শুক্রবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

কালশী রোডের মাথা যেন রিকশা স্ট্যান্ড!

মো. আব্দুস সবুর (লোটাস)
প্রকাশিত: ১৪ নভেম্বর ২০২৫, ০৫:৪৬ পিএম

শেয়ার করুন:

K
কালশী রোডের মাথায় এভাবেই প্রতিদিন জমা হয়ে থাকে রিকশা। ছবি- ঢাকা মেইল

বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টা, কালশী রোডের মাথায় যাত্রী ডাকছেন অন্তত ১২ থেকে ১৫টি ব্যাটারিচালিত রিকশার চালক। রাস্তার দুপাশে বাস ও অন্যান্য যানবাহন আটকে আছে। এটি শুধু আজকের দৃশ্য নয়। প্রতিদিন বিকেল ৪টার পর থেকে এমন যানজটের দৃশ্য দেখা যায় মিরপুর-১১ ও কালশী রোডের মাথায়। 

অতিরিক্ত গাড়ি না থাকার পরও শুধু ব্যাটারিচালিত রিকশার যাত্রী ডাকতে পাল্লা দিয়ে থাকেন চালকরা। এতে মিরপুর-১০, ১২ ও কালশী থেকে আসার রাস্তায় দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। এই মোড়ে ট্রাফিক পুলিশ থাকলেও সেভাবে কোনো ভূমিকায় দেখা যায় না। 


বিজ্ঞাপন


582103881_1443549123407639_5186321519607659672_n
অতিরিক্ত গাড়ি না থাকার পরও শুধু ব্যাটারিচালিত রিকশার যাত্রী ডাকতে পাল্লা দিয়ে থাকেন চালকরা। ছবি: ঢাকা মেইল

যাত্রী ও অন্যান্য গাড়ির চালকরা জানান, এই রাস্তার বিপরীত পাশে কয়েকটা গার্মেন্টস আছে। সেখানে ছুটি হলেই এই মোড়ে রিকশাচালকদের ভিড় দেখা যায়। তাদের কারণে সব দিকে যানজটের সৃষ্টি হয়। তারা রাস্তার মাঝখানে না এসে পাশে থেকে যাত্রী উঠালে সবার চলাচলে সুবিধা হয়। কিন্তু কে শোনে কার কথা। ট্রাফিক পুলিশ বসে বসে মোবাইল দেখে। এখানে ফুটওভার ব্রিজ করার দাবিও জানান অনেকে।
 
সরেজমিনে দেখা যায়, বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) বিকেলে কালশী রোডের মাথায় অন্তত ১০টা রিকশার চালক যাত্রীদের ডাকছেন, কালশী ১০, ইসিবি ২০, একজন হলেই যাবো এমন আরও কত কিছু। তাদের পেছনে বাস-ট্রাক আটকে আছে, সেদিক কোনো খেয়াল নেই। শুধু যাত্রী তুলতে হাঁকডাক। 

ট্রাফিক পুলিশের অবহেলা 

কালশী রোডের মাথায় সেভাবে কোনো যানজট লাগার কারণ না থাকলেও রিকশাচালকদের জন্য এটি হয়ে থাকে। এমনভাবে তারা রাস্তা দখল করে যাত্রীদের ডাকে যেন রাস্তার মাথা তাদের স্ট্যান্ড। এটি মূলত বিকেল ৪টার পর থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত হয়ে থাকে। 
 
স্থানীয় চা দোকানি রফিক মিয়া বলেন, সারাদিন রিকশার খুব বেশি ভিড় থাকে না। কিন্তু বিকেলে সব গার্মেন্টস ছুটি হয়। অনেক মানুষ একসঙ্গে বের হয়। রিকশাচালকরা তাদের নিতে এখানে ভিড় করে। এতে বাস ও অন্যান্য গাড়িও আটকে যায়।
 
অছিম পরিবহনের বাসচালক আকরাম আলী বলেন, এখানে একজন ট্রাফিক পুলিশ আছেন। কিন্তু তিনি রিকশাচালকদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেন না। কোনো কারণ ছাড়াই রিকশার জন্য এই মোড়ে জট হয়।
 
এই রাস্তায় নিয়মিত চলাচলকারী জুয়েল রানা নামের একজন বলেন, আমার বাসা মোড়ের একটু ভেতরে। সন্ধ্যার পর নিয়মিত মেট্রো থেকে নেমে বাসায় যেতে রিকশাচালকদের হাঁকডাকের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। সন্ধ্যায় এখানে ছোট-বড় যানজট লেগেই থাকে। কিন্তু ট্রাফিক পুলিশকে সেভাবে কাজ করতে দেখা যায় না। 

581847016_870088662115104_8453083446968501816_n
সন্ধ্যায় এখানে ছোট-বড় যানজট লেগেই থাকে। কিন্তু ট্রাফিক পুলিশকে সেভাবে কাজও করতে দেখা যায় না। ছবি: ঢাকা মেইল

রিকশাচালকরা জানান, বিকেলে এই রাস্তায় প্রচুর মানুষ একসঙ্গে গার্মেন্টস থেকে বের হয়। এতে এমনিতেই রাস্তায় যানজট লেগে থাকে। তারা শুধু যাত্রী নিয়েই চলে যায়। তাই রাস্তায় যানজটের জন্য রিকশার চেয়ে মানুষ বেশি দায়ী।
 
হাসেম আলী নামে একজন রিকশাচালক বলেন, আসলে যখন সবাই যাত্রীদের নিতে সামনে এগিয়ে যায় তখন পেছনে থাকলে যাত্রী পাওয়া যায় না। তাই অনেকে বাধ্য হয়েই রাস্তার মধ্যে চলে যায়। রাস্তায় জ্যাম হয় শুধু রিকশার কারণে নয়। অনেক মানুষ একসঙ্গে হেঁটে রাস্তা পার হয়। এতে অন্যান্য গাড়িগুলো আটকে থাকে। 

581847016_870088662115104_8453083446968501816_n
যখন সব চালক যাত্রীদের নিতে সামনে এগিয়ে যায় তখন পেছনে থাকলে যাত্রী পাওয়া যায় না। তাই অনেকে বাধ্য হয়েই রাস্তার মধ্যে চলে যায়। ছবি: ঢাকা মেইল

বাকের হোসেন নামে আরেকজন রিকশাচালক বলেন, আমরা যাত্রীদের উঠাতে একটু এগিয়ে যাই। তারা রাস্তা পার হয়েই যাতে রিকশায় উঠতে পারেন, এ জন্য দাঁড়িয়ে থাকা হয়। কিন্তু সবার জন্য যদি নিয়ম থাকত রাস্তার পাশে দাঁড়ানো, তাহলে সেটাই ভালো হতো। কিন্তু এমন কেউ করে না।
 
এ মোড়ের দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি রাজি হননি।
 
এএসএল/ক.ম 

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর