সরকার ২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর পুনর্বাসনের জন্য দুটি বড় আবাসন প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে। পরিকল্পনা কমিশন এই প্রকল্পগুলোর অনুমোদনের সুপারিশ করেছিল এক্সিকিউটিভ কমিটি অব দ্য ন্যাশনাল ইকোনমিক কাউন্সিলের (ইসিএনইসি) কাছে।
সোমবার (১ ডিসেম্বর) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের পরিকল্পনা কমিশন চত্বরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের ৬ষ্ঠ একনেক বৈঠকে প্রকল্প দুটি অনুমোদিত হয়।
বিজ্ঞাপন
বৈঠকে জানানো হয়, প্রথম প্রকল্পের মাধ্যমে মিরপুর ডিওএইচএস সংলগ্ন এনএইচএ-এর নিজস্ব জমিতে ১৫৬০টি আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হবে। এটি জুলাই আন্দোলনে কর্মক্ষমতা হারানো পরিবারগুলোর জন্য। প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে এক হাজার ৩৪৪.৪১ কোটি টাকা, যা সম্পূর্ণ সরকারি তহবিল থেকে বাস্তবায়িত হবে। জুলাই ২০২৫ থেকে জুন ২০২৯ পর্যন্ত প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে। এতে ১৫টি ১৪ তলা ভবন নির্মাণ করা হবে, প্রতিটি তলায় ৮টি ফ্ল্যাট থাকবে, ফ্ল্যাটের আয়তন ১,২৫০ বর্গফুট। বেসমেন্ট ও গ্রাউন্ড ফ্লোরে পার্কিং সুবিধা থাকবে। প্রকল্পে ভূমি উন্নয়ন, ভবন নির্মাণ, সীমানা প্রাচীর ও গেট, বেড ও যাত্রী লিফট, সাবস্টেশন, জেনারেটর, পাম্প-মোটর, সৌরশক্তি ব্যবস্থা, ফায়ার হাইড্র্যান্ট, ইন্টারকম, সিসিটিভি, বিদ্যুৎ সংযোগ এবং ফ্ল্যাট হস্তান্তর পর্যন্ত বিদ্যুৎ বিল অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
বৈঠকে আরও জানানো হয়, দ্বিতীয় প্রকল্প ‘৩৬ জুলাই’ আবাসিক কমপ্লেক্স নির্মাণের মাধ্যমে শহীদ পরিবারগুলোকে স্থায়ী আবাসন প্রদান করা হবে। এটি মিরপুর সেকশন-১৪, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় ৫.০৮ একরে বাস্তবায়িত হবে। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৭৬১.১৬০৭ কোটি টাকা, যা সম্পূর্ণ সরকারি তহবিল থেকে বাস্তবায়িত হবে। জানুয়ারি ২০২৬ থেকে ডিসেম্বর ২০২৯ পর্যন্ত সময়ের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে। এতে ৬টি ১৪ তলা এবং ১২টি ১০ তলা ভবন থাকবে, মোট ৮০৪টি ফ্ল্যাট, প্রতিটির আয়তন ১,৩৫৫ বর্গফুট। বেসমেন্ট ও গ্রাউন্ড ফ্লোরে পার্কিং সুবিধা থাকবে এবং ভবনগুলো ভূমিকম্প-প্রতিরোধী নকশায় নির্মিত হবে। এ ছাড়া সীমানা প্রাচীর, অভ্যন্তরীণ রাস্তা ও নালা, লিফট, সাবস্টেশন, জেনারেটর, সৌরশক্তি ব্যবস্থা, ফায়ার হাইড্র্যান্ট ও সিসিটিভি ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
পরিকল্পনা কমিশন জানায়, দুটি প্রকল্পই ২০২৪ সালের আন্দোলনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর পুনর্বাসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এ ছাড়া, তাদের জন্য সম্মানজনক আবাসন নিশ্চিত করা জাতীয়ভাবে তাদের ত্যাগকে স্বীকৃতি দেবে এবং পরিবারগুলোকে স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা ফিরে পেতে সাহায্য করবে।
পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ জানিয়েছেন, দুটি প্রকল্পের বাস্তবায়নকাল আলাদা রাখা হয়েছে, কারণ ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের সমর্থনের ধরণ ভিন্ন। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে কর্মক্ষমতা হারানো পরিবারদের জন্য ফ্ল্যাট সরবরাহ করা সরাসরি ও সহজ, কিন্তু শহীদ ছাত্রদের পরিবারের জন্য স্থায়ী আবাসন প্রদানের ক্ষেত্রে উত্তরাধিকারের বিষয়গুলো আইনগতভাবে সংবেদনশীল। সরকার অনুমোদিত নীতি ও কাঠামো অনুসরণ করে ফ্ল্যাট বরাদ্দ নিশ্চিত করবে।
বিজ্ঞাপন
এএইচ/এফএ

