ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন বিভক্ত করে দুটি পৃথক সংসদীয় আসনে অন্তর্ভুক্ত করায় তীব্র ক্ষোভ জানিয়েছে স্থানীয় নাগরিকরা। বিভাজন নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে বিভ্রান্তি ও অসন্তোষ।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) ঢাকায় নির্বাচন কমিশন (ইসি) কার্যালয়ে স্মারকলিপি দিয়ে নিজেদের আপত্তি জানায় এলাকাবাসীর একটি প্রতিনিধি দল।
বিজ্ঞাপন
একই সঙ্গে আসনের সীমানা পূর্বের মতোই রাখার আবেদন জানিয়েছেন। এরপর বিকেলে নির্বাচন ভবন ত্যাগ করার সময় নিচে মানবন্ধনেও দাঁড়িয়েছিলেন তারা। তবে পুলিশের বাধার মুখে পরে চলে যান।
ইসি সচিবের সঙ্গে বৈঠকের পর জাতীয় নাগরিক পার্টির দক্ষিণাঞ্চলের যুগ্ম মূখ্য সমন্বয়ক মো. আতাউল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, আমরা কোনো দলের পক্ষ থেকে আসিনি। তবে এখানে বিএনপি, এনসিপিসহ অন্যান্য দলের নেতা ও সাধারণ নাগরিকরা রয়েছে। এদের অনেকে হয়তো ভোটেও দাঁড়াতে পারেন। আমরা প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর আবেদন দিয়েছি।
আবেদনপত্রে বলা হয়েছে, গত ৩০ জুলাই আপনার প্রকাশিত প্রাথমিক তালিকায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার (আগের ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসন) ১০টি ইউনিয়নেকে দুই টুকরা করে তিনটি (চান্দুরা, হরপুর ও বুধন্তি ইউনিয়নকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের সঙ্গে এবং বাকি সাতটি ইউনিয়নকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ সংসদীয় আসনে ভাগ করা হয়েছে, যা অত্যন্ত অনাকাঙ্ক্ষিত ও হতাশাজনক।
এছাড়া বাস্তবিক বিষয় হলো, বিজয়নগরের সকল ১০টি ইউনিয়ন তিতাস নদীর পূর্ব পার্শে পরস্পরের সঙ্গে ভৌগলিকভাবে সংযুক্ত। এ সকল ইউনিয়নগুলির জনগনের ভাষা, সংস্কৃতি এবং সামাজিক বন্ধন একই ধরনের, যা একটি অভিন্ন আসনের আওতায় রাখা প্রয়োজন।
বিজ্ঞাপন
বিজয়নগর উপজেলার সকল ইউনিয়নকে এক ও অভিন্ন সংসদীয় আসনে রাখলে এলাকার উন্নয়ন ও প্রশাসন কর্মকান্ড পরিচালনা সহজ ও কার্যকর হবে।
এই অবস্থায় সংশ্লিষ্ট নির্বাচন কমিশন কর্তৃপক্ষের কাছে বিজয়নগর উপজেলা তিনটি ইউনিয়নকে বিচ্ছিন্ন না করে পূর্বের আসনে (ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনে) রাখা অথবা একটি একক সংসদীয় আসনে পরিণত করার দাবি জানিয়েছেন তারা।
আবেদনে স্বাক্ষর করেছেন বিজয়নগর সাধারণ জনগনের পক্ষে-গোলাম মোস্তফা সুমন, মোজাহিদুজ্জামান চৌধুরী, ওয়াহিদুজ্জামান চৌধুরী, এ কে এম গোলাম মুহীত ওসমানি, মো. বায়েজিদ মিয়া, প্রকৌশলী মোহাম্মদ আমিনুল হক চৌধুরী, মোহাম্মদ আতাউল্লাহ, মো. জহিরুল ইসলাম।
বুধবার (৩০ জুলাই) ৩০০ সংসদীয় আসনের সীমানা পুননির্ধারণ করে খসড়া প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। এক্ষেত্রে এতে ভোটার সংখ্যার সমতা আনতে গিয়ে গাজীপুর জেলায় একটি আসন বাড়িয়ে ছয়টি করা হয়েছে এবং বাগেরহাটের আসন চারটি থেকে কমিয়ে তিনটির প্রস্তাব করা হয়েছে।
এছাড়া পরিবর্তন আনা হয়েছে ৩৯টি আসনে। এগুলো হলো-পঞ্চগড় ১ ও ২; রংপুর ৩; সিরাজগঞ্জ ১ ও ২; সাতক্ষীরা ৩ ও ৪; শরিয়তপুর ২ ও ৩; ঢাকা ২,৩,৭,১০,১৪ ও ১৯; গাজীপুর ১,২,৩,৫ ও ৬; নারায়ণগঞ্জ ৩,৪ ও ৫; সিলেট ১ ও ৩; ব্রাহ্মণবাড়িয়া ২ ও ৩; কুমিল্লা ১,২,১০ ও ১১; নোয়াখালী ১,২,৪ ও ৫; চট্টগ্রাম ৭ ও ৮ এবং বাগেরহাট ২ ও ৩ আসন।
ইসির প্রকাশিত খসড়ার ওপর আগামী ১০ আগস্ট পর্যয়ন্ত আপত্তি জানানো যাবে। এরপর দাবি-আপত্তি শুনানি করে তা নিষ্পত্তি করে চুড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন আসন নিয়ে দাবি-আপত্তি জানানো শুরু হয়েছে।
এমএইচএইচ/এএইচ

