কক্সবাজার সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তানজিলা তাসনিমকে গ্রেফতারের হুমকি প্রদানকারী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের দুজন কর্মচারীকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। তারা হলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. ইব্রাহীম ও অফিস সহকারী মো. গিয়াস উদ্দিন।
আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি ও অতিরিক্ত সচিব মো. আতাউর রহমান খান স্বাক্ষরিত পৃথক দুটি অফিস আদেশে এই তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞাপন
অভিযুক্ত দুজন কক্সবাজার থেকে সেন্ট মার্টিনগামী জাহাজে ওঠেন। কিন্তু অতিরিক্ত যাত্রী হওয়ায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তানজিলা তাসনিম বাধা দেন। এ সময় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে অভিযুক্ত দুজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে পাল্টা গ্রেফতারের জন্য পুলিশকে নির্দেশ দেন। এ নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। গত শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) সকালে শহরের নুনিয়াছড়া বিআইডব্লিউটিএ-এর ঘাটে এ ঘটনা ঘটে।
অফিস আদেশে বলা হয়, সাময়িক বরখাস্ত হওয়া দুজন সরকারি চাকরি বিধি অনুযায়ী খোরপোশ ভাতা প্রাপ্য হবেন। জনস্বার্থে অবিলম্বে এ আদেশ কার্যকর হবে।
কক্সবাজার সদর উপজেলা পরিষদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ইউএনও তানজিলা তাসনিম বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী দিনে দুই হাজারের বেশি পর্যটক সেন্ট মার্টিনে যেতে পারবেন না। সেই নিয়ম বাস্তবায়ন করতে গিয়েই ঘটনাটি ঘটে। তিনি জানান, কিছু পর্যটক অভিযোগ করেন তাদের জাহাজ নির্ধারিত সময়ের আগেই ছেড়ে গেছে।
ইউএনও বিষয়টি জানতে চাইলে ইব্রাহীম নামের একজন নিজেকে প্রশাসনিক কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে ইউএনওকে গ্রেফতারের কথা বলেন। ইউএনও তানজিলা তাসনিম বলেন, ঘটনাটির ভিডিও সংরক্ষিত আছে। তিনি হয়তো আমাকে চিনতে পারেননি। তবে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা হলেও এভাবে কাউকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেওয়ার এখতিয়ার তার নেই।
পরে অভিযুক্ত ইব্রাহীম নিজের ভুল স্বীকার করেন। তিনি বলেন, আমি ম্যাডামকে চিনতে পারিনি, এ জন্য দুঃখিত। আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মচারী। আমাদের টিকিটে জাহাজ ছাড়ার সময় সকাল ৭টা লেখা ছিল; কিন্তু ঘাটে এসে শুনলাম ৬টায় জাহাজ ছেড়ে গেছে। এতে বিভ্রান্ত হয়ে উত্তেজিত হয়ে পড়েছিলাম।
বিজ্ঞাপন
সি-ক্রুজ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর জানান, নদীর নাব্যতা ও জোয়ার-ভাটার কারণে মাঝেমধ্যে ঘাট ও সময়সূচি পরিবর্তন করতে হয়। ‘বে-ক্রুজ’ জাহাজটি নাব্যতা সংকটের কারণে ঘাট পরিবর্তন করেছিল। পর্যটকরা ভেবেছিলেন, জাহাজ ছেড়ে গেছে। পরে ভুল বোঝাবুঝির অবসান হলে ওই ১২ জনকে ‘কেয়ারি সিন্দাবাদ’ জাহাজে সেন্ট মার্টিন পাঠানো হয়। এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনার সৃষ্টি হয়।
ক.ম/

