সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

সংসদে ইসি-ইভিএম ইস্যুতে বিতর্ক

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ৩০ জুন ২০২২, ০৬:০৮ পিএম

শেয়ার করুন:

সংসদে ইসি-ইভিএম ইস্যুতে বিতর্ক

নির্বাচন কশিন (ইসি) ও ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) নিয়ে সংসদে তুমুল বিতর্ক হয়েছে। অনেকে বলেছেন যে পদ্ধতিতেই ভোট হোক যার শক্তি বেশি সেই বিজয়ী হবেন। আবার কেউ বলেছেন এই কমিশন কোনোভাবেই অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে পারবেন না।

বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) জাতীয় সংসদ অধিবেশনে ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের বাজেট পাশের আগে নির্বাচন কমিশন সচিবালয় খাতে বরাদ্দকৃত অর্থ নিয়ে আনিত মঞ্জুরি দাবির উপর আলোচনা করতে গিয়ে এসব কথা বলেন সংসদ সদস্যরা।


বিজ্ঞাপন


আলোচনায় অংশ নিয়ে বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ বলেন, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে, আধুনিক রাষ্ট্রে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের কোনো বিকল্প নাই। নির্বাচনী ইনস্টিটিউশন যদি শক্তিশালী না হয় নির্বাচনী ব্যবস্থার প্রতি যদি জনগণের আস্থা বিশ্বাস নষ্ট হয়ে যায় সেই দেশে নিঃসন্দেহে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস হয়ে যাবে।

তিনি বলেন, বিগত দশ বছরে নির্বাচনী ব্যবস্থা সম্পর্কে এমন একটা অনাস্থা তৈরি হয়েছে এখানে নির্বাচন কমিশনের ব্যাপারে যে অর্থ বরাদ্দ রাখা হয়েছে এটি জনপ্রশাসন এবং জননিরাপত্তা বিভাগে দিয়ে দেন। নির্বাচন কমিশন এখন নির্বাচন করে না, নির্বাচন করে স্থানীয় পর্যায়ের প্রশাসন এবং জননিরাপত্তা বিভাগ এবং জনপ্রশাসনের ব্যক্তিরা।
 
তিনি আরও বলেন, সার্চ কমিটির মাধ্যমে যাদের নিয়োগ দিলেন তারা তো এই গ্রহেরই মানুষ, অন্য গ্রহ থেকে তো নিয়ে আসেননি। সিইসি দায়িত্ব পাওয়ার পর বিভিন্ন জায়গায় বসেছেন। তিনি কি জানেন না নির্বাচনে কি সংকট তৈরি হয়েছে।

বর্তমান ইসি বলছে ইভিএম এর ভোট কক্ষে যে ডাকাত থাকে সেটি ধরাই হচ্ছে বড় চ্যালেঞ্জ। সরকারের যদি সদিচ্ছা না থাকে কোনোভাবেই নির্বাচন সঠিক করতে পারবেন না। আওয়ামী লীগ ছাড়া কোনো রাজনৈতিক দল ইভিএম চাচ্ছে না। শুধু মাত্র আওয়ামী লীগ চাচ্ছে ইভিএম।

প্রধানমন্ত্রী ৯৬ সালে যখন আন্দোলন করেছেন তখন তিনি বলেছেন আওয়ামী লীগ ছাড়া নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না। তো আজকে বিএনপিকে ছাড়া কি নির্বাচন গ্রহণ যোগ্য হবে? পারবেন না। আগামী নির্বাচনে বিএনপিকে কীভাবে নির্বাচনে আনবেন সেটিই বড় চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নিরপেক্ষ সরকার ব্যবস্থা নিয়ে আসতে হবে।


বিজ্ঞাপন


রুমিন ফারহানা বলেন, দেশে যদি নির্বাচনেই না থাকে মানুষ যদি তার ভোটই প্রয়োগ না করতে পারে মানুষ যদি তারপছন্দের প্রতিনিধি নির্বাচিত করতে না পারে আগে থেকে যদি ব্যালটে বাক্স ভরা থাকে দিনের ভোট যদি রাতে হয় তাহলে নির্বাচন কমিশন দিয়ে হবে কি। নির্বাচন যে এখন একটা মল্লযুদ্ধ তার একটা বড় প্রমাণ এই নির্বাচন কমিশন শপথ নেওয়ার পর পরই প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেছেন জেলনস্কির মতো বিএনপিকে মাঠে থাকতে হবে।

ভোট কি একটা যুদ্ধ যে জেলনস্কির মতো বিএনপিকে মাঠে থাকতে হবে? আর এক কমিশনার বলেছেন মেশিনে কোনো সমস্যা নাই সমস্যা হচ্ছে গোপন কক্ষে যে ডাকাত ঢুকে থাকে। এই ডাকাত যে শুধু দলীয় ক্যাডার তা নয় এরমধ্যে আছে পুলিশ, প্রশাসন এবং এই ডাকতদের যেভাবে পুরস্কৃত করা হয় সেই পুরস্কার দেখে বোঝা যায় ভবিষৎতে আরও ডাকাত বাড়বে। একজন ডাকতের উদাহরণ ২০১৮ সালের নির্বাচনের সময় যিনি নির্বাচন কমিশনে সচিব ছিলেন হেলালুদ্দিন সাহেব তাকে পরবর্তী সময়ে প্রাইজ পোস্টিং হিসে্বে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব করা হয়। তিনি অবসরের ২৪ ঘণ্টা আগে ইউরোপ সফর করে আসেন।

রাষ্ট্রের টাকা খরচ করে যে ইউরোপ সফরে গিয়েছিলেন সেটা সম্ভবত তিনি অবসরের পর কাজে লাগাবেন। এভাবে যদি ডাকতদের পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়া হয় তাহলে এই দেশে নির্বাচন কোন দিনও সুষ্ঠু হবে না। বিনা ভোটে সংসদ গঠন চলতেই থাকবে। সরকারের পুরনো খেলা স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোকে সুষ্ঠু দেখানো বিশেষ করে জাতীয় নির্বাচনের সামনে। ২০১৪ সালেও দেখেছি ২০১৮ সালেও দেখেছি।

তিনি বলেন, কুমিল্লা সিটি ভোটে মাত্র ১ জন এমপির হুমকি ধামকি এই নির্বাচন কমিশন সহ্য করতে পারে নাই। বার বার তাকে অনুরোধ করা হয়েছে তাকে চিঠি পর্যন্ত দেওয়া হয়েছে কিন্তু তাকে এলাকা থেকে সরাতে পারেন নাই। এই ইসির নতজানু মেরুদণ্ড, ভাঙা অবস্থা তাতে খুব পরিষ্কার বোঝা যায় আগামীতে কী জাতীয় নির্বাচন হবে।

টিএ/ একেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর