রোববার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

জুলাই অভ্যুত্থান পরবর্তী এক বছরে অর্জন নেই—এমনটা নয়: বাণিজ্য উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৭ আগস্ট ২০২৫, ০৮:৪৬ পিএম

শেয়ার করুন:

জুলাই অভ্যুত্থান পরবর্তী এক বছরে অর্জন নেই—এমনটা নয়: বাণিজ্য উপদেষ্টা
বক্তব্য দিচ্ছেন বাণিজ্য এবং বস্ত্র ও পাট উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। ছবি: সংগৃহীত

বাণিজ্য এবং বস্ত্র ও পাট উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেছেন, জুলাই অভ্যুত্থানের পরবর্তী এক বছরে কোনো অর্জন হয়নি—এমনটা নয়। অনেক কিছু অর্জিত হয়েছে। তবে প্রত্যাশা ছিল আরও বেশি।

বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) বিকেলে ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) মিলনায়তনে ছাত্র-জনতার জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মরণে আয়োজিত ‘জুলাই পুনর্জাগরণ’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।


বিজ্ঞাপন


তিনি বলেন, আমরা কাঠামোগত সংস্কার করে এমন একটি পর্যায়ে পৌঁছাতে পারব, যার মাধ্যমে পরবর্তী নির্বাচিত সরকার দেশকে সুষ্ঠু অর্থনীতি ও বৈষম্যহীন সমাজের পথে এগিয়ে নিতে সক্ষম হবে। প্রস্তাবিত সংস্কারসমূহ স্বল্প সময়ের মধ্যে শতভাগ বাস্তবায়ন সম্ভব না হলেও একটি সুস্পষ্ট রোডম্যাপ তৈরির চেষ্টা চলছে। কিভাবে আরও ভালোভাবে কাজ করা যায় এবং একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনে আমরা কীভাবে সফল হতে পারি—সে লক্ষ্যে সকল উপদেষ্টা প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে কাজ করছেন।

উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন আরও বলেন, আমরা বাজার ব্যবস্থায় সিন্ডিকেট দূর করতে পেরেছি। টিসিবির কার্যক্রমকে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক করতে সক্ষম হয়েছি। এক কোটি পরিবারকে কার্ড দেওয়ার কার্যক্রম শুরু করেছি। আমাদের ম্যাক্রো অর্থনীতিতে ভারসাম্যপূর্ণ উদ্বৃত্ত রয়েছে, আর্থিক হিসাবেও রয়েছে উদ্বৃত্ত। রিজার্ভ, যা একসময় ১০ মিলিয়নে নেমে গিয়েছিল, এখন তা ৩০ মিলিয়নে উন্নীত হয়েছে। বিগত ৩২ মাসের মধ্যে রপ্তানি সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। বৈষম্য দূরীকরণেও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে।

তিনি বলেন, জুলাইয়ে যে আন্দোলন শুরু হয়েছিল এবং আমরা সম্মিলিতভাবে অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছি—তার মূল্য আমাদের দিতে হয়েছে। ছোট্ট শিশু প্রিয়া গোপ থেকে ইয়ামিন পর্যন্ত অনেককে জীবন দিতে হয়েছে। জুলাই-আগস্টে আরও বহু ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে, যা ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন। সেই দায়বদ্ধতা থেকেই আমরা জুলাইকে স্মরণ করতে এবং আরও গভীরভাবে জানতে এখানে এসেছি।

অনুষ্ঠানের শুরুতে জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। বাণিজ্য এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।


বিজ্ঞাপন


বিশেষ আয়োজনের মধ্যে ছিল দুইজন ‘জুলাই যোদ্ধা’র স্মৃতিচারণ, ‘শোন মহাজন’, ‘টেস্টিমনি অব মার্টায়ার্স ফ্যামিলি’, ‘কত বিপ্লবী বন্ধুর রক্তে রাঙা’ শীর্ষক তথ্যচিত্র প্রদর্শন, জুলাই-কেন্দ্রিক গীতি-আলেখ্য এবং আলোচনা সভা।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আব্দুর রউফ বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানের তাৎপর্য হৃদয়ে ধারণ করে আন্তরিকতা, সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করলে আমরা বৈষম্যহীন, মানবিক ও কল্যাণভিত্তিক একটি টেকসই রাষ্ট্র গড়তে সক্ষম হব।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবুর রহমান বলেন, বিগত ১৭ বছর ধরে দেশে এক ধরনের ‘ক্রনিক ক্যাপিটালিজম’ চলেছে—যেখানে কিছু সংখ্যক ব্যক্তিকে সুবিধা দিতে গোটা রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহৃত হয়েছে। এই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য ‘জুলাই-এর চেতনা’ ধারণ করে বৈষম্যহীন, ন্যায়ভিত্তিক সমাজ কাঠামো, নীতি কাঠামো ও আচরণ প্রতিষ্ঠা করা জরুরি।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ ফয়সল আজাদ। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সক্রিয় অংশগ্রহণকারী আরিফুল ইসলাম আরিফ ও সায়লা আক্তার শশী জুলাই অভ্যুত্থানের স্মৃতিচারণ করে বক্তব্য দেন।

এমআই/এআর

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর