ট্রমা শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলতে পারে বলে জানিয়েছেন বিশিষ্ট মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ডা. মো. জহির উদ্দিন। তিনি বলেন, ট্রমা হলো একটি মানসিক আঘাত, যা কোনো ভীতিকর, চাপ সৃষ্টিকারী বা যন্ত্রণাদায়ক ঘটনার সম্মুখীন হওয়ার কারণে ঘটে। এসব ঘটনা মোকাবিলা করা কঠিন হতে পারে এবং ব্যক্তির মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের ওপর দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলতে পারে।
মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) দুপুর ২টায় রাজধানীর শ্যামলীতে ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন স্বাস্থ্য সেক্টরের সভাকক্ষে আহ্ছানিয়া মিশন নারী মাদকাসক্তি চিকিৎসা ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন ক্লায়েন্টদের অভিভাবকদের নিয়ে আয়োজিত এক পারিবারিক সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
ডা. মো. জহির উদ্দিন আরও বলেন, ট্রমা শারীরিক আঘাত, যৌন নিপীড়ন বা অন্য কোনো জীবন-হুমকিপূর্ণ ঘটনা থেকে হতে পারে। এটি একক কোনো ঘটনা বা দীর্ঘস্থায়ী পরিস্থিতি হতে পারে।
ট্রমা-পরবর্তী মানসিক অসুস্থতা যেকোনো আঘাতমূলক ঘটনার পর দেখা দিতে পারে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ট্রমা মানসিক চাপ সৃষ্টি করে, এর কারণে ব্যক্তি অস্থিরতা, উদ্বেগ বা বিষণ্নতা অনুভব করতে পারে। ট্রমা নেতিবাচক কোনো ঘটনার কারণে হতে পারে—যেমন গার্হস্থ্য সহিংসতা, ধর্ষণ, প্রাকৃতিক বিপর্যয়, প্রিয়জনের মৃত্যু, গুরুতর অসুস্থতা বা আঘাত, সহিংসতার সাক্ষী হওয়া ইত্যাদি।
সভায় এবারের বিষয়বস্তু ছিল ‘ট্রমা’। যদিও ট্রমা প্রায়শই একটি আঘাতমূলক ঘটনা দ্বারা সৃষ্টি হয়, এটি সব সময় সরাসরি সেই ঘটনার সঙ্গেই যুক্ত হয় না। কখনও কখনও ট্রমা থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার পরও একজনের পক্ষে ধাক্কা সামাল দেওয়া সম্ভব হয়। ছোট শিশুদের ক্ষেত্রে এ অবস্থা আরও ঝুঁকিপূর্ণ। কোনো আঘাতমূলক ঘটনা ঘটলে অবশ্যই শিশুদের মানসিকভাবে পরীক্ষা করা উচিত। এটি তাদের মানসিক সুস্থতা নিশ্চিত করতে সাহায্য করবে।
আহ্ছানিয়া মিশন নারী মাদকাসক্তি চিকিৎসা ও পুনর্বাসন কেন্দ্র ট্রমায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের চিকিৎসা সেবা প্রদান করে থাকে। এর মধ্যে রয়েছে জরুরি অবস্থায় প্রাথমিক পরিচর্যা, হাসপাতালের চিকিৎসা, দীর্ঘমেয়াদি মানসিক স্বাস্থ্যসেবা, কথা বলার থেরাপি (যেমন জ্ঞানীয় আচরণগত থেরাপি) এবং প্রয়োজনে ওষুধ।
বিজ্ঞাপন
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন স্বাস্থ্য সেক্টরের সিনিয়র সাইকোলজিস্ট রাখী গাঙ্গুলী, আহ্ছানিয়া মিশন নারী মাদকাসক্তি চিকিৎসা ও পুনর্বাসন কেন্দ্রের কাউন্সেলর মাহমুদা আলম, সুমাইয়া তিথি ও তাহমিনা আক্তারসহ কেন্দ্রের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং চিকিৎসাধীনদের অভিভাবকরা।
এমআইকে/এআর

