রোববার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

শুধু অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদেরই পুশইন করা হচ্ছে: বিএসএফ ডিজি

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২৮ আগস্ট ২০২৫, ০৬:০৪ পিএম

শেয়ার করুন:

BSF
বিজিবি–বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ের ৫৬তম সীমান্ত সম্মেলনের সমাপনী দিনের চিত্র। ছবি- ঢাকা মেইল

শুধু অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদেরই বাংলাদেশে পুশইন করা হচ্ছে বলে দাবি ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের মহাপরিচালক শ্রী দালজিৎ সিং চৌধুরী। তার এও দাবি, পুশইন প্রক্রিয়া যথাযথ আইনগত চ্যানেল অনুসরণ করেই সম্পন্ন হচ্ছে।

‎বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর পিলখানাস্থ বিজিবি সদর দফতরের শহীদ ক্যাপ্টেন আশরাফ হলে অনুষ্ঠিত বিজিবি–বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ের ৫৬তম সীমান্ত সম্মেলনের সমাপনী দিনে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব দাবি করেন।

সংবাদ সম্মেলনে সীমান্ত হত্যা, অনুপ্রবেশ ও পাচার রোধে কার্যকর পদক্ষেপ এবং পানি ও সম্পদ ভাগাভাগির ন্যায্য সমাধান হলে দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হবে বলে মনে করছে বিজিবি ও বিএসএফ।

সম্মেলনে ‎ বিএসএফ মহাপরিচালক বলেন, ‘ইতোমধ্যে ৫৫০ জনকে বিজিবির হাতে হস্তান্তর করা হয়েছে এবং আরও ২ হাজার ৪০০ মামলার যাচাই প্রক্রিয়া চলছে। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ হাইকমিশন আমাদের সহযোগিতা করছে।’

চার দিনব্যাপী এ সম্মেলনে সীমান্ত নিরাপত্তা, মাদক, অস্ত্র ও মানবপাচার, অনুপ্রবেশ, সীমান্ত হত্যাকাণ্ড এবং সীমান্তবর্তী উন্নয়ন প্রকল্প নিয়ে আলোচনা হয়। এতে মাদক ও পাচার রোধে উভয় পক্ষই মাদক, অস্ত্র ও মানবপাচার বন্ধে দৃঢ় প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছে। 

এর পাশাপাশি সীমান্তের ১৫০ গজের মধ্যে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ, পাচারকারীদের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ এবং সীমান্ত অতিক্রম প্রতিরোধের বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। বিশেষ  করে, সীমান্ত হত্যাকাণ্ড রোধে মারাত্মক অস্ত্রের ব্যবহার বন্ধ, রাতে টহল জোরদার, যৌথ সচেতনতামূলক কর্মসূচি এবং সীমান্তবর্তী এলাকার সামাজিক-অর্থনৈতিক উন্নয়নে যৌথ উদ্যোগ নেওয়ার বিষয়ে সম্মতি হয়েছে।


বিজ্ঞাপন


BSF এছাড়া পানি ও সম্পদ বণ্টনে নদী ও পানিবণ্টন, অবৈধ নির্মাণ এবং সীমান্তবর্তী উন্নয়ন প্রকল্প যাতে প্রতিরক্ষা ঝুঁকি তৈরি না করে, সে বিষয়ে উভয়পক্ষ মতবিনিময় করে।

‎রোহিঙ্গা ও ভারতীয়দের পুশইনের বিষয়ে সম্প্রতি ভারতে নিবন্ধিত ৪৮ জন রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়া হয়, যা আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের শামিল। এমন প্রশ্নের জবাবে বিএসএফ ডিজি বলেন, ‘আমরা সম্পূর্ণ আইনের মধ্য থেকেই প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করছি। যদি কেউ ভারতীয় নাগরিক হয়ে থাকে এবং তা প্রমাণিত হয়, ভারত তাকে তাৎক্ষণিক গ্রহণ করবে।’

সীমান্তে হত্যাকাণ্ড নিয়ে বিজিবি ও বিএসএফ মহাপরিচালকের বক্তব্যের মধ্যে মতবিরোধ দেখা গেছে। এ নিয়ে বিএসএফ ডিজি বলেন, ‘চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে ৩৫ জন বিএসএফ সদস্য অনুপ্রবেশকারীদের ধারালো অস্ত্রের হামলায় আহত হয়েছেন। আমাদের সদস্যরা প্রথমে সতর্ক করে, পরে বাধা দেয় এবং সর্বশেষ উপায় হিসেবে গুলি ছোঁড়া হয়।’

‎তবে বিএসএফ মহাপরিচালকের এমন বক্তব্যে দ্বিমত পোষণ করেন বিজিবি মহাপরিচালক। উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি প্রকাশ্য দিবালোকে একজন বাংলাদেশি কিশোরকে বিএসএফ গুলি করে হত্যা করেছে। সে কীভাবে সীমান্ত নিরাপত্তার জন্য এতটা ঝুঁকিপূর্ণ ছিল?’

সম্মেলনে বাংলাদেশের ২১ সদস্যের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী। প্রতিনিধি দলে বিজিবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ছাড়াও প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়, স্বরাষ্ট্র, পররাষ্ট্র, নৌপরিবহন, সড়ক বিভাগ, ভূমি জরিপ অধিদফতর, যৌথ নদী কমিশন ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

‎অন্যদিকে বিএসএফ মহাপরিচালক শ্রী দালজিৎ সিং চৌধুরী নেতৃত্ব দেন ১১ সদস্যের ভারতীয় প্রতিনিধি দলকে। সেখানে ভারতের স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশনের কর্মকর্তারাও ছিলেন।

একেএস/এএইচ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর