বিশ্ব মানবাধিকার দিবস আজ বুধবার (১০ ডিসেম্বর)। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য- ‘মানবাধিকার, আমাদের নিত্যদিনের অপরিহার্য’। দেশের বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন মানববন্ধন, আলোচনা সভাসহ নানা কর্মসূচির মাধ্যমে দিবসটি পালন করবে। তবে এক বছরের বেশি সময় পার হলেও পুনর্গঠন করা হয়নি জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।
ফলে পরিচালনা কমিটি ছাড়াই চলছে সাংবিধানিক এই প্রতিষ্ঠানটি। গত বছর ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর কমিশনের চেয়ারম্যানসহ সদস্যরা গত ৭ নভেম্বর পদত্যাগ করেন। এরপর দীর্ঘ সময় আর এই পদগুলো পূরণ করা হয়নি।
বিজ্ঞাপন
প্রতিষ্ঠানটি এখন অকার্যকর রয়েছে। কমিশনে সব মিলিয়ে এক হাজারের বেশি অভিযোগ নিষ্পত্তির অপেক্ষায় আছে। এর মধ্যে রয়েছে হত্যা, ধর্ষণ, পারিবারিক ও নারীর প্রতি সহিংসতা, নিখোঁজ, গুম, হেফাজতে নির্যাতন ও মৃত্যু, বিচারবহির্ভূত হত্যা, পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ, সংখ্যালঘু নির্যাতন ও বিনা বিচারে আটকের অভিযোগ।
আরও পড়ুন: আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস আজ
কমিশনের কর্মকর্তারা জানান, বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা অভিযোগ নিষ্পত্তির জন্য রাজধানীর কারওয়ান বাজার কমিশন কার্যালয়ে রয়েছে পৃথক দুটি বেঞ্চ। চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে সাত সদস্যবিশিষ্ট একটি ফুল বেঞ্চ বর্তমানে কার্যকর না থাকায় কমিশনে কোনো সিদ্ধান্ত হচ্ছে না। ফলে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটলেও দীর্ঘদিন কমিশন কোনো সিদ্ধান্ত বা বিবৃতি দিতে পারছে না।
জানা গেছে, ১৯৪৮ সালের এই দিনে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণাপত্র গৃহীত হয়। পরে ১৯৫০ সালের ১০ ডিসেম্বর দিনটিকে জাতিসংঘ বিশ্ব মানবাধিকার দিবস হিসেবে ঘোষণা করে।
বিজ্ঞাপন
সাংবিধানিক অধিকার তথা মানবাধিকার সুরক্ষা ও উন্নয়নের লক্ষ্য নিয়ে ২০০৯ সালে দেশে প্রতিষ্ঠিত হয় একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ প্রতিষ্ঠান জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।
এদিকে বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বাণী দিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘আজ আমরা গর্বের সঙ্গে এমন একটি জাতি হিসেবে দাঁড়িয়ে আছি যারা মানবাধিকারসংক্রান্ত জাতিসংঘের নয়টি মূল আন্তর্জাতিক চুক্তির সবগুলোতে যোগ দিয়েছে, যার সর্বশেষটি হলো গুম বিষয়ক আন্তর্জাতিক কনভেনশন ‘ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন ফর দ্য প্রোটেকশন অব অল পারসন্স ফ্রম এনফোর্সড ডিসেপিয়ারেন্স’।
আমরা একইসঙ্গে নির্যাতন বিরোধী কনভেনশনের ঐচ্ছিক প্রোটোকল এবং আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার সব মূল কনভেনশনেও সই করেছি, যা আমাদের শ্রমিকদের অধিকার ও নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের সদস্য হিসেবে বিশ্বব্যাপী মানবাধিকার সমুন্নত রাখতেও আমরা সক্রিয় অবদান রেখে যাচ্ছি। সংঘাত, মানবিক সংকট, জলবায়ু পরিবর্তন ও জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতির মতো ঘটনা যা মানবাধিকার সুরক্ষার পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে এসব বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সাথে আমরা একযোগে কাজ করছি।’
এসএইচ/এমআই

