তপ্ত দুপুরে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের সড়ক এখন শ্রমজীবী মানুষের বিশ্রামের জায়গা হয়ে উঠেছে। দীর্ঘ কয়েক বছর পর লেকঘেষা এ সড়কটি উন্মুক্ত হওয়ায় সব শ্রেণি-পেশার মানুষ গাছের ছায়ায় বিশ্রাম নিতে ছুটে আসেন।
প্রতিদিনই সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত এলাকার ভ্যানচালক, রিকশাচালক, দিনমজুর থেকে শুরু করে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ৩২ নম্বরের এই সড়কে এসে বসে থাকেন। কেউ রিকশার হ্যান্ডেলে মাথা রেখে ঘুমিয়ে নেন, কেউবা দেয়ালের পাশে বসে গল্প করেন।
বিজ্ঞাপন
গরমে ক্লান্ত হয়ে অনেকেই ফুটপাতের ছায়ায় একটু শান্তি খোঁজেন। কাজের ফাঁকে শ্রমজীবীদের ভিড় এখন এখানে নিয়মিত দৃশ্য।
বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সরেজমিন ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়ক ঘুরে এমন দৃশ্য দেখা যায়।
গত ১০-১২ বছর ধরে রাজধানীতে রিকশা চালান গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার মামুন মিয়া।

বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আমরা এ রাস্তায় কখনো রিকশা নিয়ে কিংবা পায়ে হেটেও ঢুকতে পারিনি। লেক পাড়ে এমন সুন্দর একটি মনোরম জায়গা এতো বছর আটকে রেখেছিল। এখন আমরা রিকশা চালিয়ে ক্লান্ত হলেই এখানে এসে একটু গাছের ছায়ার নিচে বসে বিশ্রাম নিতে পারি। দুপুর বেলা এখানে অনেকে এসে গাছের ছায়ায় বসে বিশ্রাম নেয়।
মহিউদ্দিন মিয়া নামে আরেক রিকশাচালক বলেন, রায়েবাজার বাইরখালী এলাকার একটি গ্যারেজ থেকে রিকশা ভাড়া নিয়ে চালাই। প্রতিদিন ৫০০-৭০০ টাকা আয় করি। সারাদিন রিকশা চালিয়ে ক্লান্ত হয়ে পড়ি। বিশেষ করে দুপুরবেলা রোদের কারণে খুব ক্লান্ত লাগে। তখন ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের এ সড়কে এসে গাছের নিচে রিকশাটা রেখে বিশ্রাম নিই। অনেক সময় লেকের পানিতে গোসলও করি। এরপর খাওয়া দাওয়া করে এখানেই বিশ্রাম নিই।
ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের পাশে একটি স্কুলের শিক্ষার্থীরা ছুটি শেষে দলবেঁধে বসে গল্প করছে। তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, স্কুল কর্তৃপক্ষ থেকে তাদের এখানে আসতে নিষেধ করা হয়েছে। কারণ, দেশের এমন পরিস্থিতিতে এ জায়গাটি ঘিরে যেকোনো ধরনের ঝামেলা হতে পারে। সেসব এড়াতে তাদের এখানে আসতে বারণ করা হয়েছে।
শিক্ষার্থীরা জানায়, এখানে এসে গাছের ছায়ায় বিশ্রাম নিই। কিন্তু কখন কোন দুর্ঘটনা কোনদিক থেকে এসে আমাদের বিপদে ফেলবে কে জানে। এরপরও এক রকম ভয় নিয়েই লেক পাড়ে বসে বন্ধুরা মিলে গল্প করি।
স্থানীয়রা বলছেন, এ জায়গাটি কয়েক বছর পর খুলে দেওয়ায় প্রাণ ফিরে এসেছে। আগে এ জায়গায় মানুষের চলাচল ছিল। সন্ধ্যার পর দলবেঁধে আড্ডা হতো। লেক পাড় ধরে সকাল বেলা অনেকে হাঁটাহাঁটি করতো। অন্তত এ সড়কটি যেন সবসময় উন্মুক্ত থাকে, এমন ব্যবস্থা করা হোক।
একেএস/এএইচ

