বিগত বছরগুলোতে গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সাতক্ষীরা জেলা বারবার বৈষম্যের শিকার হয়েছে। এই অব্যাহত উন্নয়ন বৈষম্যের প্রতিবাদ এবং ন্যায্য অধিকার আদায়ের দাবিতে নাগরিক সমাবেশ করেছে সাতক্ষীরাবাসী।
রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ (জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে) এই নাগরিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এর আয়োজন করে সাতক্ষীরা উন্নয়ন সমন্বয় ফোরাম।
বিজ্ঞাপন
সাতক্ষীরা উন্নয়ন সমন্বয় ফোরামের সভাপতি ইকবাল মাসুদের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ঢাকাস্থ সাতক্ষীরা জেলা সমিতির সভাপতি প্রকৌশলী আবুল কাশেম, জেলা সমিতির উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট ইয়ারুল ইসলাম, সহসভাপতি সামছুল আলম, সাতক্ষীরা নাগরিক অধিকার ও উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান বাবু, এলজিইডি কর্মকর্তা রিয়াজুল ইসলাম, বৃহত্তর খুলনা সমিতির সহসভাপতি শেখ মোয়াজ্জেম হোসেন, সাতক্ষীরা ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শরিফুজ্জামান শরিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক মাজাহারুল আনোয়ার, ফোরামের সদস্য সচিব মোস্তফা বকুলুজ্জামান, এস এম মেহেদী হাসান, সাংবাদিক সাইদুর রহমান, সদর উপজেলা সমিতির সভাপতি আফসার আলী, আশাশুনি উপজেলা সমিতির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম (শফিক), দেবহাটা উপজেলা সমিতির সদস্য সচিব তাহাজ্জত হোসেন হিরু, কালিগঞ্জ উপজেলা সমিতির সভাপতি আবু মাসুদ, তালা উপজেলা সমিতির সহসভাপতি এম এ গফুর, কলারোয়া উপজেলা সমিতির সভাপতি আজগর আলী কাঞ্চন, শ্যামনগর উপজেলা সমিতির সভাপতি ডা. এ এ জলিল, পাটকেলঘাটা থানা সমিতির সহসভাপতি আমিনুল ইসলাম মধু, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সংগঠন দরদির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল সংসদের ভাইস প্রেসিডেন্ট আহসান হাবিব ইমরোজ, বিজয় একাত্তর হল সংসদের সহকারী সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন এবং জগন্নাথ হলের ক্রীড়া সম্পাদক অভিজিৎ দত্ত। সমাবেশে জেলার প্রায় চার শতাধিক সচেতন নাগরিক অংশ নেন।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, সাতক্ষীরা জেলা বাংলাদেশের অন্যতম সম্ভাবনাময় ও অর্থনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ জেলা, যা জাতীয় রাজস্বে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখে। তবুও বিগত ১৭ বছর ধরে এ জেলা কোনো উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় আসেনি। দেশের অন্যতম প্রাকৃতিক ঐতিহ্য সুন্দরবন সাতক্ষীরায় অবস্থিত হওয়ায় প্রতিবছর লাখো পর্যটক এখানে আসেন। কিন্তু যোগাযোগ অবকাঠামোর করুণ দশা, সুপেয় পানির সংকট, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতের দুরবস্থা এবং অবহেলার কারণে সাধারণ মানুষ কাঙ্ক্ষিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। খেলাধুলার জন্য কোনো ক্রীড়া কমপ্লেক্স নেই, রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা নেই, ফুড প্রসেসিং শিল্পও নেই। তাই সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি, সাতক্ষীরায় গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে।
এ সময় তারা স্লোগান দেন—আর নয় বৈষম্য, আমরা জেলাবাসী আমাদের ন্যায্য অধিকার চাই।
বিজ্ঞাপন
তাদের দাবিগুলো হলো:
- অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন
- সাতক্ষীরাকে দেশের রেল নেটওয়ার্কে যুক্ত করা
- সুন্দরবন ঘিরে টেকসই ইকোটুরিজম গড়ে তোলা
- উপকূলীয় এলাকায় টেকসই বাঁধ নির্মাণ
- বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং সার্ভেয়ার ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা
- পূর্ণাঙ্গ আন্তর্জাতিক স্থলবন্দর বাস্তবায়ন
- আধুনিক সেচব্যবস্থা ও কৃষিপণ্য সংরক্ষণ
- নার্সিং ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা
- ক্যান্সার নির্ণয় ও চিকিৎসা কেন্দ্র স্থাপন
- সাতক্ষীরাকে গ্রেড-১ জেলা ঘোষণা ও পাটকেলঘাটাকে উপজেলা পর্যায়ে উন্নীত করা
- আধুনিক বাস টার্মিনাল নির্মাণ
- গ্রামীণ মানুষের জন্য জরুরি চিকিৎসা নিশ্চিত করা
- নদীভাঙন ও জলাবদ্ধতা প্রতিরোধে দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্প
- স্বাস্থ্যখাতে লোকবল পূরণ ও নিয়ন্ত্রণে কঠোর পদক্ষেপ
- মৃৎশিল্পে বিনিয়োগ
- আম, চিংড়ি ও মৎস্যচাষ নির্ভর আধুনিক সংরক্ষণাগার ও প্রসেসিং প্লান্ট
- সীমান্ত এলাকায় মাদক ও চোরাচালান রোধে প্রযুক্তিনির্ভর নজরদারি ব্যবস্থা
- সাতক্ষীরায় আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন আন্তর্জাতিক মানের স্টেডিয়াম নির্মাণ।
এমআইকে/এআর

