আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রাবসী ও ভোটের কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তাদের জন্য ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে ইতোমধ্যে আগাম পোস্টাল ব্যালট ছাপানো পরিকল্পনা করছে নির্বাচন কমিশন। এক্ষেত্রে এ পোস্টাল ব্যালটের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সিসি ক্যামেরার ব্যবহার করা হবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
ইসি সংশ্লিষ্ট শাখার কর্মকর্তা বলেন, আমাদের টার্গেট ৫০ লাখ ভোটারকে পোস্টাল ব্যালটের আওতায় আনার। তবে প্রথামিক আমরা ২০ লাখ ব্যালট ছাপানোর পরিকল্পনা করেছি। যার মধ্যে প্রবাসীদের জন্য ১০ লাখ আর ভোটের কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তাদের জন্য ১০ লাখ। নিবন্ধন কার্যক্রমের অগ্রগতি দেখে পরবর্তী ধাপের ভোটার সংখ্যা নির্ধারণ করে প্রক্রিয়া শেষ করা হবে।
বিজ্ঞাপন
পোস্টাল ব্যালটের নিরাপত্তার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যেহেতু পোস্টাল ব্যালট আর্মি প্রিন্টিং প্রেসে ছাপানো হবে সেখানে তো এমনিতেই কঠোর ব্যবস্থা থাকবে তারপরও আমরা বলছি যারা এ কাজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তাদের মোবাইল ফোন, ডিভাইস ইত্যাদি সাথে বহন করবে না এবং আমি প্রিন্টিং প্রেস ও
ডাক বিভাগের মেইল প্রসেসিং সেন্টারে (এমপিসি) সিসি ক্যামেরা ব্যবহারের জন্য বলা হয়েছে।
তিনি বলেন, নিবন্ধনের লক্ষ্যমাত্রা ৫০ লাখ ধরে নির্বাচনি বাজেটে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ রাখা হবে। এ কাজে আনুমানিক ৩৫০ কোটি টাকা ব্যয় হতে পারে
পোস্টাল ব্যালটের নিরাপত্তার বিষয়ে জানতে চাইলে ইসির অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী নেওয়াজ বলেন ঢাকা মেইলকে বলেন, প্রাথমিকভাবে আমরা ২০ লাখ পোস্টাল ব্যালট ছাপানোর পরিকল্পনা করছি। আর এর নিরাপত্তা নিশ্চিতে আমরা মাল্টি লেয়ার নিরাপত্তার বিধান আনছি। যার মধ্যে সিসি ক্যামেরাও রয়েছে।
বিজ্ঞাপন
বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) ইসি অতিরিক্ত সচিব ও ‘আউট অব কান্ট্রি ভোটিং সিস্টেম অ্যান্ড ইমপ্লিমেন্টেশন (ওসিভি–এসডিআই)’ প্রকল্পের পরিচালক কে এম আলী নেওয়াজ স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত এক কার্যবিবরণী থেকে জানা যায়,
আইটি সাপোর্টেড পোস্টাল ভোটের আইনি ভিত্তি করতে পরিপত্র করা হবে। বাংলাদেশ ডাক বিভাগের এর অফিসিয়াল ফেসবুক থেকে চালাতে হবে প্রচারণা।
নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে আমি প্রিন্টিং প্রেস ও বাংলাদেশ ডাক বিভাগের মেইল প্রসেসিং সেন্টার (এমপিসি), এ দায়িত্ব পালনকারী ব্যক্তিবর্গ কোন মোবাইল ফোন, ডিভাইস ইত্যাদি সাথে বহন করবে না। উক্ত স্থাপনায় নিরাপত্তার আরও জোরদর করতে সিসি ক্যামেরা থাকবে। প্রাথমিকভাবে আর্মি প্রিন্টিং প্রেস এবং ডাক বিভাগ ২০ লক্ষ ভোটারদের প্রিন্টং কার্যক্রম শুরু করতে হবে।
১৮ নভেম্বর উদ্বোধন ‘পোস্টাল ভোট বিডি’, নিবন্ধন সময় ৪ সপ্তাহ
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রবাসী, ভোটের কাজে নিয়োজিত সরকারি কর্মকর্তা এবং আইন হেফাজতে থাকা ভোটারদের ভোটাধিকার নিশ্চিতে আইটি-সাপোর্টেড পোস্টাল ব্যালটে ভোটগ্রহণ করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ইতোমধ্যে ভোটদানে নিবন্ধনের জন্য ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ নামের একটি অ্যাপ তৈরি করেছে সংস্থাটি, যা উদ্বোধন করা হবে আগামী ১৮ নভেম্বর। উদ্বোধনের পর পরবর্তী চার সপ্তাহ চলবে নিবন্ধন কার্যক্রম। এ সময়ের মধ্যে পোস্টাল ব্যালটে ভোট দিতে ইচ্ছুক প্রবাসী ভোটারদের নিবন্ধন করতে হবে।
নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রবাসীদের জন্য পৃথক ভোটার তালিকা করা হবে। তারা ১৮ নভেম্বর থেকে অ্যাপে (পোস্টাল ভোট বিডি) নিবন্ধন করবেন। তবে দেশের ভেতর থেকে যারা এখন আবেদন করছেন তারা ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটার তালিকায় যুক্ত হতে পারবেন না। কেননা, এটার সময় অক্টোবরে শেষ হয়েছে।
তিনি বলেন, ভবিষ্যতে সম্ভবত আমরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করবো না। এতে পাবলিকের টাকা নষ্ট হচ্ছে।
তিনি বলেন, প্রবাসীদের ভোট ব্যবস্থার জন্য আমরা ট্রায়াল ছাড়াই প্রধান উপদেষ্টার অঙ্গীকার রক্ষার্থে এক্সারসাইজটা হাতে নিয়েছি। আপনাদের সবার সহযোগিতা প্রয়োজন এবং আমরা ধরেই নিচ্ছি এর মধ্যে ছোটখাট ত্রুটি বিচ্যুতি থাকবে। কিন্তু থাকলেও আমরা প্রথমবারের মতন এটা করার চেষ্টা করছি এবং এখানে সবার সহযোগিতা লাগবে যাতে করে আমরা শুরুতেই বড় ধরনের হোঁচট না খাই। কিছু ভোটার বাদ পড়ে যাবেন, এটা একটা বাস্তবতা। কারণ বাংলাদেশে প্রবাসী বাংলাদেশী যারা আছেন তারা অনেকেই হয়তো ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তির ব্যাপারে সচেতন ছিলেন না।
জানা যায়,আগামী বছরের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত দেশে ও বিদেশে ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপের প্রচারণা চালাতে হবে। ১৬ নভেম্বরের মধ্যে অ্যাপটির যাচাই-বাছাই ও টেস্ট সম্পন্ন করে স্থিতিশীল সংস্করণ (স্টেবল রিলিজ) প্রকাশ করা হবে। এছাড়া ১৬ নভেম্বর থেকে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধন কার্যক্রম সরাসরি প্রদর্শন করা হবে। নিরাপত্তাসহ পোস্টাল ব্যালটের পার্সোনালাইজেশন কার্যক্রম শুরু হবে ২৩ নভেম্বর থেকে। বিদেশে পোস্টাল ব্যালট প্রেরণ করা হবে ১ ডিসেম্বর থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। বিদেশ থেকে পোস্টাল ব্যালট বাংলাদেশে ফেরত আসা শুরু হতে পারে আনুমানিক আগামী বছরের দ্বিতীয় বা তৃতীয় সপ্তাহে। পোস্টাল ব্যালট সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে পৌঁছাবে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহের মধ্যে।
আগামী ডিসেম্বর প্রথম সপ্তাহে তফসিল ঘোষণা করে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন করবে নির্বাচন কমিশন।
এমএইচএইচ/এআর

