মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০২৪, ঢাকা

‘শহীদ বুদ্ধিজীবী মুনীর চৌধুরী সড়ক’ শুধু নামেই!

দেলাওয়ার হোসাইন দোলন
প্রকাশিত: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৭:৪৫ এএম

শেয়ার করুন:

‘শহীদ বুদ্ধিজীবী মুনীর চৌধুরী সড়ক’ শুধু নামেই!

আইডিয়াল কলেজের একদল শিক্ষার্থী গল্পে মেতেছে রাজধানীর গ্রিন রোডের একটি চা দোকানে। করোনা সংক্রমণ বাড়ায় ক্লাস বন্ধ থাকলেও বন্ধুদের আড্ডায় তারা এসেছিলেন ক্যাম্পাসে। হঠাৎ কাগজে লেখা কিছু একটা ওই শিক্ষার্থীদের দেখাচ্ছেন এক বৃদ্ধ। পরে বোঝা গেল কাগজে ‘৫৭/১ মুনীর চৌধুরী সড়ক’ এই ঠিকানা লেখা ছিল। দেখানোর উদ্দেশ্য গন্তব্যস্থল কোনদিকে বলে দেওয়া। শিক্ষার্থীদের কেউই চিনতে না পারায় কিছুটা আক্ষেপ করতে দেখা গেল বৃদ্ধকে।

এসময় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা হয় প্রতিবেদকের। আইডিয়াল কলেজের সামনের সড়কটির নাম কী? এমন প্রশ্নে দুই একজন চুপ থাকলেও বেশিরভাগ শিক্ষার্থী বলে উঠলো- ‘কেন! সেন্ট্রাল রোড।’ এমন ভুল শুধু শিক্ষার্থীরাই করে না। একাধিক রিকশা চালক এবং স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেও মিলেছে একই উত্তর। এক সময় সেন্ট্রাল রোড নাম থাকলেও সেই নাম পরিবর্তন হয়েছে। নতুন নাম ‌'শহীদ বুদ্ধিজীবী মুনীর চৌধুরী' সড়ক। এই খবর রাখছেনই বা কয়জনে। কেউ কেউ মনে রাখলেও ব্যবহারে উদাসীন।


বিজ্ঞাপন


সরেজমিনে সড়কটি ঘুরে দেখা যায়, কোথাও লেখা নেই বর্তমান নাম। নামফলক থাকলেও প্রায় প্রতিটি পোস্টার কিংবা সাইন বোর্ডে, দোকান, স্কুল- কলেজের ঠিকানায় পরিবর্তন আসেনি।

স্থানীয় দোকানি আফজাল হোসেন ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘যত সমস্যায় তো আমরাই পড়ি। নতুন নাম লিখলে মানুষ চিনবে না। বিভ্রান্ত হবে।’ যদিও তার ভাষ্য- এ নিয়ে বাধাও দেয়নি বা সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে নোটিশও আসেনি তার কাছে।

মুনীর চৌধুরী সম্পর্কে যা জানা যায়


বিজ্ঞাপন


পুরো নাম আবু নয়ীম মোহাম্মদ মুনীর চৌধুরী। তিনি ছিলেন একধারে একজন শিক্ষাবিদ, নাট্যকার, সাহিত্য সমালোচক, ভাষাবিজ্ঞানী, বাগ্মী এবং বুদ্ধিজীবী। তিনি ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর দ্বারা হত্যাকাণ্ডে শহীদ হন। তৎকালীন ঢাকা জেলার মানিকগঞ্জে তার জন্ম। তার পৈতৃক নিবাস নোয়াখালীর চাটখিল থানার গোপাইরবাগ গ্রামে।

মুনীর চৌধুরী ১৯৪১ সালে ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল (বর্তমান ঢাকা কলেজ) থেকে প্রথম বিভাগে ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষায় পাস করেন এবং ১৯৪৩ সালে আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দ্বিতীয় বিভাগে আইএসসি পাস করেন। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে অনার্স (১৯৪৬) এবং মাস্টার্স (১৯৪৭) পাস করেন, উভয় ক্ষেত্রেই দ্বিতীয় শ্রেণিতে।

022

বাংলা ভাষাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে ১৯৪৭ সালের ৬ ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে যে প্রথম ছাত্রসভা হয়, তাতে তিনি বক্তৃতা করেন। মুনীর চৌধুরী ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করে পাকিস্তান সরকারের হাতে বন্দী হন। বন্দী থাকা অবস্থায় তিনি তার বিখ্যাত নাটক কবর রচনা করেন (১৯৫৩)।

ডিএইচডি/জেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর