তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী বলেছেন, ‘সরকার দেশের ডিজিটাল সেবা দ্রুত সম্প্রসারণ করছে এবং প্রতিটি নতুন সেবাকে সূচনা থেকেই প্রবেশযোগ্য করে তৈরি করা অগ্রাধিকার হিসেবে নেওয়া হবে।’
মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অনুষ্ঠিত ‘ইনোভেশন টু ইনক্লুশন ইন দ্য ডিজিটাল এইজ’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
সেমিনারটি এসপায়ার টু ইনোভেট (এটুআই) প্রোগ্রাম ও জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) বাংলাদেশ যৌথভাবে আয়োজন করেছে। সচিব জানান, ডিজিটাল সেবা ডিজাইনের প্রারম্ভিক স্তর থেকেই প্রবেশযোগ্যতা বাধ্যতামূলক উপাদান হিসেবে যুক্ত করতে হবে।
তিনি বলেন, ‘কেবল প্রযুক্তি নয়, নীতি ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সবার জন্য সমান সুবিধা নিশ্চিত করা সম্ভব।’
সম্মেলনে সমাজসেবা অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. সাইদুর রহমান খান বলেন, ‘প্রবেশযোগ্যতা শুধু প্রযুক্তিগত বিষয় নয়, এটি মর্যাদা ও সম্মানের সঙ্গে জড়িত। যারা সহজে অনলাইন কাজও সম্পন্ন করতে পারেন না, তারা প্রায়ই নিজেরা সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন ও অবহেলিত বোধ করেন।’
এটুআই-এর যুগ্ম সচিব মো. আব্দুর রফিক বলেন, ‘ডিজিটাল বৈষম্য দূর করতে একক কোনো প্রতিষ্ঠান যথেষ্ট নয়। নীতিনির্ধারক, প্রযুক্তিবিদ ও প্রতিবন্ধী অধিকারকর্মীরা অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে কাজ করলে বাস্তবসম্মত সমাধান আসবে।’
বিজ্ঞাপন
সেমিনারে আগামী পাঁচ বছরে বাস্তবায়নযোগ্য রোডম্যাপ প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রথম বছরে সরকারি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের অ্যাক্সেসিবিলিটি অডিট, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য সাশ্রয়ী ইন্টারনেট প্যাকেজ, ডিজিটাল নিরাপত্তা ও অধিকারের প্রশিক্ষণ জোরদার করা হবে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় বছরে সরকারি ভাতা ও ভর্তুকি কার্যক্রমে দূরবর্তী পরিচয় যাচাইকরণ, ডিজিটাল ব্যাংকিং, ন্যাশনাল ডিজেবিলিটি হেল্পলাইন, সহায়ক প্রযুক্তি ব্যবহার সম্প্রসারণের সুপারিশ থাকবে। তৃতীয় থেকে পঞ্চম বছরে আন্তর্জাতিক মানের ডিজিটাল অ্যাক্সেসিবিলিটি অ্যাক্ট প্রণয়ন, ওয়েব অ্যাক্সেসিবিলিটি মনিটরিং অথরিটি গঠন এবং সরকারি তথ্য ও জরুরি বার্তা সব ধরনের প্রতিবন্ধীর জন্য প্রবেশযোগ্য করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে এটুআই ও ইউএনডিপি বাংলাদেশের যৌথ গবেষণা ‘ডিজিটাল বৈষম্য দূরীকরণ: বাংলাদেশের ডিজিটাল ইকোসিস্টেমে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের প্রবেশযোগ্যতা উন্নয়ন’ উপস্থাপন করা হয়। গবেষক ভাস্কর ভট্টাচার্য জানান, যদিও ইতোমধ্যে এক হাজারের বেশি ই-সেবা চালু হয়েছে এবং প্রায় ৩৩ হাজার সরকারি ওয়েবসাইটকে সমন্বিত করা হয়েছে, তবুও বাস্তবে বহু প্রতিবন্ধী ব্যক্তি সেবা ব্যবহার করতে নানা প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হচ্ছেন।
সেমিনারে আইসিটি বিভাগ, এটুআই, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল, সমাজসেবা অধিদফতর, জাতিসংঘ সংস্থা, উন্নয়ন অংশীদার, মোবাইল অপারেটর, ব্যাংক, ডিজিটাল পেমেন্ট সেবা, অনলাইন লার্নিং প্ল্যাটফর্ম, সিভিল সোসাইটি এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সংগঠনের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।
এএইচ/এফএ

