শুক্রবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

নির্বাচনের পর পদত্যাগ করতে চান রাষ্ট্রপতি: রয়টার্সকে সাক্ষাৎকার

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:৫৮ পিএম

শেয়ার করুন:

নির্বাচনের পর পদত্যাগ করতে চান রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন: রয়টার্স
নির্বাচনের পর পদত্যাগ করতে চান রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন। ফাইল ছবি

জাতীয় নির্বাচনের পর পদত্যাগের পরিকল্পনা করছেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন। তিনি বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) সংবাদমাধ্যম রয়টার্সকে বলেন, নোবেল বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারে তিনি অপমানিত বোধ করছেন।

রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে সাহাবুদ্দিন সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক। তবে পদটি মূলত আনুষ্ঠানিক; কার্যনির্বাহী ক্ষমতা থাকে প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিসভার হাতে।


বিজ্ঞাপন


তার পদ নতুন করে আলোচনায় আসে ২০২৪ সালের আগস্টে, যখন ছাত্রনেতৃত্বাধীন আন্দোলনের মুখে দীর্ঘদিনের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নয়াদিল্লিতে পালিয়ে যান। সংসদ ভেঙে যাওয়ার পর সাহাবুদ্দিনই ছিলেন শেষ অবশিষ্ট সাংবিধানিক কর্তৃপক্ষ।

৭৫ বছর বয়সী সাহাবুদ্দিন ২০২৩ সালে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পাঁচ বছরের জন্য রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন।

তিনি বলেন, আমি চলে যেতে আগ্রহী। আমি বেরিয়ে যেতে চাই। ঢাকার সরকারি বাসভবন থেকে হোয়াটসঅ্যাপে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, দায়িত্ব গ্রহণের পর এটিই তার প্রথম গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার।

রাষ্ট্রপতি বলেন, নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত তার থাকা উচিত। সাংবিধানিক কারণেই তিনি এখনো পদে বহাল আছেন।


বিজ্ঞাপন


সাহাবুদ্দিন জানান, প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস প্রায় সাত মাস ধরে তার সঙ্গে দেখা করেননি। প্রেস বিভাগ তার কাছ থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং গত সেপ্টেম্বরে বিশ্বের সব বাংলাদেশের দূতাবাস থেকে রাষ্ট্রপতির প্রতিকৃতি সরিয়ে ফেলা হয়েছে।

তিনি বলেন, সব কনস্যুলেট, দূতাবাস ও হাইকমিশনে রাষ্ট্রপতির প্রতিকৃতি ছিল। এক রাতের মধ্যে হঠাৎ সেগুলো সরিয়ে ফেলা হয়েছে। এতে মানুষের কাছে ভুল বার্তা যায় যে রাষ্ট্রপতিকে হয়তো সরিয়ে দেওয়া হবে। এতে তিনি ভীষণ অপমানিত বোধ করেছেন।

সাহাবুদ্দিন জানান, প্রতিকৃতি নিয়ে তিনি প্রধান উপদেষ্টাকে চিঠি লিখেছিলেন, তবে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তার ভাষায়, আমার কণ্ঠ রুদ্ধ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে মন্তব্যের অনুরোধে ইউনূসের প্রেস উপদেষ্টারা তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া দেননি।

রাষ্ট্রপতি বলেন, তিনি নিয়মিত যোগাযোগ রাখেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের সঙ্গে। ওয়াকার-উজ-জামান তাকে জানিয়েছেন, ক্ষমতা দখলের কোনো পরিকল্পনা তার নেই।

বাংলাদেশে সামরিক শাসনের ইতিহাস থাকলেও সেনাপ্রধান জানিয়েছেন, তিনি গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে চান।

সাহাবুদ্দিন আরও বলেন, প্রথমদিকে কিছু ছাত্র বিক্ষোভকারী তার পদত্যাগ দাবি করলেও সাম্প্রতিক মাসগুলোতে কোনো রাজনৈতিক দল আর তার পদত্যাগ দাবি করেনি।

বিভিন্ন জনমত জরিপ ইঙ্গিত দেয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এবং জামায়াতে ইসলামী পরবর্তী সরকার গঠনে এগিয়ে আছে।

শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছিলেন কি না—এ প্রশ্নে সাহাবুদ্দিন উত্তর দিতে অস্বীকৃতি জানান। তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর থেকে তিনি স্বাধীন; কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আর যুক্ত নন।

সূত্র: রয়টার্স

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর