পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ফারহিনা আহমেদ প্লাস্টিক দূষণ রোধে সুদৃঢ় ও বাধ্যতামূলক বৈশ্বিক চুক্তি গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আলোচনায় দীর্ঘসূত্রিতা চলতে থাকলে বৈশ্বিক পরিবেশ–সংকট আরও গভীর হবে।
গতকাল বুধবার কেনিয়ার নাইরোবিতে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘ পরিবেশ সম্মেলনের (ইউএনইএ–৭) সপ্তম অধিবেশনে ‘হাই অ্যাম্বিশন কোয়ালিশন টু এন্ড প্লাস্টিক পলিউশন’ শীর্ষক মন্ত্রীপর্যায়ের বৈঠকে তিনি এ আহ্বান জানান।
বিজ্ঞাপন
ফারহিনা আহমেদ বলেন, বাংলাদেশ বহু দশক ধরে প্লাস্টিক দূষণের প্রভাব বহন করছে—জলাশয় ভরাট হওয়া থেকে শুরু করে মাটি ও খাদ্যশৃঙ্খল দূষণ পর্যন্ত। তিনি বলেন, “বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে পলিথিন ব্যাগ নিষিদ্ধ করে আমরা দেখিয়েছি—নৈতিক অঙ্গীকার ও শক্তিশালী নীতিমালা থাকলে উচ্চাকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন সম্ভব।”
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের জাতীয় উদ্যোগ এখন বৈশ্বিক প্লাস্টিক–বিরোধী প্রচেষ্টার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। বাংলাদেশ এমন একটি আন্তর্জাতিক চুক্তির পক্ষে কাজ করছে, যা প্লাস্টিকের পুরো জীবনচক্র—উৎপাদন, রাসায়নিক উপাদান, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর পরিবেশগত ন্যায়বিচার—সবকিছুই অন্তর্ভুক্ত করবে।
সচিব মনে করিয়ে দেন, বিচ্ছিন্ন জাতীয় উদ্যোগ দিয়ে প্লাস্টিক দূষণ মোকাবিলা সম্ভব নয়। তাঁর ভাষায়, “একটি কার্যকর ও বাধ্যতামূলক বৈশ্বিক ব্যবস্থার জন্য প্লাস্টিক চুক্তির এই সুযোগটাই সবচেয়ে বড়। আমাদের এমন একটি চুক্তি প্রয়োজন, যা প্লাস্টিক উৎপাদন কমাবে, ক্ষতিকর রাসায়নিক নিয়ন্ত্রণ করবে এবং সংশ্লিষ্ট কর্মীদের জন্য ন্যায়সঙ্গত রূপান্তর নিশ্চিত করবে।”
আলোচনা ধীরগতিতে এগোনো প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দ্রুত সিদ্ধান্তে যেতে হবে, খসড়া আরও স্পষ্ট করতে হবে এবং রাজনৈতিক অঙ্গীকার জোরদার করতে হবে। “প্রতিটি বিলম্ব মানে আরেক বছর অনিয়ন্ত্রিত দূষণ—পৃথিবীও তা সহ্য করতে পারছে না, বাংলাদেশও না,” বলেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
ফারহিনা আহমেদ জানান, বাংলাদেশের অবস্থান গড়ে উঠেছে বহু বছরের অভিজ্ঞতা এবং মানুষ, নদী, প্রতিবেশ ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে রক্ষার দায়বদ্ধতা থেকে।
বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের সদস্য হিসেবে পরিবেশ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক জিয়াউল হক উপস্থিত ছিলেন।
এআর

