্ট্র যদি অন্য দেশের সন্ত্রাসীদের আশ্রয় দেয় এবং তাদের ব্যবহার করে সেই দেশের অভ্যন্তরে বিশৃঙ্খলা ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালায়, তাহলে আন্তর্জাতিক আইনে সেটিকে সরাসরি যুদ্ধ ঘোষণা হিসেবে গণ্য করা হয়।’
ভারত সরকারের প্রতি কঠোর বার্তা দিয়ে তিনি বলেন, ‘আগামী ২৫ ডিসেম্বরের মধ্যে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলার সঙ্গে জড়িত ঘাতকরা যদি ভারতে আশ্রয় নিয়ে থাকে, তাহলে তাদের অবিলম্বে বাংলাদেশে হস্তান্তর করতে হবে।’
তিনি হাদির রক্তের কসম দিয়ে বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রতিটি ভারতীয় প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ সংগ্রাম গড়ে তোলা হবে।’
সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘অনতিবিলম্বে জাতিসংঘে ভারতের বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপন করতে হবে যে, ভারত বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অঘোষিত যুদ্ধ শুরু করেছে। এ বিষয়ে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ও নিরাপত্তা পরিষদে দ্রুত যাওয়ার জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানাই।’
বিজ্ঞাপন
রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশে ড. মাহমুদুর রহমান বলেন, অনেক রাজনীতিবিদ বলেন ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্ব ছাড়া ক্ষমতায় যাওয়া কিংবা ক্ষমতায় টিকে থাকা সম্ভব নয়। কিন্তু যদি ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্ব করে ক্ষমতায় টিকে থাকা যেত, তাহলে শেখ হাসিনাকে দেশ ছেড়ে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নিতে হতো না।’
তিনি স্পষ্ট করে বলেন, ‘ভারতের দালালি করে কোনো রাজনৈতিক দল বাংলাদেশে ক্ষমতায় যেতে পারবে না, ক্ষমতায় টিকেও থাকতে পারবে না। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অভিযুক্তদের ফেরত না দিলে বাংলাদেশে কর্মরত সব ভারতীয় নাগরিকের ওয়ার্ক পারমিট বাতিল করতে হবে।’
জনগণের উদ্দেশে ড. মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘এই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে না, এ বিষয়ে জনগণকে বিভ্রম ত্যাগ করতে হবে।’
তিনি প্রতিটি ওয়ার্ডে আইনশৃঙ্খলা কমিটি গঠনের আহ্বান জানান। সব রাজনৈতিক দলকে একসঙ্গে এসব কমিটি গঠনের আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘ফ্যাসিবাদী শক্তি ও তাদের দোসরদের চিহ্নিত করে আইনের হাতে তুলে দেওয়ার দায়িত্ব জনগণকেই নিতে হবে।’
এএইচ/এফএ

