জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের প্রস্তুতি প্রায় শেষ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। অতীতে নির্বাচনের আগের রাতে কেন্দ্রে ব্যালট পাঠানো নিয়ে সমালোচনা থাকলেও এবারও ভোটের আগের রাতেই কেন্দ্রে কেন্দ্রে যাবে ব্যালট পেপার।
রোববার (৭ ডিসেম্বর) দশম কমিশন সভা শেষে এমন সিদ্ধান্তের কথা জানান নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ।
সভায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন সভাপতিত্ব করেন। এতে অন্য তিন নির্বাচন কমিশনার, ইসি সচিব ও ঊর্ধ্বতন কর্মকতারা উপস্থিত ছিলেন।
ভোটের আগের রাতেই ব্যালট পেপারসহ সকল নির্বাচনি সামগ্রী কেন্দ্রে পাঠানো নিয়ে অতীতে বিতর্ক থাকলেও এবার কমিশন আত্মবিশ্বাসী।
এ বিষয়ে ইসি সানাউল্লাহ বলেন, আমরা কনফিডেন্ট, আর রাতের ভোটের মতো ঘটনার পুনরাবৃত্তি দেখতে চাই না। তাই ব্যালট নিয়ে আমাদের যথাযথ সুপারভিশন থাকবে। আমরা ভোটের আগের রাতেই সবকিছু যথাযথভাবে করব।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, এই সপ্তাহের মধ্যেই আমরা ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণা করব।
সপ্তাহটা কবে থেকে ধরা হবে- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘৮ থেকে ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে।
ইসি সানাউল্লাহ জানান, ‘ভোটের দিন সাধারণ ছুটি থাকবে। অন্যান্য সময় যেমনটা থাকে, ঠিক তেমনই।’ এছাড়া দুর্গম এলাকায় ব্যালট পেপার ও ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের পরিবহনে হেলিকপ্টার ব্যবহারের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
নির্বাচনে কারা রিটার্নিং কর্মকর্তা হবেন- জানতে চাইলে তিনি বলেন, রিটার্নিং কর্মকর্তাদের বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। সাধারণত জেলা প্রশাসকরা দায়িত্ব পান, তবে কিছু বিকল্প প্রস্তাব বিবেচনায় আছে।
পোস্টাল ব্যালটে ভোটদানের নিবন্ধনের সময় বৃদ্ধির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আগে এলাকাভিত্তিক করা ছিল, এটা আমরা পুরো বিশ্বে ওপেন করে দিয়েছি। সুতরাং যেকোনো দেশ থেকে প্রবাসী বাংলাদেশি ভোটাররা ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত নিবন্ধন করতে পারবেন।’
তফসিল ঘোষণার দিন থেকেই আচরণবিধি কার্যকর হবে জানিয়ে সানাউল্লাহ বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সব প্রচার সামগ্রী সরাতে হবে। না সরালে আচরণবিধির আওতায় যা যা করা দরকার, তাই করা হবে।’
ইসির এই কর্মকর্তা বলেন, জাতীয় পরিচয়পত্রে বয়স সংশোধনের প্রবণতা বেড়ে যাওয়ায় তা নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ভুলজনিত সংশোধন মাঠপর্যায়ে হবে, বাকি সব কেন্দ্রীয়ভাবে নিষ্পত্তি করা হবে।
আরও পড়ুন: চলতি সপ্তাহেই ভোটের তফসিল
তফসিল ঘোষণার পর নতুন প্রকল্প অনুমোদন করা যাবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘চলমান বা পরিকল্পিত প্রকল্পে বাধা দেওয়া হবে না, তবে নির্বাচন কমিশন প্রয়োজনে তার এখতিয়ার প্রয়োগ করবে।’
ইসি সানাউল্লাহ বলেন, ‘গণভোটের ব্যালট পড়তে সময় বেশি লাগায় ভোটের গতি কমছে। এজন্য একাধিক গোপন কক্ষ স্থাপন এবং যে সকল কেন্দ্রে সক্ষমতা নেই সেখানে প্রয়োজনে অস্থায়ী বুথ তৈরির নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’
১৪ দলের শরিকদের ভোটে অংশগ্রহণ নিয়ে প্রশ্ন উঠলে নির্বাচন কমিশনের অবস্থান স্পষ্ট করে তিনি আরও বলেন, ‘আইন যাদের অনুমতি দেয়, তারাই ভোটে অংশ নিতে পারবেন। রাজনৈতিক বক্তব্য নয়, আমরা আইন অনুযায়ী কাজ করছি।’
এমএইচএইচ/এএইচ

