শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

কালশীতে পোশাক কারখানার আগুন পরিকল্পিত: দাবি মালিক পক্ষের 

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ০৯:০৬ পিএম

শেয়ার করুন:

Fire
মিরপুরের কালশীতে অগ্নিকাণ্ডের শিকার সেই ভবন। ছবি- সংগৃহীত

রাজধানীর মিরপুর ১১ নম্বরে কালশী এলাকায় বিউটি ফ্যাশন নামে একটি পোশাক কারখানায় অগ্নিকাণ্ড ঘটে। এ ঘটনায় মালিক পক্ষের দাবি, পরিকল্পিতভাবে এ অগ্নিকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। 

‎এর আগে শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১০টায় কালশী সড়কের একটি ছয়তলা ভবনের ওপরের তলায় আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের সাতটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রায় দুই ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

‎প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এদিন রাত সোয়া ১০টার দিকে হঠাৎ আগুন ও ধোয়া দেখা যায়। পরে ৯৯৯-এর মাধ্যমে ফায়ার সার্ভিসকে বিষয়টি জানালে তারা আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। 


বিজ্ঞাপন


তবে আগুন ওপরে থাকায় প্রথমে ফায়ার সার্ভিস সরাসরি আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করতে পারেনি। পরে ফায়ার সার্ভিসের ক্রেন এনে বাইরে থেকে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। এরই মধ্যে আগুনে ছয়তলা ফ্লোরে প্রায় সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে যায়। 

এছাড়া ভবনটির প্রথম তিনতলা ব্যবহৃত হতো বিবাহ বাড়ি কমিউনিটি সেন্টার হিসেবে। চতুর্থ ও পঞ্চম তলা ফাঁকা ছিল। ষষ্ঠ তলায় ছিল বিউটি ফ্যাশন নামের পোশাক কারখানা। সেখানেই আগুনের সূত্রপাত হয়।

‎কারখানাটির মালিক বিউটি বেগম বলেন, ‘আমাদের ধারণা এটি একটি পরিকল্পিত অগ্নিকাণ্ড। সাধারণত কোনো স্থানে আগুন লাগলে ফ্লোরের নির্দিষ্ট অংশে আগুন ধরে, কিন্তু এখানে পুরো ফ্লোর একসঙ্গে দাউ দাউ করে জ্বলে ওঠে, যা স্বাভাবিক নয়।’

9
কালশীতে ছয় তল ভবনে লাগা আগুন নেভাতে কাজ করে ফায়ার সার্ভিস। ছবি- সংগৃহীত

তিনি বলেন, ‘আগুন লাগার পর মুহূর্তের মধ্যেই পুরো ফ্লোরে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এ থেকে আমরা নিশ্চিতভাবে সন্দেহ করছি, কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে আগুন লাগিয়েছে। তবে কারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত, তা ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশের তদন্তেই জানা যাবে।’

‎বিউটি বেগম বলেন, ‘আমি একজন বায়ার, সাব-কন্ট্রাক্টে বিভিন্ন কারখানায় কাজ করাই। এই ফ্লোরে আমার প্রায় দেড় থেকে দুই কোটি টাকার শীতের পোশাক ছিল। ৩০ হাজার পিস সম্পূর্ণ ও আরও ৭ হাজার অসম্পূর্ণ মাল ছিল। গত পাঁচ দিন ধরে বিভিন্ন কারখানা থেকে তৈরি মাল এনে এখানে রেখেছিলাম। এই ফ্লোর সাড়ে চার হাজার স্কয়ার ফুট জায়গাজুড়ে পুরোটাতেই আমার মালামাল ছড়িয়ে ছিল।’

‎তিনি আরও বলেন, ‘আগুন লাগার কোনো কারণ নেই। কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে আগুন দিয়েছে। ফ্লোরে একটা কেচি গেইট আছে, কিন্তু কোনো শাটার নেই। বাইরে থেকে চার হাত দূর থেকেই যে কেউ আগুন দিতে পারে। আমি নিশ্চিত, এটা পরিকল্পিত অগ্নিকাণ্ড।’

‎ফায়ার সার্ভিস সদর দফতরের উপ-পরিচালক মো. ছালেহ উদ্দিন বলেন, ‘আগুন ছয়তলায় লাগার পর আমরা দ্রুত অ্যারিয়াল ল্যাডার ও স্ট্যান্ড পাইপ ব্যবহার করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনি, যাতে এটি নিচের তলায় বা আশেপাশের ভবনে ছড়িয়ে না পড়ে।’


বিজ্ঞাপন


তিনি বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, সেখানে কিছু কাগজপত্র, পুরনো ফার্নিচার ও কিছু জুট কাপড় ছিল। তবে আমরা নিশ্চিত নই এটি আসলেই কোনো পোশাক কারখানা ছিল কি না।’ 

আগুন লাগার কারণ এবং ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানতে তদন্ত কমিটি কাজ করবে বলেও জানান ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা।

‎এ বিষয়ে পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) আবুল কাইয়ুম বলেন, ‘এটি পরিকল্পিত অগ্নিকাণ্ড নাকি দুর্ঘটনা, সেটি এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ফায়ার সার্ভিসের তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানা যাবে। তবে পুলিশও আলাদাভাবে বিষয়টি তদন্ত করছে।’

‎একেএস/এএইচ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর